১৮ মে ২০২৪, শনিবার



বিশেষ প্রতিবেদন
প্রিন্ট

বাদাঘাট বাজারে মাসে ১০ কোটি টাকার বিক্রি

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, সুনামগঞ্জ || ২১ আগস্ট, ২০২৩, ০১:০৮ পিএম
বাদাঘাট বাজারে মাসে ১০ কোটি টাকার বিক্রি


একটি মিষ্টি ও দুটি কাপড়ের দোকান দিয়ে গড়ে উঠেছিল বাজারটি। শত বছরে ডালপালা ছড়িয়ে প্রায় ৫ হাজার দোকানে পরিণত হয়েছে। সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার ২ দিন হাট বসে। এখন বাজারটিতে মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকার পণ্য বেচাবিক্রি হয়।  এতক্ষণ বলছিলাম সুনামগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় বাজার ও তাহিরপুর উপজেলার ‘বাদাঘাট বাজার’-এর কথা।

জানা গেছে, ২ থেকে ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাজারটি এখন সুনামগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় বাজার ও তাহিরপুর উপজেলার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত রয়েছে। 

বাজারটি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ও জেলা শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজার। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত চলে বাজারটিতে বেচাকেনা। 

বাদাঘাট বাজারের ব্যবসায়ী ইউনুস মিয়ার বাবার হাতে গড়া মিষ্টি মেলা রেস্টুরেন্ট এখন তিনিই দেখাশোনা করেন। তার এই রেস্টুরেন্টের মিষ্টির স্বাদ এখন উপজেলা ছাড়িয়ে জেলা পর্যায়ে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিদিন রাতে ৩০ থেকে ৪০ কেজি মিষ্টি বানান আর পরদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বিক্রি করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুধু ইউনুস মিয়া নন, বাজারটিতে আরও ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের ৫ হাজারের বেশি দোকানপাট রয়েছে। তার মধ্যে জামা কাপড়, ব্যাগ, জুতা, ইলেকট্রনিক্স, প্রসাধনী, গৃহস্থালি সামগ্রী, মাটির আসবাবপত্র, বিভিন্ন ধরনের চাল, রকমারি ফল, মুড়ি, রকমারি সুতা, পান-সুপারিসহ সব ধরনের পণ্য এই বাজারে পাওয়া যায়। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলে বাজারের দোকানগুলোতে। 

গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কবির ভূঁইয়া জানান, এই বাজারে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় বৃহস্পতি ও রোববার। এই দুইদিন উপজেলার দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা রকমারি পণ্য এনে এই বাজারে বিক্রি করেন। যে কারণে কিছুটা কম দামেই পণ্য মেলে। কিন্তু সুনামগঞ্জ হাওর এলাকা হওয়ায় এখনও অনেক জায়গায় সরাসরি সড়ক পথে যানবাহন চলাচল করে না। আর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় তার প্রভাব পড়ে এই প্রাচীন বাজারটিতে। বাজারের চালপট্টি সড়কটি বেহাল অবস্থা। 

বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী পাইকারি বিক্রেতা একিনুর মিয়াসহ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘প্রাচীন এই বাজারটিতে সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। তাই যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে বাজারটি এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নতিতে সহায়ক হবে। সেইসঙ্গে এই অঞ্চলের অর্থনীতি আরও চাঙা হতো।’

বাদাঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সেলিম হায়দার বলেন, ‘বাদাঘাট বাজার সুনামগঞ্জের বৃহত্তর বাজার। এখানে মাসে প্রায় ১০কোটি টাকার মালামাল বেচাবিক্রি হয়। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মালামাল নিয়ে আসতে ব্যবসায়ীদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে বাজারটির পণ্য বিক্রি আরও বাড়বে, সরকারও বেশি রাজস্ব পাবে।’

বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সরকার ৫০ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব পায় প্রতিবছর এই বাজার থেকে। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি বাদাঘাটের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো করা। হলে একদিকে যেমন সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে, অন্যদিকে এই অঞ্চলের অর্থনীতি চাঙা হবে। আশা করি সরকার বিষয়টিতে নজর দেবে।’

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘বাদাঘাট বাজারটি জেলার সবচেয়ে বড় ও পুরাতন বাজার। এই বাজারে সব ধরনের পণ্যসামগ্রী পাওয়া যায়, বেচাকেনাও বেশি হয়। বাজারটির উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ব্যবসায়ীসহ সবাই উপকৃত হবে আর সরকারও বেশি রাজস্ব পাবে।’

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন