০৭ জুলাই ২০২৪, রবিবার



লাইফ স্টাইল
প্রিন্ট

উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে আছেন যারা

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ০৪ জুলাই, ২০২৪, ১২:০৭ এএম
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে আছেন যারা


হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের ভুল ধারণা আছে। অনেকে মনে করেন, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণেই উচ্চ রক্তচাপ হয়। আবার কেউ কেউ মনে করেন, কারও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে হয়তো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সময় যে বুক ধড়ফড় করে, সেটিই হাইপারটেনশন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে উচ্চ রক্তচাপ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, উচ্চ রক্তচাপেরই আরেক নাম হাইপারটেনশন। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা এনএইচএস হাইপারটেনশনকেই হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ বলে বর্ণনা করছে। বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৫০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। বাংলাদেশে এক চতুর্থাংশ মানুষ হাইপারটেনশন বা যাকে সাধারণভাবে আমরা উচ্চ রক্তচাপ বলে জানি, তাতে ভুগছেন বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এ ক্ষেত্রে  পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ

এক সময় ধরে নেয়া হতো কেবল বয়স্ক মানুষ, অর্থাৎ ৪০ বছরের বেশি হলেই কারও উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা তৈরি হয়। তবে এখন চিকিৎসকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অল্পবয়সীদের মধ্যেও এ রোগ দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক এসএম মুস্তাফা জামান বলেন, সবচেয়ে বড় শঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, বেশিরভাগ মানুষ নিজেরা যে হাইপারটেনশনে ভুগছেন সে সম্পর্কে জানেন না।

অধ্যাপক এসএম মুস্তাফা জামান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে হাইপারটেনশনের যে রোগীরা আসেন, তাদের মধ্যে তিন ভাগের একভাগ রোগীই জানেন না যে তারা হাইপারটেনশনে ভুগছেন। আর একভাগ রোগী আসেন ঘাড় ব্যথা, মাথা ব্যথা, বমি ভাব বা বমি হওয়া, শরীর খারাপ এমন ধরনের উপসর্গ নিয়ে। এ ছাড়া একভাগ রোগী আসেন উচ্চ রক্তচাপের ফলে হওয়া জটিলতা নিয়ে, যেমন: হার্ট ফেইলিওর বা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক হওয়ার পর।

এ ক্ষেত্রে সাধারণভাবে তিনি উচ্চ রক্তচাপের কয়েকটি লক্ষণের কথা বলেছেন। যেমন: ঘাড় ও মাথা ব্যথার পাশাপাশি মাথা ঘোরা, অল্পে রেগে যাওয়া, রাতে ভালো ঘুম না হওয়া, অস্থির লাগা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে। সেই সঙ্গে রক্তচাপ পরিমাপ করে দেখতে হবে।

কখন বোঝা যাবে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনে ভুগছেন?

হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ বেশি থাকলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার বলা হয়। অধ্যাপক জামান বলেন, যখন কোনো মানুষের রক্তচাপ পরিমাপের দুটি একক, অর্থাৎ সিস্টলিক প্রেশার, যাকে প্রেশারের উপরের পরিমাপক বলা হয় এবং ডায়াস্টলিক প্রেশার, যাকে সাধারণভাবে নিচের দিকের রক্তচাপ পরিমাপক বলা হয়, সেখানে নির্ধারিত মাত্রার উপরে রক্তচাপ চলে যায়।

একজন সুস্থ মানুষের রক্তচাপ থাকার কথা ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। কিন্তু সেটি যদি কারও পরপর দুইদিন ১৪০/৯০ এর বেশি থাকে তখন সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বলে চিহ্নিত করা হয়। তবে রোগীর বয়স ৮০ বছর বা তার বেশি হলে রক্তচাপের পরিমাপক বেশি হবে।

উচ্চ রক্তচাপের কারণ 

অধ্যাপক জামান জানান, উচ্চ রক্তচাপ কিভাবে বাড়ে সেটি নির্দিষ্ট করে জানা যায় না। তবে অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক কারণের সঙ্গে বংশগতির সম্পর্ক থাকে। এ ক্ষেত্রে যাদের অল্প বয়সে উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হয়, তাদের রক্তচাপ বেশি থাকার কিছু কারণ দেখা যায়, যার কারণে কারও রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। সেগুলো হলো-

কিডনির সমস্যা।

রক্তনালী সরু হয়ে যাওয়া।

হরমোনজনিত সমস্যা।

থাইরয়েডের সমস্যা, পিটুইটারি গ্লান্ডের সমস্যা।

মস্তিষ্কে কোনো সমস্যা থাকলে।

স্টেরয়েড গ্রহণের ধারাবাহিকতা থাকলে।



আরো পড়ুন