সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা খাদ্যগুদামে নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম। এতে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় কৃষকরা। তারা বলছেন, চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহের কথা ছিল। তাহলে ৩১ জুলাইয়ে কেন এই কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলো।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লটারির মাধ্যমে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার কথা রয়েছে। কিন্তু খাদ্য বিভাগ ৩১ জুলাই পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করার পর কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে। যদিও এ বছর ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২৯২ মেট্রিক টন। সে লক্ষ্যে শুরু থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ১২১৮ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়। বাকি ৭৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়নি।
উপজেলার রতনশ্রী গ্রামের কৃষক মিজানুর মিয়া বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করার কথা, কিন্তু কর্তৃপক্ষ ধান সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে গুদামে ধান দিতে পারছি না।’
তাহিরপুর উপজেলার আনন্দনগর গ্রামের বাসিন্দা মাটিয়ান হাওরের কৃষক সায়েম মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গুদামে ধান দিতে গেলেই কোনো না কোনোভাবে কৃষকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ বছর নির্ধারিত সময় থাকার পরও ধান সংগ্রহ বন্ধ করে দিয়েছে গুদাম কর্তৃপক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘গুদামে দেওয়ার জন্য অনেক কৃষকের ধান রয়েছে, সেগুলো আমরা দিতে পারতেছি না। ২০-২৫ মন ধান আছে এইগুলো গুদামে দেওয়ার জন্য রাখছিলাম। এখন তো আর দেওয়া যাচ্ছে না।’
উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষক বোরহান মিয়া বলেন, ‘গুদামে ধান বিক্রি সংগ্রহের শেষ তারিখ ৩১ আগস্ট, ভাবলাম যে আগস্ট মাসেই দেবো। কিন্তু ২ তারিখে গুদামে গিয়ে শুনি আর ধান সংগ্রহ করা হবে না। এখন কিছু ধান ছিল, সেই ধান কোথায় বিক্রি করবো? পাইকার বা মহাজনের কাছে বিক্রি করলে দাম কম পাইমু।’
উপজেলার পাঠাবুকা গ্রামের কৃষক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘প্রথমেই বলবো এটা এক ধরনের হয়রানি। যেখানে বলা হয়েছে পুরো আগস্ট মাস ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে, সেখানে জুলাই মাস শেষ হতে না হতেই বন্ধ করা হয়েছে।’
তিনি চলতি বছরে বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ করার দাবি জানান।
তাহিরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিএম মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘৩১ জুলাই জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে এক জরুরি সভায় জানানো হয়েছে সারাদেশে বোরো ধান সংগ্রহ অভিযান এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।’
তানভীর/এম