২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



নেপালকে হারিয়ে সুপার এইটে বাংলাদেশ

ঢাকা বিজনেস স্পোর্টস ডেস্ক: || ১৭ জুন, ২০২৪, ০৭:০৬ এএম
নেপালকে হারিয়ে সুপার এইটে বাংলাদেশ


বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। ঈদের দিন (১৭ জুন) সকালে টসে হেরে আগে ব্যাট করে ১০৬ রানে অল আউট হয় টিম টাইগার। সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্র্যানাডাইনসের কিংসটাউন শহরের আরনস ভেল স্টেডিয়ামে নেপালকে মাত্র ৮৫ রানে অল আউট করে ২১ রানে ম্যাচ জিতে টাইগাররা। এরফলে গ্রুপ ডি থেকে ছয় পয়েন্ট নিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। 

৪ ওভারে ৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন টাইগার পেসার তানজিম সাকিব। ম্যান অব দ্য ম্যাচের ট্রফিও উঠেছে তার হাতে। তিনি মেডনে পেয়েছেন ২টি। ওদিকে মোস্তাফিজুর রহমানও ৪ ওভারে ৭ রান দিয়ে তিন উইকেট পেয়েছেন। তার মেডেন একটি। তবে সাকিব আল হাসান আজ দুই উইকেট পেয়েছেন। ২.২ ওভার বল করে তিনি রান দিয়েছেন ৯। শেষ দুটি উইকেট তিনি পর পর ২ বলে তুলে নিয়ে ছেঁটে দিয়েছেন নেপালকে। তাসকিন একটি উইকেট পেলেও রিশাদ পাননি। রিশাদ ৩ ওভারে ১৫ রান দিয়েছেন।  

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও নেপাল ৬ষ্ঠ উইকেটে জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় এবং জেতার জন্য লড়াই করে। ওই জুটির কুশল মাল্লা ৪০ বলে ২৭ রান করেন। আরেক ব্যাটার দিপেন্দ্র আইরে ২৫ রান করেন ৩১ বলে। এর বাইরে নেপালের অন্য ব্যাটসম্যানরাও আসা যাওয়ার মিছিলে ছিলেন। ঈদের দিনে ম্যাচ জিতে খুশি টিম টাইগার। খুশি বাংলাদেশের ভক্তরাও। 

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম বলেই কট অ্যান্ড বোল্ড হন ইনফর্ম ওপেনার তানজিদ তামিম। প্রথম ওভারের ৬ষ্ঠ বলে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন আরেক ওপেনার লিটন দাশ। রিভিউ নিয়ে তিনি বেঁচে যান। অন্যপ্রান্তে, দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে যান অধিনায়ক শান্ত। এবারের বিশ্বকাপ মোটেও ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশ অধিনায়কের। ৫ বলে ৪ রান করেন তিনি। 

লিটনের অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। আনাড়ির মতো ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ আউট তিনি। ৫ম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ২১ রানে ফিরে যান, ১২ বলে নেন ১০ রান। আসা যাওয়ার মিছিলে এর পর যোগ দেন হার্ড হিটার হৃদয়। পরিস্থিতি না বোঝে চালিয়ে খেলতে গিয়ে তিনিও ক্যাচিং প্র্যাকটিসের মতো সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দলকে বিপদে ফেলে ৬ষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে ফিরে যান তিনি। দলীয় রান তখন মাত্র ৩০। 

৭ম ওভারে আসেন স্পিনার লামিচানে। ততক্ষণে বাংলাদেশের ক্ষতি যা হবার হয়ে গেছে। আরো কিছু দেখার বাকি ছিল। সেটাই হলো নবম ওভারে। শেষ বলে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন রিয়াদ। ৫১ রানে ৫ উইকেট নেই! ১৩ বলে ১৩ করেন রিয়াদ। 

সাকিব আউট হলে আরো চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ১২ তম ওভারের চার নম্বর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয় তাকেও। ৬১ রানে পড়ে ৬ষ্ঠ উইকেট। তখন আর স্বীকৃত কোনো ব্যাটসম্যান নেই লাইন আপে। টেল এন্ডাররা কি করে সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন ভক্তরা।  

১৪ তম ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লিউ হন তানজিম সাকিব। আপাতত লিটনের মতো রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনিও। কিন্তু লাভ ছিল না। সন্দিপ লামিচানের পরেই বলেই ক্লিন বোল্ড। ৬৯ রানে পড়লো ৭ম উইকেট। ৫ বলে তার সংগ্রহ ৩ রান। উইকেটে আসেন রিশাদ। দলে তখন করুণ বিষাদ। 

১৬ তম ওভারে তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে যান জাকের আলী। ৮ম উইকেট পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটিং ইনিংসের আশার যবনিকাপাত ঘটে। জাকের আলী আউট হন দলীয় ৭৫ রানে। ২৬ বলে তার সংগ্রহ ১২। তা-ও আবার পুরো ওভার মেডেন উইকেট! 

এরপর হাত খুলেন রিশাদ। ইনিংসের প্রথম এবং একমাত্র ছক্কা আসে সতেরতম ওভারের প্রথম বলে। পরের বলে ৪। ওই ওভারে আসে ১৩ রান। কিন্তু সেই একই দু:সংবাদ লিখতে হয়। ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই লং অফে ক্যাচ দেন রিশাদ। শেষ ভরসা হয়ে থাকেন তাসকিন আর মোস্তাফিজ। 

যখন শঙ্কা জাগে দলীয় রান ১০০ হবে কি না, তখন ১৯তম ওভারে শেষ জুটি নেয় ১১ রান। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। রান নেওয়ার দরকার ছিল না; এরকম একটি বলে রানের জন্য দৌড়ান শেষ দুই ব্যাটসম্যান। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে রান আউট হন মোস্তাফিজ, ৪ বলে তিনি নেন ৩ রান। ১০৬ রানে শেষ বাংলাদেশের ব্যাটিং। 

বলার অপেক্ষা রাখে না নেপালের বোলাররা অসাধারণ বোলিং করেছেন। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন সোমপাল, দিপেন্দ্র আইরে, রোহিত পাউডেল্ এবং সন্দিপ লামিচানে। 

ওই ম্যাচ জিতলেই সুপার এইটে নিশ্চিত বাংলাদেশ। এমন সমীকরণের সামনে ব্যাটিং বিপর্যয়ে টিম টাইগার। 

বোলিংয়ে অসাধারণ কিছু না হলে শেষ রক্ষা হবে না এরকম অবস্থায় ঠিকই জ্বলে ওঠেন বোলাররা। প্রথম দুই ওভারে নেপাল বিনা উইকেটে ৯ রান তুলে নেয়। তৃতীয় ওভারে জোড়া আঘাত হানেন তানজিম সাকিব। এরমাধ্যমে শুরু থেকেই নেপালের টুঁটি চেপে ধরে টিম টাইগার। নেপালও নিয়মিত বিরতিতে উইকেটে হারাতে থাকে। তাদের শেষ তিন উইকেট পড়ে পর পর তিন বলে। ১৯ম ওভারের শেষ বলে একটি, ২০ তম ওভারের প্রথম দুই বলে ২টি। নেপালের শেষ চার উইকেট পড়ে ১০ বলের মধ্যে, কোনো রান সংগ্রহ না করেই।



আরো পড়ুন