১৯ মে ২০২৪, রবিবার



নারীদের পরিবর্তনের কারিগর হিসেবে গড়তে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ২৫ আগস্ট, ২০২৩, ০৯:০৮ এএম
নারীদের পরিবর্তনের কারিগর হিসেবে গড়তে প্রধানমন্ত্রীর ৫ দফা


নারী ও বালিকাদের পরিবর্তনের কারিগর হিসেবে গড়ে তুলতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে এ লক্ষ্যে ৫ দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে ব্রিকস সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এক মধ্যাহ্নভোজে ভাষণদানকালে তিনি এ প্রস্তাবগুলো পেশ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথে আমাদের নারী ও বালিকাদের পরিবর্তনের কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এসডিজি ৫ অর্জনের জন্য আমাদের সবার হাতে হাত রেখে চলা উচিত।’  

ব্রিকসের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গে আসা রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে এ মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রথম প্রস্তাবে বলেন, ‌‘আমাদের নারী ও মেয়েদের পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চলমান খাদ্য, শক্তি ও আর্থিক সংকটের বিরূপ প্রভাব প্রশমিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের মেয়েদের স্কুলে রাখতে, তাদের সাইবার অপরাধ থেকে সুরক্ষিত রাখতে ও তাদের ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিভাজন কমানোর জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। অনেক মেয়েই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়।’

শেখ হাসিনা তৃতীয় প্রস্তাবে বলেন, ‘নারীদের লাভজনক কর্মসংস্থান, শালীন কাজ, মজুরি সমতা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সুযোগ বাড়াতে হবে। চতুর্থ এবং পঞ্চম প্রস্তাব হচ্ছে- একটি সক্রিয় ও টেকসই রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য নারীদের লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরির পাশাপাশি জলবায়ুর প্রভাবের কারণে নারীদের সুরক্ষা ও টিকে থাকার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীতার ওপর গভীরভাবে নজর দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি লিঙ্গ সমতার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি আপনাদের প্রতিশ্রুতিতে সত্যিই অনুপ্রাণিত বোধ করছি।’

শেখ হাসিনাকে এমন একটি বিষয়ে কথা বলতে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতি রামাফোসার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং নারী মাস উদযাপনের জন্য সমস্ত দক্ষিণ আফ্রিকানকে অভিনন্দন জানান।

নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে প্রণীত সংবিধানে নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবিধানের ২৮(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে : ‘রাষ্ট্র ও জনজীবনের সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সংসদে একটি অনন্য নজির রয়েছে, যেখানে আমাদের স্পিকার, সংসদের নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা ও সংসদের উপনেতা সবাই নারী।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার নারীদের জন্য সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক, বেসামরিক প্রশাসনের উচ্চ পদ, সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েরর ভাইস চ্যান্সেলর ও আরও অনেক কিছুর দরজা খুলে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার সংস্থায় নারীদের জন্য ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত হওয়ায় ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নারী রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন। আমি মনে করি শিক্ষা ও কর্মসংস্থান দুটি মূল উপাদান-যা নারী ক্ষমতায়ন করতে পারে। তাই, নারী শিক্ষার ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। মেয়েদের দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে মেয়েদের তালিকাভুক্তি বেড়েছে ৯৯ শতাংশ। মেয়ে-ছেলে স্কুলে তালিকাভুক্তির অনুপাত ৫৩:৪৭-এ উন্নীত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় ২৫ মিলিয়ন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন উপবৃত্তি এবং বৃত্তি কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। উপবৃত্তির অর্থ সরাসরি তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মা অথবা বৈধ অভিভাবকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে।’ সূত্র: বাসস

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন