১৯ মে ২০২৪, রবিবার



বিশেষ প্রতিবেদন
প্রিন্ট

মাছ-মাংসের দাম লাগামহীন, তবে...

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ১৭ জুন, ২০২৩, ০৬:০৬ পিএম
মাছ-মাংসের দাম লাগামহীন,   তবে...


মাছের দাম হু-হু করে বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সাধারণ ক্রেতারা। তারা আরও বলছেন, মাছের মতোই মাংসের দামও চড়া। পরন্তু দিনে দিনে দাম বাড়তে বাড়তে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে, কিছু কিছু সবজির দাম কমছে বলেও তারা জানান। শনিবার(১৭ জুন) রাজধানীর কাওরান বাজার, গুলশান-১ নম্বর কাঁচাবাজার ও শাহজাদপুর দক্ষিণ কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে। যেখানে এক মাস আগেও ১৬০ থেকে সর্বোচ্চ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শুধু যে পাঙ্গাসের দামই বেড়েছে তাই নয়, বেড়েছে বোয়াল, রুই, কাতল, পাবদা, ইলিশ, চিংড়ি, দেশি টেংরা, মাগুরসহ সব ধরনের মাছের দাম। 

রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতিকেজি বড় বোয়াল বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়। একমাস আগে যা বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকায়। একমাস আগে যে কাতল বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকায়, সেই কাতল এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। বড় পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা, একমাস আগে বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকায়। 

এছাড়া, প্রতিকেজি নদীর টেংরা ১ হাজার টাকা, চাষের ট্যাংরা ৮০০ টাকা, মাঝারি আকারের চিংড়ি ৬০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা, ইলিশ ৯০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকা। দেশি মাগুর ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একমাস আগে যা বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা।

মাছ বিক্রেতারা বলছেন, মাছের খাবারের দাম যখন থেকে বেড়েছে, তখন থেকেই মাছের দামও বাড়তি। মাছের পরিবহন খরচ বেড়েছে। এছাড়া গত কয়েক দিনের গরমের কারণে চাষিরা চাষ করা মাছ বাজারে কম  আনছেন। ফলে এর প্রভাব মাছের বাজারে পড়েছে।  

প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৮০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত ১০ দিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকায়। আর খাসি ও ছাগল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১ হাজার ১০০ টাকা ও ১ হাজার টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০টাকা থেকে ১৮০, সোনালি কক ২৫০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা, সাদা কক ২৪০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিডজন ফার্মের সাদা ডিম ১৩০ টাকা এবং লাল ডিম ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

রাজধানীর শাহজাদপুরের মাংস-বিক্রেতা মো. মিরাজ হোসেন ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরু ব্যবসায়ীরা গরু সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাজারে গরুর সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। আগামীতে আরও বাড়তে পারে।’

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, কাঁচা সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে। অধিকাংশ সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০ দিন আগেও ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে ঢেঁড়স। প্রতিকেজি বেগুন ৫০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, পটল ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, টমেটো ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, আলু ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, বড়বটি ৭০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত ১০ দিন আগে এসব সবজি কমপক্ষে ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হয়েছে। 

কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা রাকিব হাসান ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘অনেক সবজির মৌসুম চলছে। আবার কিছু কিছু সবজি আছে যেগুলো বারো মাসেই উৎপাদন হয়। ফলে বর্তমানে সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। যে-কারণে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে।’

রাজধানীর শাহজাদপুর দক্ষিণ কাঁচাবাজারে বাজার করতে এসেছেন ইঞ্জিনিয়ার এম. এ রহিম। তিনি ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘মাছের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমি একজন সচ্ছল ব্যক্তি। অথচ আমিই হিমশিম খাচ্ছি মাছ কিনতে এসে। কাকে কী বোঝাবো? এসব বলে কী লাভ? কোনো লাভ নেই।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন