১৮ মে ২০২৪, শনিবার



সুনামগঞ্জ হাওরের ৮০ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, সুনামগঞ্জ || ৩০ এপ্রিল, ২০২৩, ১০:০৪ এএম
সুনামগঞ্জ হাওরের ৮০ শতাংশ ধান কাটা সম্পন্ন


সোনালি বোরো ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন হাওরের কৃষকরা। হাওর পাড়ের প্রতিটি গ্রামে কৃষক পরিবারে আনন্দ বইছে। তাপদাহ থাকলেও রোদে ধান কাটা-মাড়াই, সিদ্ধ করা ও শুকানো সহজ হয়েছে। সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগ বলছে, এ পর্যন্ত হাওর এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধান সংগ্রহের পাশাপাশি চলছে গো খাদ্য (খের) শুকিয়ে সংরক্ষণের কাজও। এ বছর হাওরে আগাম বন্যা, ঝড়, তুফানসহ কোনো প্রতিকূলতাই ছিল না। আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ জেলায় সবচেয়ে বেশি বোরো ধান উৎপাদন হয়। হাওরকে ঘিরেই এই সময়টায় কৃষক ও তাদের পরিবারের স্বপ্ন থাকে। ছোট-বড় হাওরগুলোতে ভর্তুকি মূল্যে হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটায় একদিকে যেমন সল্প সময়ে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে, তেমনি শ্রমিক সংকটও অনেকটাই নিরসন হয়েছে। ফলে কিছুটা লাভের আশা করছেন চাষিরা।

প্রতিবছর জেলার ১২টি উপজেলার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বোরো ধান জাতীয় খাদ্য ভাণ্ডারে যুক্ত হয়। জেলায় এবার বোরো ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ২২হাজার ৩৯৫ হেক্টর। তবে, ২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। এবছর জেলায় উৎপাদিত ধানে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হাওর পাড়ের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে ও খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হাওর পাড়ের যে দিকে চোখ যায়, শুধু ধান কাটা-মাড়াইয়ের উৎসব দেখা যায়। বৈশাখের শুরু থেকেই হাওরে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন।  

এদিকে, কৃষক শফিক মিয়া, রাকিব মিয়াসহ অনেকেই বলছেন, ‘এ বছর কৃষি সংশ্লিষ্টসহ সব পণ্যের মূল্য অতিরিক্ত ছিল। একমাত্র ফসল চাষাবাদে ব্যয় করতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। অন্যদিকে বৈরি আবহাওয়ায় শিলাবৃষ্টি ও অতিরিক্ত গরমে আগাম জাতের ধান ২৮ নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অসংখ্য কৃষক। অন্যান্য জাতের ধানে বাম্পার ফলন হওয়ার কারণে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় মাঠে নেমেছি।’

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ‘জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ২২ হাজার ৩৯৫ হেক্টর, তবে ২ লাখ ২২হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এতে করে এ বছর সাড়ে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন ধান পাওয়া যাবে। গত বছর বন্যার কারণে ৮ লাখ ৭৭  হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। চলতি বছরে আমন ধান থেকে উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার মেট্রিক টন চাল। আউশ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে। 

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ‘জেলায় যে পরিমাণ ধান উৎপন্ন হয়, তাতে সারাদেশের ১৮ দিনের খাবারের জোগান হয়।  প্রতি কেজি বোরো ধানের বাজার মূল্য ২৮ টাকা হলে এবার ৩ হাজার ৮ ০০ কোটি টাকার ধান উৎপাদন হবে।

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন