বক্সিং ডে টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার স্যাম কনস্টাসের সঙ্গে বিরাট কোহলির মাঠের বিবাদ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ককে ইচ্ছাকৃতভাবে তরুণ এই ব্যাটারের সঙ্গে শারীরিক সংঘর্ষে জড়াতে দেখা যায়।
অস্ট্রেলিয়া টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মাত্র ১৯ বছর বয়সী কনস্টাস তার প্রথম টেস্ট ইনিংসে ঝোড়ো ৬০ রান করেন। ইনিংসের ১০তম ও ১১তম ওভারের মধ্যবর্তী বিরতিতে, কনস্টাস ও উসমান খাজা প্রান্ত বদল করার সময় কোহলি তার দিকে এগিয়ে যান এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাবেক অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক রিকি পন্টিং, যিনি সেই মুহূর্তে ধারাভাষ্যে ছিলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে বলেন, ‘কোহলি তার ডান দিকে পুরো পিচ পেরিয়ে গিয়েছেন এবং এই সংঘর্ষ ঘটানোর চেষ্টা করেছেন। আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই।’
রিপ্লেতে দেখা যায়, কোহলি তার গতিপথ সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন ছিলেন, যেখানে কনস্টাস মাথা নিচু করে তার গ্লাভস ঠিক করছিলেন।
ক্রিকেটের নিয়ম প্রণেতা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)-এর নিয়ম অনুযায়ী, ‘ইচ্ছাকৃত শারীরিক সংঘর্ষ’ লেভেল ২ অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। মাঠের আম্পায়াররা যদি এই ঘটনা রিপোর্ট করেন, তবে ম্যাচ রেফারি বিষয়টি তদন্ত করবেন।
লেভেল ২ অপরাধের শাস্তি হিসেবে তিন থেকে চার ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়ার নিয়ম রয়েছে, যার সঙ্গে রয়েছে এই শাস্তি:
* ৩ ডিমেরিট পয়েন্ট: ম্যাচ ফি’র ৫০%-১০০% জরিমানা অথবা ১ সাসপেনশন পয়েন্ট
* ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট: ২ সাসপেনশন পয়েন্ট (যা ১ টেস্ট অথবা ২ সীমিত ওভারের ম্যাচের জন্য প্রযোজ্য)
ডিমেরিট পয়েন্ট প্লেয়ারের রেকর্ডে ২৪ মাস ধরে থাকবে। উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৯ সালের পর কোহলির কোনো ডিমেরিট পয়েন্ট নেই।
যদি কোহলি চার ডিমেরিট পয়েন্ট পান, তবে তিনি সিডনিতে ৩ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া পঞ্চম টেস্টে খেলতে পারবেন না। তবে ভারতীয় দল ম্যানেজমেন্ট কিংবা কোহলি নিজে শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন।
এদিকে সাবেক আন্তর্জাতিক আম্পায়ার সাইমন টফেল ঘটনাটি নিয়ে বলেন, ‘আমরা মাঠে কোনো শারীরিক সংঘর্ষ দেখতে চাই না। এটি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তবে এটি হয়তো গুরুতর কিছু নয়।’
টফেল আরও বলেন, ‘এটি তত বড় কোনো ঘটনা নয়। আমার মনে হয়, দিনের শেষে বা লাঞ্চ বিরতিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে আমার ধারণা, এতে বড় কোনো শাস্তি হবে না।’
বক্সিং ডে টেস্টে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসি কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।