১৮ মে ২০২৪, শনিবার



হিলিতে কমেছে লাকড়ি বিক্রি, চাহিদা বেড়েছে গ্যাসের

আনোয়ার হোসেন বুলু, হিলি (দিনাজপুর) || ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ১১:০২ এএম
হিলিতে কমেছে লাকড়ি বিক্রি, চাহিদা বেড়েছে গ্যাসের


দিনাজপুরের হিলিতে ক্রমান্বয়ে বিক্রি কমছে লাকড়ি বিক্রি। বিপরীতে বিক্রি বেড়েছে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার। লাকড়ি বিক্রেতারা বলছেন, এখন আর আগের মতো লাকড়ি বিক্রি হয় না। নিম্ন-আয়ের মানুষ ও ছোট হোটেল মালিকেরাই লাকড়ি কিনতে আসেন। অন্যরা সবাই গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করেন।  সাধারণ মানুষ বলছে, আগের চেয়ে লাকড়ির দাম দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তাই তারা সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করছেন।  

লাকড়ি কিনতে আসা মোছা. হোসনেয়ারা বেগম বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। তাই লাড়কি দিয়েই রান্না করি। কিন্তু দিনদিন লাকড়ির দাম বেড়েই চলেছে। ৬ মাস আগে প্রতিমণ (৪০) কেজি লাকড়ির দাম ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আর এখন ৩০০ টাকা মণ। একমন লাকড়ি দিয়ে বড় জোর ১০ দিন রান্না করা যায়। সেই হিসেবে প্রতিমাসে ৩ মণ লাকড়ি লাগে। তাতে ৯০০ টাকা খরচ পড়ে।’

হোসনেয়ারা আরও বলেন, ‘২০০ থেকে ২৫০ টাকা মণের লাড়কিও আছে। তবে সেগুলো কাঁচা। রান্না করতে গেলে সমস্যা হয়। তাই ৫০ টাকা বেশি দাম দিয়ে শুকনো লাকড়িই কিনি।’

গ্যাস-সিলিন্ডার কিনতে আসা মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমার ৬ সদস্যর পরিবার। আগে লাকড়ির দাম কম ছিল। তখন লাকড়ি ব্যবহার করতাম। এখন ৩০০ টাকা মণের নিচে লাকড়ি পাওয়া যায় না। প্রতিমাসে ৪ মণ লাকড়ি লাগে। এতে ১ হাজার ২০০ টাকা পড়ে যায়। তার সঙ্গে আরও কিছু টাকা যোগ দিয়ে ১ সিলিন্ডার গ্যাস কিনি। কখনো এর চেয়ে কমদামেও গ্যাসের দাম নামে। ১ সিলিন্ডার গ্যাস দিয়ে অনায়াসে ১ মাস চলে যায়।’

আফজাল হোসেন আরও বলেন, ‘লাকড়ি দিয়ে রান্না করতে গেলে চুলার দরকার হয়। জায়গাও বেশি লাগে। অনেক সময় শুকনো লাকড়ি পাওয়া যায় না। আবার বর্ষার সময় ভেজা লাকড়ি জ্বলতে চায় না। এত সব ঝামেলার চেয়ে মাসে ১টা সিলিন্ডার গ্যাস লাগে, সেটাই ভালো।’

স্থানীয় গ্যাস বিক্রেতা মো. মিলন রহমান বলেন, ‘আগের তুলনায় এলপিজি গ্যাসের চাহিদা বেড়েছে। আগে প্রতিমাসে ৫০টি সিলন্ডিার বিক্রি হতো। গেলো মাসে ১০০টি সিলিন্ডার বিক্রি হয়েছে।’

লাকড়ি বিক্রেতরা মো. জামাল হোসেন ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আমি একজন কাঠ ব্যবসায়ী। বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছ কিনি। গাছের প্রয়োজনীয় অংশ খাট, সোফা, চেয়ার, টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরির কাজের জন্য বিক্রি করি। আর অবশিষ্ট অংশ লাকড়ি হিসেবে বিক্রি করি। কিন্তু বর্তমানে আগের মতো আর লাকড়ি বিক্রি হয় না। মানুষ এখন গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।’ 

জামাল হোসেন আরও বলেন, ‘স্বীকার করছি, লাকড়ির দামও আগের চেয়ে প্রতিমণে ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। কিন্তু গাছের দামও যে বেড়েছে, সেটাও ক্রেতাদের ভাবতে হবে।  সেই সঙ্গে বেড়েছে গাছকাটা শ্রমিকদের মজুরি। পরিবহন খরচ। এ কারণে লাকড়ির দাম তো বাড়বেই। 

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন