১৮ মে ২০২৪, শনিবার



শিল্প-সাহিত্য
প্রিন্ট

আলিঙ্গন প্রতীক্ষা

তৃণলতা কুরচি || ০২ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৪:৩১ পিএম
আলিঙ্গন প্রতীক্ষা


মায়ের মুখ
আমার মায়ের পান খাওয়া মুখের 
দিকে তাকালে মনে হয়
পৃথিবীর তাবৎ কৃষ্ণচূড়া তাঁর ঠোঁটে 
থোকা-থোকা ঝুলে আছে!

আলিঙ্গন প্রতীক্ষা 
আলগা মাটিতে পুঁতে দেয়া শস্যবীজের মতো
আলিঙ্গন বাসনার দানা প্রতীক্ষায় প্রতীক্ষায় 
ঈগল হয়ে, ডানা মেলে উড়াল দিচ্ছে, নীলনদ
পেরিয়ে মিশরের পিরামিডের কাছে যেতে–

তারা মমি হ'তে চায়; গলবে না, পঁচবে না। 
পৃথিবীর ধ্বংস-লগ্ন অবধি অপেক্ষারত থেকে
জানান দিতে চায়:
আলিঙ্গনে সূর্যমুখীরঙ সুন্দর–সুন্দর হয় বসন্ত;
পৃথিবী খিলখিল হেসে ওঠে 

তখন আরও সুন্দর হয় কামরাঙ্গা ফুলের রঙ…

প্রেমযজ্ঞ
পরাণের দাবীতে যদি ধ্বনি ওঠে: 
‘কবুল-কবুল-কবুল’
কিংবা ‘যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম’
অথবা, অভ্যন্তরে মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে যদি কেউ হয়
প্রেমে যুগলবন্দি, তবে তা-অপবিত্র কিসে?

সাক্ষী কেনো মর্তের মানুষই হতে হবে?
অন্তরপুরবাসী যদি স্বয়ং ঈশ্বর হয়, তবে পঞ্চ-পরাণের
চেয়ে বড় সাক্ষী অন্যকিছু নয়।

হে, ধর্মের আলখাল্লা পরিহিত মানব জাতি, শোনো
স্বইচ্ছায় চুম্বনবিদ্যুতে ঝলসে অপবিত্র হয়ে যাওয়া
প্রতিটি সঙ্গমই হয় পবিত্র

ভবে প্রেমযজ্ঞে পাপ কেন খোঁজো?

পুনশ্চ
আস্ত সূর্যগ্রহণের মতো তোমায় কেউ গিলে নিলে
এই-তুমি যদি তার হৃৎকক্ষে স্বইচ্ছায় পুরোটা ঢুকে যাও
এই-আমি একটি বারও বাধ সাধবো না। 

পুনশ্চ:
স্বেচ্ছায় লুট হয়ে যাও
অন্যকারো ‘তুমি’র জন্য;
ওম পুষবো না
একই ভূমণ্ডলে বেঁচে রবো; তবুও তোমার
বুক-জমিনে পা ছোঁয়াবো না।

ঝুপঝুপ
যে বলে আধার সুন্দর নয়, চোখ থেকে কাজল নিয়ে
তার কানের লতায় এঁকে দিও তিল। কানজুড়ে থোকা
থোকা জমে যাবে আকাশের মেঘ।

মেঘের শরীর গলে গলে পড়বে
ঝুপঝুপ… ঝুপঝুপ…

তখন
রাজহাঁসের ডানায় চেপে ভেসে যেও খুব!



আরো পড়ুন