২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, শনিবার



স্বর্ণালঙ্কারে ভ্যাট ৩ শতাংশ করাসহ ১১ দফা প্রস্তাব বাজুসের

স্টাফ রিপোর্টার || ০৫ জুন, ২০২৩, ১০:৩৬ এএম
স্বর্ণালঙ্কারে ভ্যাট ৩ শতাংশ করাসহ ১১ দফা প্রস্তাব বাজুসের


সোনার অলংকার, রুপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করাসহ ১১ দফা দাবি জা‌নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। ‌সোমবার (৫ জুন) রাজধানীর বসুন্ধরা সি‌টি কমপ্লে‌ক্সের বাজুস কার্যালয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তা‌বিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেল‌নে এই  প্রস্তাব দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সহ-সভাপতি ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, সংগঠনের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল, সহ-সম্পাদক ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের ভাইস চেয়ারম্যান সমিত ঘোষ অপু, স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশন সদস্য সচিব পবন কুমার আগরওয়াল প্রমুখ।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাগেজ রুলস সংশোধন এনেছে সরকার। সংশোধিত ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী, একজন যাত্রী ১১৭ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের বার বাংলাদেশে আনতে পারবেন। আগে ২৩৪ গ্রাম ওজনের দুটি বার আনতে পারতেন।

সংশোধিত ব্যাগেজ রুলকে যুগান্তরকারী পদক্ষেপ উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বাজুস জানায়, এখন দেশে সোনা চোরাচালান ও মুদ্রাপাচার অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। সোনার বারের মতো ব্যাগেজ রুলের আওতায় অলংকার-গহনা আনার সীমা ১০০ গ্রাম থেকে কমিয়ে ৫০ গ্রাম করার প্রস্তাব করেছে বাজুস।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারের সর্বশেষ সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশের সোনার বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৪০ টন। তবে প্রকৃত চাহিদা নিরূপণে সরকারের সমীক্ষা প্রয়োজন। বৈধভাবে সোনার চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে বড় বাধা কাঁচামালের উচ্চমূল্য, অতিরিক্ত উৎপাদনব্যয়, শিল্প সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক জানিয়ে বাজুস জানায়, বর্তমানে জুয়েলারি শিল্পের প্রায় সব ধরনের পণ্য ও যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ। যা স্থানীয় অন্যান্য শিল্পে আরোপিত শুল্কের চেয়ে অনেক বেশি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে উচ্চ ভ্যাট হার ও অতিরিক্ত উৎপাদন খরচের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দামের পার্থক্য হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারাচ্ছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। আর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছোট ছোট জুয়েলারি ব্যবসায়ী।

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে জুয়েলারি খাতে আরোপিত শুল্ককর ও ভ্যাট হার কমানো এবং আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া দরকার। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১১টি প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস।

প্রস্তাবগুলো হলো:

১. সোনার অলংকার, রুপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করতে হবে।

২. ইডিএফ মেশিন যত দ্রুত সম্ভব নিবন্ধণকৃত সকল জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করতে হবে।

৩. অপরিশোধিত আকরিক সোনায় আরোপিত সিডি ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আমদানি শুল্ক শর্তসাপেক্ষে ১ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে।

৪. আংশিক পরিশোধিত সোনার সিডি ১০ শতাংশের পরিবর্তে আইআরসিধারী এবং ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের জন্য শুল্ক হার ৫ শতাংশ করতে হবে।

৫. হীরা কাটিং এবং প্রক্রিয়াজাত করণের উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমদানি করা রাফ ডায়মন্ডের নতুন শুল্ক হার নির্ধারণ করতে হবে।

৬. বৈধ পথে মসৃন হীরা আমদানিতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমদানীকৃত মসৃন হীরা ৪০ শতাংশ করা শর্তে প্রস্তাবিত শুল্ক হার নির্ধারণ করা হোক।

৭. সোনা পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ করতে হবে।

৮. সোনার অলংকার প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে আমদানি করা কাঁচামাল ও মেশিনারিজের ক্ষেত্রে সব প্রকার শুল্ক কর অব্যাহতি দেওয়াসহ ১০ বছরের জন্য কর অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।

৯. বৈধভাবে সোনার বার, সোনার অলংকার, সোনার কয়েন রপ্তানি উৎসাহিত করতে কমপক্ষে ২০ শতাংশ করার শর্তে, রপ্তানিকারকদের মোট ভ্যালু এডিশনসহ এর ৫০ শতাংশ হারে আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে।

১০. এইচ.এস কোড ভিত্তিক অস্বাভাবিক শুল্ক হার কমিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে শুল্ক হার সমন্বয়সহ এসআরও সুবিধা দিতে হবে। 

১১. মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০২২ ধারা-১২৬ক অর্থ আইন, ২০১৯ (২০১৯ সালের ১০ নং আইন)-এর ১০২ ধারাবলে, চোরাচালান প্রতিরোধ করতে গিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষসহ সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর উদ্ধার করা সোনার ২৫ শতাংশ সংস্থাগুলোর সদস্যদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হোক। 

ঢাকাবিজনেস/তারেক/এনই



আরো পড়ুন