০৭ জুলাই ২০২৪, রবিবার



যে-কারণে ধান পাচ্ছে না হিলি খাদ্যগুদাম

আনোয়ার হোসেন বুলু, দিনাজপুর || ০৪ জুলাই, ২০২৪, ১২:০৭ পিএম
যে-কারণে ধান পাচ্ছে না হিলি খাদ্যগুদাম


দিনাজপুরের হিলিতে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহ অভিযান চলছে ধীরগতিতে। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ অভিযানের প্রায় দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার ২৫ শতাংশ সংগ্রহ হয়নি। তবে চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছেছে। স্থানীয় কৃষকসহ খাদ্যগুদামে কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, এবার ইরি-বোরো মৌসুমে ৩২ টাকা কেজি দরে ৭৭২ মেট্রিক টন ধান ও ৪৫ টাকা কেজি দরে ৩১৪ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় খাদ্য বিভাগ। ধান সংগ্রহ করা হবে কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তালিকাভুক্ত কৃষকদের নাম লটারির মাধ্যমে আর চাল সংগ্রহ করা হবে লাইসেন্সধারী মিলারদের মাধ্যমে। সেই হিসেবে কৃষকদের নাম লটারি করা হয়। এতে ২৫৭ জন কৃষকের নাম ওঠে। একজন কৃষক ৩ মেট্রিক টন করে ধান দেওয়ার কথা। 

লটারিতে নাম ওঠা কৃষক উপজেলার পাউশগাড়া গ্রামের মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি সরকারি ধান সংগ্রহের আগেই ধান বাজারে বিক্রি করে দিয়েছি। বর্তমানে আমার কাছে আর কোনো ধান নেই। এখন দেখছি লটারিতে আমার নাম উঠেছে। আমার ধান না থাকায় আমি সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে পারছি না।’ 

মাসুদ রানা আরও বলেন, ‘সরকার যদি ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই করার সঙ্গে সঙ্গে লটারির ব্যবস্থা করতো, তাহলে আমি সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে পারতাম।’ 

লটারিতে নাম ওঠা আরেক কৃষক মনসাপুর গ্রামের মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘এবার ইরি-বোরো মৌসুমে আামি নিজের ৫ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করি। জৈষ্ঠ্য মাসের প্রথম দিকেই হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটে জমি থেকেই বিক্রি করে দিয়েছি। আর যেটুকু ধান ছিল, তা দিয়ে ভাতের চাল তৈরি করেছি। এখন আমার নিজের কোনো ধান নেই।’ 

হারুনুর রশিদ আরও বলেন, ‘খাদ্য বিভাগ এমন সময় ধান সংগ্রহ শুরু করে, তখন বেশিরভাগ কৃষকের ঘরেই ধান থাকে না।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ইরি-বোরো ধান নিয়ে বৃষ্টি বাদলের জন্য সবসময় আতঙ্কে থাকতে হয়। তাই প্রায় কৃষক ধান কাটা-মাড়াইয়ের পর মাঠ থেকে ধান বিক্রি করে দেন। আমিও তাই করেছি। এখন লটারিতে নাম উঠেছে আমার। কিন্তু বাড়িতে তো ধান নেই। তাই সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে পারছি না।’ 

হিলি সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) জোসেফ হাসদা ঢাকা বিজনেসকে বলেন,  ‘গেলো ৭ মে সরকারি ভাবে এবারের ইরি-বোরো ধান-চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়। হিলি খাদ্যগুদামে ৭৭২ মেট্রিক টন ধান ও ৩১৪ মেট্রিন টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় খাদ্য বিভাগ। গতকাল বুধবার (৩ জুলাই ) পর্যন্ত ১৭৭ মেট্রিক টন ধান ও ২৭১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযান চলবে।’  

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন