২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, রবিবার
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা পাহাড়বেষ্টিত কালিয়াবাড়ি পুঞ্জি। এ পাহাড়ি এলাকায় নানা প্রজাতির বাঁশ রয়েছে। এসব বাঁশের বেত দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরি করছেন কালিয়াবাড়ি পুঞ্জির শতবর্ষী সবচন্দ্র দেববর্মা। বাঁশের বেত দিয়ে তিনি জিনিস তৈরি করে প্রায় ৬০ বছর ধরে জীবন-জীবিকা চালাচ্ছেন। এর আগে তিনি অন্য পেশায় করেছেন।
বর্তমানে এভাবে জীবন পরিচালনা করতে পেরে আনন্দিত জানিয়ে সবচন্দ্র দেববর্মা জানান, কালেঙ্গা পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর বাঁশ রয়েছে। তাই বেকার না থেকে বাঁশ সংগ্রহ করে বেত প্রস্তুত করেন। এ বেত দিয়ে জিনিস তৈরি করেন। এসব বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি বসে থাকতে রাজি নন। তাই বৃদ্ধ বয়সেও পরিশ্রমের মাধ্যমে রোজগার করতে পেরে গর্ববোধ করেন।
দেববর্মা বলেন, সরকারি সহযোগীতার পাওয়ার আশায় সময় নষ্ট না করে বাঁশের বেতের কাজে ব্যস্ত থাকি। এতে চাটাই, ওড়া, ঝুড়ি, কুলা, ডালা, খাঁচাসহ নানা সামগ্রী তৈরি করছি। এসব স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা রোজগার হয়। এছাড়া সন্তানরা নানা পেশায় কাজ করে রোজগার করছে। এসব দিয়ে পরিবার নিয়ে কোনোমতে খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি। সৎভাবে রোজগার করার আনন্দটা আলাদা।
সবচন্দ্র দেববর্মার স্ত্রী শ্রীকন্যা দেববর্মা জানান, বেঁচে থাকতে হলে বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। সামান্যতেও চলা যায়। এখানে হতাশ হয়ে লাভ কী? আমরা অল্পতে খুশি। সুখেই আছি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সবচন্দ্র দেববর্মা পরিবার নিয়ে কালিয়াবাড়িতে বসবাস করে বাঁশের বেত দিয়ে নানা জিনিস তৈরি করে বিক্রি করছেন। এসব বিক্রির লাভের টাকায় তিনি পরিবার নিয়ে চলছেন। তিনি শান্তপ্রিয় লোক। সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগীতা করলে তিনি আরও এগিয়ে যেতে পারবেন। তার সঙ্গে এ শীতে সবচন্দ্র দেববর্মাসহ শীতার্তদের শীতবস্ত্র দেওয়ার দাবি জানান তারা।
জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম আবদুল্লাহ ভূঞা বলেন, যারা বাঁশের খাঁচা বানিয়ে জীবিকা চালান, তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। তারা সমিতি গঠন করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সমিতি করলে নিয়মানুযায়ী সেই সমিতিকে নিবন্ধনের বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে। এতে প্রতিবছর আর্থিক অনুদান পাওয়ার সুযোগ থাকবে।
