জাপান থেকে আনা ৪২০টি বিলাসবহুল গাড়ি নিলামের অভাবে গত ৫ মাস ধরে মোংলাবন্দরের বিভিন্ন শেডে পড়ে আছে। কাস্টমস হাউজ কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরনো নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে কোনো প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব না পাওয়ায় এই নিলাম বন্ধ আছে।
কাস্টমস শুল্ক আইন অনুযায়ী, আমদানি করা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ৩০ দিনের মধ্যে ছাড়িয়ে নিতে না পারলে তা নিলামে তুলতে হবে। এসব রিকন্ডিশন্ড গাড়ির মডেল অনুয়ায়ী প্রতিটি গাড়ির দাম ২০ লাখ থেকে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত। কিন্তু মোংলাবন্দরে ব্যবসায়ীদের আনা অনেক গাড়ি একবছরেও ছাড় করাতে পারেনি। এমন অবস্থায় বন্দরের বিভিন্ন শেডে নিলামযোগ্য গাড়ির জট সৃষ্টি হয়েছে। এর সংখ্যা ৪২৪টি। তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, সময়মতো নিলাম অনুষ্ঠিত হলে এর সংখ্যা কমে যেতো।
মোংলা কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘আগের নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখনো নতুন করে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়নি। এ কারণে গত পাঁচ মাস মোংলা কাস্টমসের নিলাম কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।’
নিলাম সংক্রন্তের জটিলতার অবসান হচ্ছে উল্লেখ করে মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বলেন, ‘নিলাম সংক্রান্ত জটিলতা দেখায় গত পাঁচ মাস নিলাম অনুষ্ঠিত হয়নি। এজন্য মোংলায় ৪২৪ গাড়ি নিলামে তোলা সম্ভব হয়নি। তবে চলতি সপ্তাহে চট্রগ্রামের ‘কে এম করপোরেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে। চুক্তি অনুয়ায়ী তারাই কাস্টমসের নিলামযোগ্য পণ্যের নিলামকারী প্রতিষ্ঠান হবে। এ মাসের শেষের দিকে ওই প্রতিষ্ঠান বন্দরের নিলামযোগ্য ৪২৪ গাড়িসহ পণ্য বোঝাই ১৫০ কন্টেইনার ও একটি ড্রেজার নিলামের জন্য দরপত্র আহ্বান করবে।’
মোংলা কাস্টমস হাউজ-সূত্রে জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে কাস্টমসের নিয়োগ করা প্রতিষ্ঠান আল আমিন ট্রেডার্সের নিলাম মেয়াদ শেষ হয়। এরপর নতুন করে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হলেও শেষ করা যায়নি। গত ২৩ জানুয়ারি নতুন নিলামকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তুলনামূলক কমমূল্যের কমিশন দাখিল করে। এরপর গত ২৮ মার্চ নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য আবারও দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ সময় ছয়টি প্রতিষ্ঠানে দরপত্রে অংশ নেয়। কিন্তু ছয়টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের রেট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক থাকায় তাদের নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার কুদরত আলী বলেন, ‘গত বছর মোংলা বন্দরে সাড়ে ২১ হাজার রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি হয়েছে। এ বছরের বুধবার (১০ মে) পর্যন্ত ১১ হাজার ৬০০ গাড়ি আসে। তবে এ মাসে আরও দুটি এবং আগামী মাসে আরও একটি গাড়িবাহী জাহাজ আসবে। আমদানি করা এসব গাড়ি বন্দরের ইয়ার্ড ও গোডাউনে রাখা। স্বাভাবিক নিয়মে ডেলিভারি দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষের কোনো সমস্যা নেই।’
ঢাকা বিজনেস/এনই/