ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে শনিবার (১৩ মে) সকাল থেকেই বাগেরহাটের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। এরফলে মোংলাবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (১২ মে) সকাল থেকেই সন্ধ্যা পর্যন্ত তীব্র গরমের সঙ্গে রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করেছিল। তবে এতে বন্দরে অবস্থানরত সাতটি বিদেশি জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বন্দরে বিদেশি জাহাজ চলাচলও।
শনিবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও জেলার কোথাও বৃষ্টি, বা ঝড়ো হাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পশুর, বলেশ্বর, ভৈরবসহ জেলার বেশিরভাগ নদ-নদীও স্বাভাবিক রয়েছে। জনমানুষের জীবন যাত্রায়ও কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি ঘূর্ণিঝড়ের এই আগাম সংকেত।
বাগেরহাটের শরণখোলার স্থানীয় সাংবাদিক মাহফিজুর রহমান বাপ্পাী জানান, বলেশ্বর ও ভোলা নদীর পানি স্বাভাবিক রয়েছে। আবহাওয়াও ভালো। শুধু আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে। তবু সাধারণ মানুষ তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন,‘সকাল থেকে সুন্দরবনের আবহাওয়া স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো কোনো সমস্যা নেই।’
আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলেও মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৪৪৬ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, নগদ অর্থ ও প্রয়োজনীয় স্বেচ্ছাসেবককেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আজিজুর রহমানের জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলা সদর ও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৯ উপজেলায় ৮৪ মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কয়েকশ স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
শনিবার সকাল সোয়া ১১টায় বাগেরহাটের মোংলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোংলাবন্দর থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। মোংলায় বড় ধরনের কোনো জলচ্ছ্বাসের আশঙ্কা নেই। তবে, স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা কিছুটা বাড়তে পারে। বাগেরহাটের মোংলাবন্দর থেকে এর দূরত্ব ৭৮৫ কিলোমিটার। এর ফলে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঢাকা বিজনেস/এনই/