১৮ মে ২০২৪, শনিবার



অর্থনীতি
প্রিন্ট

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়ায় যা বললেন তারা

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৮:১২ পিএম
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়ায় যা বললেন তারা


ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা রেমিট্যান্স মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) হিসাবের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ানোকে স্বাগত জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদসহ খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এতে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে চোরাই পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণও কমবে। দেশে বাড়বে বৈধপথে রেমিট্যান্স আসার প্রবাহ।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্দেশনা বলা হয়, ব্যাংকিং চ্যানেলে  আসা রেমিট্যান্সের  ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা (নগদ প্রণোদনার অর্থ ছাড়া) ব্যাংক থেকে সরাসরি সুবিধাভোগীর এমএফএস হিসাবে পাঠানো যাবে। রেমিট্যান্স গ্রহণের ফলে কোনো বেনিফিশিয়ারি হিসাবের স্থিতি ৩ লাখ টাকা অতিক্রম করলে ক্যাশইন বা অ্যাড মানি করা যাবে না। তবে, ওই হিসাবের স্থিতি পুনরায় ৩ লাখ টাকার নিচে নামলে নতুন করে ক্যাশ ইন ও অ্যাড মানি করা যাবে। রেমিট্যান্সের খাত ছাড়া এমএফএসের অন্যান্য সব লেনদেনের ক্ষেত্রে এ বিভাগের ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে জারি করা নির্দেশনা পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। এ নির্দেশনার ফলে ইতোপূর্বে জারি করা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের সার্কুলার বাতিল করা হয়েছে।  নতুন এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এ. বি. মির্জ্জা মো আজিজুল ইসলাম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার প্রবাহ যেন বাড়ে, পাশাপাশি রেমিট্যান্সভোগীরা যেন বেশি পরিমাণে উপকৃত হন সেকারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক এই নির্দেশনা জারি করেছে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি ভালো উদ্যোগ। এখন দেখার বিষয় এই পথে দেশে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ কতটুকু বাড়ে।’

এদিকে সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিনিয়ত এমএফএস ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর লেনদেন আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এমএফএস মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বাড়ানোটা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছিল। আগে যেখানে মানুষ ২/১টি এমএফএস ব্যবহার করতো, এখন সেখানে ৫/৬টি এমএফএস ব্যবহার করছে। এমএফএসগুলোর মধ্যে রয়েছে বিকাশ, রকেট, নগদ, উপায়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মানুষের চাহিদা বেড়েছে আগের তুলনায়। 

আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এমএফএস-এর মধ্যমে প্রবাসীরা সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাঠাতে পারতেন। এখন এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্সভোগীরা ২ থেকে আড়াই লাখ টাকার প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।

এমএফএস বিকাশ-এর হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশন সামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘রেমিট্যান্সযোদ্ধারা আমাদের দেশের সম্পদ। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন। তারা যেন সহজেই বিকাশের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন, সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এখানে আমাদের কতটা লাভ হলো, সেটা মুখ্য বিষয় নয়। তাদের সার্ভিস দেওয়াই আমাদের মুখ্য টার্গেট।’

সামসুদ্দিন হায়দার ডালিম আরও বলেন, ‘বিকাশের লাভ করার মতো আরও অনেক সার্ভিস রয়েছে। তাই এমএফএস হিসাবের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বিতরণের পরিমাণ বাড়ানো হলেও বিকাশ চার্জ এক্ষেত্রে বাড়াইনি। আমাদের লক্ষ্য বিকাশের মাধ্যমে যেন বিদেশ থেকে দেশে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বাড়ে। এতে করে অবৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ কমে যাবে, পাশাপাশি বিকাশ গ্রাহকরা আগের তুলনায় বেশি উপকৃত হবেন।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘এমএফএস হিসাবের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বিতরণের পরিমাণ বাড়ানোর যে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে, তা আজ (৭ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হয়েছে। এতে রেমিট্যান্সভোগীরা আগের চেয়ে বেশি সুবিধাভোগ করবেন। পাশাপাশি এই সার্ভিসের মাধ্যমে রেমিট্যান্সের সঙ্গে কাগজপত্র ছাড়াই সরকারের প্রণোদনা তো তারা পাবেন-ই।’

ঢাকা  বিজনেস/এমএ/



আরো পড়ুন