১৮ মে ২০২৪, শনিবার



মেহেরপুরে এবার গমের ফলন ভালো, খুশি কৃষক

মুঈন তাজ ওয়াল, মেহেরপুর || ২৪ মার্চ, ২০২৩, ০১:০৩ পিএম
মেহেরপুরে এবার গমের ফলন ভালো, খুশি কৃষক


কৃষিনির্ভর জেলা মেহেরপুরে ৭ বছর পর গম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। ২০১৬ সাল থেকে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে গম চাষে লাভের চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের।  এবার ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত বারি-৩৩, বারি ৩২ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন তারা। 

কৃষকরা জানান, মেহেরপুরে ৭ বছর আগে ব্যাপক গম চাষ হয়ে আসছিল। উচ্চ ফলনশীল গম চাষে বেশ সাফল্য এসেছিল কৃষকদের। কিন্তু হঠাৎ অজানা এক রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করে গম ক্ষেতগুলো। এতে ফলন বিপর্যয় দেখা দেয়। তারপর থেকে কৃষকদের গম চাষে নিরুৎসাহিত করে কৃষি বিভাগ। 

তারা আরও জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে মেহেরপুরে কমতে থাকে গম চাষ। বিক্ষিপ্তভাবে কৃষকেরা সামান্য কিছু জমিতে গম চাষ করলে হুট করে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ চরমে দেখা যায় ক্ষেতগুলোতে। চাষিরা প্রতিনিয়ত গম চাষ করে লোকশানে পড়তে থাকে। ফলে আগ্রহ হারিয়ে বেশ কয়েক মৌসুমে গম চাষ বন্ধ রেখেছিলেন জেলার অসংখ্য কৃষক। সম্প্রতি কৃষি বিভাগের পরামর্শে চলতি মৌসুমে ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত বারি-৩৩, বারি ৩২- চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। মেহেরপুরে এই বছরে হইনি ব্লাস্ট রোগ।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে মেহেরপুরে ১৩ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ‍্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। যত বেশি গম উৎপাদন হবে; ততই বেশি আমদানি নির্ভরতা কমবে এমনটাই মনে করছে কৃষি বিভাগ।

সদর উপজেলার উজল পুর গ্রামের গম চাষি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‌‘চলতি মৌসুমে এখন পযর্ন্ত গম চাষ করে ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়নি; তাই খরচের বিপরীতে অধিক লাভবান হওয়ার আশাবাদী আমরা। আশা করছি এবার ১৮ থেকে ২০ মণ করে ফলন হবে।’

উপজেলার ফতেপুর গ্রামের চাষি বাবলু বলেন, ‘গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার গমের চেহারা ভালো রয়েছে। রোগবালাই তেমন একটা লাগেনি; অধিক ফলন হবে ধারণা করছি। অন্য বছরের থেকে এবার আমরা লাভবান হবো।’ 

বতর্মানে জেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রয়েছে সোনালি রঙের পাকা ও সবুজের মাঝে হলদে বর্ণের গম ক্ষেত। আবার অনেক চাষি আগাম গম চাষ করায় মাঠ থেকে ফসল ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। আবার অধিকাংশ চাষি অপেক্ষায় রয়েছেন আরও কিছুদিনের।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে জেলায় হুট করে ব্লাস্ট রোগ শুরু হলে গম চাষ প্রায় বন্ধ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাতের গম চাষ করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক চাষিরা ব্লাস্ট প্রতিরোধী গমের চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে লক্ষ‍্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৫ হাজার হেক্টর চাষ করা হয়েছে। আশা করছি গমের ব্যাপক ফলন হবে।’

ঢাকা বিজনেস/এম



আরো পড়ুন