০৭ জুলাই ২০২৪, রবিবার
সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ও উজানের ঢল না নামায় কমেছে নদ-নদীর পানি। সেই সঙ্গে নিম্নাঞ্চল থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। এতে মানুষের মনে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ভোগান্তি কমেনি।
এদিকে সুরমা, যাদুকাটা, চলতি রক্তি, পাটলাই, বলাই ও পিয়াইন নদীর পানি প্রবাহ কমেছে। ষোলোঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগ সচল হয়েছে। দোয়ারাবাজার উপজেলার সঙ্গে সুরমা, লক্ষ্মীপুরসহ তিন ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ সচল হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ভাটি অঞ্চলের মানুষদের মনে। তবে, পানিবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি মিললেও বন্যায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নতুন করে ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। ভাঙা সড়কের ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে নারী-পুরুষ ও শিশুদের।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের পানি কমছে। সুরমা নদীর পানি প্রবল স্রোতের টানে ভাটিতে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুরমা নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের জলাবদ্ধতার পানি অনেকটা কমেছে। শহরের সাহেববাড়িঘাট, তেঘরিয়া, বড়পাড়া, শান্তিবাগ, পশ্চিম নুতনপাড়া, মরাটিলা, সুলতানপুর, পাঠানবাড়ি, হাছনবাহার, হাছনবসত, কালীপুরসহ নিম্নাঞ্চলের পানি নেমেছে। সেইসঙ্গে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে গেছে।
অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ বলেন, ‘হাওরে প্রচুর পানি টানছে। বৃষ্টি কমে যাওয়ায় পানি অনেকটা কমে গেছে। আকাশে রোদের দেখা পাওয়ায় এতে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে।’
ভোগান্তিতে পড়া মানুষরা বলেন, বন্যার পানিতে তাদের নাজেহাল অবস্থা। তবে দ্বিতীয় দফার এই বন্যায় সড়কের বেশি ক্ষতি হওয়ায় তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সুহেব মিয়া বলেন, ‘দ্বিতীয় দফা বন্যায় সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি কমলেও এখনো সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা কষ্টকর।’
মাহবুব আলম বলেন, ‘চলতি বছরের প্রথম দফা বন্যায় ঘরবাড়ি, ফসলি জমি তলিয়ে গেলো। দ্বিতীয় দফা বন্যায় সড়ক ভাঙলো। সব মিলিয়ে ভোগান্তি যেন পিছু ছাড়ছে না।’
সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘সুরমা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে শহর থেকে শুরু করে নিম্নাঞ্চলের বসতঘর থেকে পানি নেমে গেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি আরও কমবে।’
