০৫ জুলাই ২০২৪, শুক্রবার



লাইফ স্টাইল
প্রিন্ট

শীতে দাঁতের যত্ন

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ০১:৪২ পিএম
শীতে দাঁতের যত্ন


প্রকৃতির পালাবদলে শীত ঋতু নানা বৈচিত্র্যের সম্ভার হলেও সঙ্গে নিয়ে আসে হিম শীতল হাওয়া ও নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ। শীতে শরীর, মন, ত্বক, চুলের পাশাপাশি বিশেষ যত্ন নিতে হয় দাঁতেরও। শীতে ঠাণ্ডা পানি পেলেই দাঁতে শিরশির করে। অনেকেই দাঁত ব্যথায় ভুগে থাকেন। নিম্ন তাপমাত্রা ও বাতাসে দাঁত সংবেদনশীল হতে পারে।  এছাড়া দাঁতের বিভিন্ন সমস্যায় এতে সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। ফলে দাঁত শিরশির করা ও ব্যথার কারণ হতে পারে। দাঁতের ব্যথা দূর ও শিরশির কমাতে আপনাকে যা করতে হবে: 

দাঁতে পুরনো ফিলিং থাকলে 
দাঁতে কোনো পুরনো ফিলিং থাকলে সেটির কিছু অংশ ভেঙে গিয়ে কিংবা ফিলিংয়ের নিচ বা পাশ থেকে নতুন আরেকটি ক্যারিজ দেখা দিতে পারে, যা দাঁতব্যথা বা সংবেদনশীলতা ঘটাতে পারে। তাই এ শীতে ডেন্টিস্টকে দিয়ে দাঁতের পুরনো ফিলিংটি পরীক্ষা করিয়ে নিন। 

দাঁতে কৃত্রিম মুকুট বা ক্যাপ পড়ানো থাকলে 
যাদের দাঁতে কৃত্রিম মুকুট বা ক্রাউন (ক্যাপ) আছে, সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে সেটি আলগা হয়ে দাঁতের কিছু অংশ উন্মুক্ত হয়ে পড়তে পারে। দাঁতে ঘটাতে পারে শিরশিরে ব্যথা। দাঁতে ক্রাউন করার সময় দাঁতের কিছু অংশ চেঁছে ছোট করে নেওয়া হয়, যা সংবেদনশীল ডেন্টিন স্তর উন্মুক্ত করে দাঁত সংবেদনশীল করে তোলে। অবশ্য দাঁতে ক্রাউন করার আগে এটির সংবেদনশীলতা প্রতিরোধ করতে রুট ক্যানাল চিকিৎসা করা হয়। তবে রুট ক্যানাল চিকিৎসা না করে ক্রাউন করা হলে এবং ওই ক্রাউন আংশিক ভেঙে গেলে বা আলগা হয়ে গেলে দাঁতের সংবেদনশীল স্তর শিরশির করার কারণ ঘটাতে পারে। এ শীতে আপনার দাঁতের ক্রাউন সংবেদনশীল মনে হলে ডেন্টাল কিনিকে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। 

যদি ভাঙা দাঁত থাকে 

আপনার কোনো দাঁত আংশিক ভেঙে গেছে কি না, তা দেখুন। যদি এমন হয়, তাহলে দাঁত শিরশির অনুভূতি তৈরি করতে পারে। ডেন্টাল সার্জন দিয়ে তা পরীক্ষা করিয়ে নিন।
ডেন্টাল ক্যারিজ বা দন্তক্ষয় হলে 
দাঁতে কোকো ক্যারিজ দেখা দিয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করিয়ে নিন। ক্যারিজের আকার ছোট হলে তা সংবেদনশীলতা ঘটাতে পারে। অবশ্য ক্যারিজের আকৃতি বড় হলে তা দাঁতের মজ্জা বা পাল্প আক্রান্ত করে তীব্র ব্যথা ঘটাতে পারে। ব্যথার এ তীব্রতা শীতে বেড়ে যেতে পারে। তাই শীতের সময় আগেভাগেই ক্যারিজের চিকিৎসা নিন। এছাড়া, খাবারে অম্ল ও চিনির মাত্রা কমিয়ে দিন। টক জাতীয় খাবারে রয়েছে অম্ল। মিষ্টি জাতীয় খাবারে রয়েছে চিনি। অম্ল দাঁতের অ্যানামেল নামক আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত করে দাঁতের প্রতিরোধী মতা কমিয়ে দেয়। চিনি দাঁতে তৈরি করে ডেন্টাল প্ল্যাক। সেখানে ব্যাকটেরিয়া বংশবিস্তার করে, দেখা দেয় ডেন্টাল ক্যারিজ। 

