১৮ মে ২০২৪, শনিবার



ক্যাম্পাস
প্রিন্ট

বিশ্ব নারী দিবস: নিশ্চিত হোক নারীর অধিকার

হুমায়রা রহমান সেতু || ০৮ মার্চ, ২০২৩, ০৬:৩৩ পিএম
বিশ্ব নারী দিবস: নিশ্চিত হোক নারীর অধিকার


বিশ্ব নারী দিবস সমতা, উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে নারীর যাত্রাকে প্রণোদনা দেবে। সে লক্ষ্যে নারীর বৈষম্য দূর ও অধিকার আদায়ের জন্য প্রতিবছর মার্চ মাসের ৮ তারিখে পালন করা হয় বিশ্ব নারী দিবস। 

আমারা এই যে নারী পুরুষ সম-অধিকারকারের কথা বলি, আদৌ কি নারী সমান অধিকার পেয়েছে? নারী হয়ে জন্ম নেওয়া সহজ কথা নয়। পুরুষতান্ত্রিক এ সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে সইতে হয় প্রতিবন্ধকতা, পেরুতে হয় বহু কণ্টকাকীর্ণ পথ। শত অপমান অপদস্ততার গ্লানি। আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় এসে কি রুখে গিয়েছে সে বৈষম্য? 

আগে যেমন ছিল, এখন তা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নারী অর্থাৎ মেয়ে শব্দটাতেই মানুষের একটু এলার্জি। জন্মের সময় কন্যা শিশুর জন্ম মানেই মায়ের কোনো অপরাধের ফল। জন্মের পর থেকেই এই যে শিশুকে তার অধিকারের জন্য লড়তে হয়, সে লড়াই যেন আমৃত্যু সংগ্রামে পরিণত হয়। আমরা এখন যা দেখছি, তা আগেও এমন ছিল। নারী দিবস উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের এক ইতিহাস। তা ছিল মজুরি বৈষম্য, কর্ম ঘণ্টা নির্দিষ্ট করা। কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সূতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলেছে সরকারি লেটেল বাহিনীর নিপীড়ন। তখন জার্মানি সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবসের সম্মেলন হলো। ক্লারা ছিলেন জার্মানি রাজনৈতিবিদ। আর এ সম্মেলন ক্লারা ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন।১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

আর নারীকে শুধু বাইরে অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করতে হয় বিষয়টা কিন্তুু এমন নয়, পরিবার থেকেই এ বৈষম্যের সৃষ্টি। পরিবারে পুত্র শিশুর তুলনায় কন্যা শিশুর যে প্রতি বাবা-মায়ের যে বৈষম্য তার ধারাবাহিকতা রয়ে যায়। বিয়ের পরও যৌতুকের জন্য যে নির্যাতন তা তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করে। যেখানে একজন নারী বয়ে আনে সমাজে শান্তি ও ভারসাম্য, সেখানে তাকেই সইতে হয় পদে পদে বঞ্চনা। 

নারী ঘর থেকে বাইরে বেরুলে তার বৈষম্যটা যেন এক নবরূপ নেয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে শিকার হতে হয় নানা যৌন নিপীড়নের আর কর্ম ক্ষেত্রে তো কথাই নেই। সে না পায় তার যোগ্য পারিশ্রমিক। নানা ধরনের পৈচাশিক দৃষ্টি ভেদ করে তাকে সামনে এগিয়ে যেতে হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সবসময় চোখ পড়ে নারী নিপীড়নের খবর। ছোট পাঁচ বছরের শিশুটিরও  মুক্তি মেলে না। তবে এটা কেমন সভ্যতার অগ্রগতি, কেমন নারী অধিকার যা ছোট্ট এক শিশুর নিরাপত্তা দিতে পারে না। এ ছাড়াও, ফেসবুকে কোনো পোস্ট করলে নারী বিদ্বেষীরা হাজির হয়ে যায় তাদের মতামত নিয়ে। এটা কি বন্ধ হবে না?

আগে যেমনটা দেখেছি যে বেগম রোকেয়া নারী অধিকার আদায়ের জন্য লড়েছেন, বর্তমানে একবিংশ শতাব্দীতে এসেও নারী তার সমঅধিকারের জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। তাই জাগরণের পথে সম্মিলিত পদভারে সবাইকে বলতে হয় ‘জাগো নারী বহিঃ শিখা’।

লেখক: শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।



আরো পড়ুন