২৬ জুন ২০২৪, বুধবার
বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। ঈদের দিন (১৭ জুন) সকালে টসে হেরে আগে ব্যাট করছে টিম টাইগার। সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দি গ্র্যানাডাইনসের কিংসটাউন শহরের আরনস ভেল স্টেডিয়ামে হচ্ছে ম্যাচটি। ১৯.৩ ওভারে বাংলাদেশ অল আউট হয়েছে ১০৬ রানে।
বাংলাদেশের জন্য শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম বলেই কট অ্যান্ড বোল্ড হন ইনফর্ম ওপেনার তানজিদ তামিম। প্রথম ওভারের ৬ষ্ঠ বলে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন আরেক ওপেনার লিটন দাশ। রিভিউ নিয়ে তিনি বেঁচে যান। তবে দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক শান্ত। এবারের বিশ্বকাপ মোটেও ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশ অধিনায়কের। ৫ বলে ৪ রান করেন তিনি।
লিটনের অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। আনাড়ির মতো ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ আউট তিনি। ৫ম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ২১ রানে ফিরে যান, ১২ বলে নেন ১০ রান।
আসা যাওয়ার মিছিলে এর পর যোগ দেন হার্ড হিটার হৃদয়। পরিস্থিতি না বোঝে চালিয়ে খেলতে গিয়ে তিনিও ক্যাচিং প্র্যাকটিসের করানোর মতো সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দলকে বিপদে ফেলে ৬ষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে ফিরে যান তিনি। দলীয় রান তখন মাত্র ৩০।
৭ম ওভারে আসেন স্পিনার লামিচানে। ততক্ষণে বাংলাদেশের ক্ষতি যা হবার হয়ে গেছে। আরো কিছু দেখার বাকি ছিল। সেটাই হলো নবম ওভারে। শেষ বলে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন রিয়াদ। ৫১ রানে ৫ উইকেট নেই! এই হলো বাংলাদেশের ব্যাটিং! ১৩ বলে ১৩ করেন রিয়াদ।
সাকিব আউট হলে আরো চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ১২ তম ওভারের চার নম্বর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয় তাকেও। ৬১ রানে পড়লো ৬ষ্ঠ উইকেট। এখন আর স্বীকৃত কোনো ব্যাটসম্যান নেই টাইগার টিমে। টেল এন্ডাররা কী করে, সেদিকেই তাকিয়ে ভক্তরা।
১৪ তম ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লিউ হন তানজিম সাকিব। আপাতত লিটনের মতো রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনিও। কিন্তু লাভ ছিল না। সন্দিপ লামিচানের পরেই বলেই ক্লিন বোল্ড। ৬৯ রানে পড়লো ৭ম উইকেট। ৫ বলে তার সংগ্রহ ৩ রান। উইকেটে আসেন রিশাদ। দলে তখন করুণ বিষাদ।
১৬ তম ওভারে তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে যান জাকের আলী। ৮ম উইকেট পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটিং ইনিংসের আশার যবনিকাপাত ঘটে। জাকের আলী আউট হন দলীয় ৭৫ রানে। ২৬ বলে তার সংগ্রহ ১২। তা-ও আবার পুরো ওভার মেডেন উইকেট!
এরপর হাত খুলেন রিশাদ। ইনিংসের প্রথম ছক্কা আসে সতেরতম ওভারের প্রথম বলে। পরের বলে ৪। ওই ওভারে আসে ১৩ রান। কিন্তু সেই একই দু:সংবাদ লিখতে হয়। ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই লং অফে ক্যাচ দেন রিশাদ। শেষ ভরসা হয়ে থাকেন তাসকিন আর মোস্তাফিজ।
যখন শঙ্কা জাগে দলীয় রান ১০০ হবে কি না, তখন ১৯তম ওভারে শেষ জুটি নেয় ১১ রান। অথচ স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা খাবি খেয়ে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসেন। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। রান আসে না এরকম একটি বলে রানের জন্য দৌড়ান শেষ দুই ব্যাটসম্যান। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে রান আউট হন মোস্তাফিজ, ৪ বলে তিনি নেন ৩ রান। ১০৬ রানে শেষ বাংলাদেশের ব্যাটিং। টেষ্ট খেলুড়ে দেশ খেলতে পারল না ২০ ওভার।
আজ জিতলেই সুপার এইটে যাবে বাংলাদেশ। এমন সমীকরণের সামনে ব্যাটিং বিপর্যয়ে টিম টাইগার। বোলিংয়ে মিরাকল কিছু না হলে কপালে শনি আছে। তবে ভালো খবর হলো নেদারল্যান্ডস এবং শ্রীলঙ্কার ম্যাচে ভালো অবস্থানে আছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কা জিতলে তখন বাংলাদেশেও হারেও তেমন ক্ষতির কিছু নেই, শুধু রেকর্ডে হার লেখা থাকবে এই। আর নেপাল পাবে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের সাধ।
বলার অপেক্ষা রাখে না নেপালের বোলাররা অসাধারণ বোলিং করেছেন। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন সোমপাল, দিপেন্দ্র আইরে, রোহিত পাউডেল্ এবং সন্দিপ লামিচানে।