মাড়িতে সমস্যা হলে 
অতিরিক্ত দাঁত ব্রাশ করার কারণে দাঁত থেকে মাড়ি নেমে গিয়ে ‘জিঞ্জিভাল রিসেশন’ ঘটাতে পারে। তখন দাঁত হয়ে পড়ে সংবেদনশীল। অতিরিক্ত দাঁত মাজার কারণে দাঁতের অ্যানামেল ক্ষয় হয়ে সংবেদনশীল হয়ে পড়তে পারে। মাড়ি রোগের কারণে মাড়ির ভেতরে ফাঁকা স্থান বা পকেট তৈরি হয়ে দাঁতের সংবেদনশীলতা দেখা দিতে পারে। মাড়ি অসুস্থ হলে দাঁতের শেকড়ের চারপাশের হাড়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে দাঁতের শেকড় আলগা হয়ে গিয়ে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে মাড়িরোগ বিশেষজ্ঞ বা পেরিওডেন্টিস্টের পরামর্শ নিন। দিনে দুইবার দাঁত মাজাই যথেষ্ট। তবে প্রতিবার ২ থেকে ৩ মিনিটের বেশি নয়। শীতে যথেষ্ট মাত্রায় ফোরাইড আছে এমন টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। ফোরাইডযুক্ত মাউথওয়াশ দিয়ে কুলি করলেও বেশ উপকার পাওয়া যায়। দাঁতের শিরশির অনুভূতি দূর করতে বিশেষভাবে তৈরি টুথপেস্টও বাজারে পাওয়া যায়। 

ঘরোয়া উপায়ে দাঁতের ব্যাথা উপশমের কিছু উপায়
১. একটি পাত্রে নারকেল তেলের মধ্যে বেশ কিছু লবঙ্গের গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। উপযুক্তভাবে মিহি করে, ব্রাশের সাহায্যে এই মিশ্রন আক্রান্ত স্থানে লাগান। দিনে তিনবার এমনটা করলে অনেকটা আরাম পাবেন। লবঙ্গে রয়েছে ইউজিনল যা দাঁতের ব্যথা সহজেই কমায়। 

২. দাঁতের ব্যথায় ব্যবহার করতে পারেন নারকেল তেল। নারকেল তেলের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য দাঁতের গোড়ার নানা সমস্যা ও সংক্রমণ রোধ করে। 

৩. রান্নার কাজে ব্যবহৃত আদা উপশম করতে পারেন দাঁতের ব্যথা। এক টুকরো আদা কেটে, যে দাঁতে ব্যথা সেই দাঁত দিয়ে হালকা করে চিবাতে থাকুন। কিছুক্ষনের মধ্যেই ব্যথা কমে যাবে। 

৪.রসুন ছাড়া আমাদের রান্না থাকে অসম্পূর্ণ। কিন্তু এই রসুন দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এক কোয়া রসুন থেঁতো করে যে দাঁতে ব্যথা, সেই দাঁতের ওপর লাগিয়ে রাখুন। রসুনের সঙ্গে একটু লবণও মিশিয়ে নিতে পারেন।

ঢাকা বিজনেস/এন/



আরো পড়ুন