২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার



পর্যটকবরণে প্রস্তুত ষাটগম্বুজ মসজিদ, সুন্দরবনে ‘না’

জামাল হোসেন বাপ্পা, বাগেরহট || ১৬ জুন, ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম
পর্যটকবরণে প্রস্তুত ষাটগম্বুজ মসজিদ, সুন্দরবনে ‘না’


পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাগেরহাটে পর্যটকদের বরণ করে নেওয়ার জন্য পস্তুত রাখা হয়েছে জেলার অন্যতম পর্যটন স্পট ষাটগম্বুজ মসজিদ। প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষে হাজার হাজার পর্যটকের সার্বিক নিরাপত্তা ও পর্যটন স্পটগুলোতে অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানামুখী উদ্যোগ। তবে  অন্যতম পর্যটন স্পট সুন্দরবন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটকদের বাড়তি চাপটা ষাটগম্বুজ মসজিদেই থাকার ধারণা করছে জেলা প্রশসন।

এরইমধ্যে ঈদ উপলক্ষে বাগেরহাটে আশা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও স্পটগুলোতে অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আর ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান আলীর মাজার, বারাকপুরে অবস্থিত সুন্দরবন রির্সোট সেন্টার, শহরের দশানী পার্ক ও শহরের দড়াটানা নদী সংলগ্ন পৌর পার্কসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের কছে আকর্ষণীয় করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ষাটগম্বুজ মসজিদ ও খানজাহান আলীর মাজার এলাকায় পর্যটকদের বিশেষ আকর্ষণ করতে বিভিন্ন আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মাছ ও বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি, বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় সুন্দরবনে টানা তিন মাসের জন্য দর্শনার্থী ও বনজীবীদের প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করেছে বন বিভাগ। তাই শনিবার (১ জুন) থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সুন্দরবন প্রবেশের দুয়ার।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, ‘বনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় আইআরএমপি‘র সুপারিশ অনুযায়ী জুন থেকে থেকে আগস্ট এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী-খালের মাছের প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এই সময়ে সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ ছাড়া এই সময়ে বন্য প্রাণীদেরও প্রজনন মৌসুম। তাই সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকতো। পরে ২০২২ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এই নিষেধাজ্ঞা একমাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। সেই থেকে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে দর্শনার্থী প্রবেশ ও সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে।’

মিহির কুমার দে আরও বলেন, ‘আগামী তিন মাস সুন্দরবনে সব ধরনের প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এই সময়ে জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের পাশও বন্ধ থাকবে। কোনোভাবে অবাঞ্ছিত কেউ বনে প্রবেশ করতে পারবে না। নিষেধাজ্ঞার সময়ে বনে যাতে কোনো প্রকার অন্যায় অপরাধ সংঘটিত হতে না পরে, সে জন্য বন বিভাগ সতর্ক থাকবে। এ কারণে এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাগেরহাটে আগত পর্যটকরা সুন্দরবনের করমজল, কচিখালী, হিরন পয়েন্ট ও দুবলারচরসহ পর্যটন স্পটগুলোতে প্রবেশের অনুমতি পাবেন না।’

বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, ‘এই ঈদে সুন্দরবনের করমজল, কচিখালী, হিরন পয়েন্ট ও দুবলারচরসহ পর্যটন স্পটগুলোতে হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটছে না। এর আগের ঈদে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা, পর্যটন স্পটগুলোতে অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করা ও চোরা শিকারিদের তৎপরতা বন্ধে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বনরক্ষীদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছিল। তাই এই ঈদে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ।’

বাগেরহাট ষাটগুম্বুজ মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক মো. যায়েদ বলেন, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে ষাটগম্বুজ মসজিদে পর্যটকদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জেলা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মসজিদ এলাকায় আনসার মোতায়েন করেছে।’



আরো পড়ুন