১৮ মে ২০২৪, শনিবার



হাওরজুড়ে এখন ধান কাটার উৎসব

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, সুনামগঞ্জ || ২৬ এপ্রিল, ২০২৩, ০৯:০৪ এএম
হাওরজুড়ে এখন ধান কাটার উৎসব


সোনালি ধানে হাসছে সুনামগঞ্জের ছোট-বড় হাওর। তাপদাহের মধ্যেই জেলার ১২ উপজেলার সব হাওরে উৎসব মুখর পরিবেশে ধান কাটছেন কৃষকরা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে বলে আশা কৃষি অফিসের।

এদিকে, আগাম বন্যার শঙ্কায় আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত হাওরের পাকা ধান কেটে ফেলতে মাইকিং করেছে জেলা প্রশাসন। হাওর এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজার, জনবহুল স্থান ও গ্রামের মসজিদ থেকেও মাইকিং করে আহ্বান জানানো হচ্ছে। 


আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, হাওরে ২৩ এপ্রিল থেকে টানা বৃষ্টিপাত ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শুধু ওইদিনই আবহাওয়া খারাপ ছিল। তবে ২৪ এপ্রিল থেকে আবারও তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এর মধ্যেই কৃষকরা বোরো ধান হাওর থেকে কেটে বাড়ি নিয়ে আসছেন। মাড়াই করে শুকাচ্ছেন। কাছে যুক্ত হয়েছেন পরিবারের ছেলেমেয়েসহ অন্যরাও। সড়কেও ধান শুকানো ও মাড়াইয়ের কাজ করছেন অনেক কৃষক।  

সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলতি বছরে ২ লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর আনুমানিক মূল্য ৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা হয়ে গেছে। জেলার হাওরে ১ হাজার ধান কাটার মেশিন রয়েছে। ইতোমধ্যে জামালগঞ্জ, শাল্লা, ধর্মপাশা, দিরাইসহ ১২টি উপজেলার হাওরের ৬৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে।


কৃষক জামিল মিয়া জানান, এবার ধানের বাম্পার ফলন হলেও কিছু ক্ষতি হয়েছে। তবে আবহাওয়া ভালো থাকায় হাওর থেকে ধান কাটা ও মাড়াই করতে এবার সহজ হয়েছে। হাওরে এখন বোরো ধান কাটাকে কেন্দ্রে করে উৎসবে পরিণত হয়েছে। 

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ শামসুদ্দোহা বলেন, ‌‘বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি থাকলে কৃষক ধান কাটতে পারে না। হাওরের পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করছি বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি শুরু  ও পাহাড়ি ঢলের পানির আসার আগেই হাওরের ধান কাটা শেষ হবে। আসলেও বাঁধের কোনো ক্ষতি হবে না। হাওর রক্ষা বাঁধ এবার মজবুত হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মকসুদ চৌধুরী বলেন, ‘হাওরের পাকা বোরো ধান যেন ঝুঁকির মুখে না পড়ে, সেজন্য দ্রুত কৃষকদের পাকা ধান কাটার জন্য উৎসাহ দিতে মাইকিং করানো হয়েছে প্রতিটি উপজেলায়। পাশাপাশি আতঙ্কিত না হতেও বলা হচ্ছে। এদিকে ধান কাটার জন্য শ্রমিক সংকট নেই আর ১ হাজার হার্ভেস্টার মাঠে ধান কাটছে। দ্রুত গতিতে চলছে সব কাজ।’


সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ‘হাওরে সব ধান কাটার উপযুক্ত হয়েছে। আর দ্রুত ধান কাটতে আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি। হাওরে এখন গড়ে প্রতিদিন ৬ পার্সেন্ট ধান কাটা হচ্ছে আর ধান কাটা যন্ত্রের সঙ্গে শ্রমিকেরও কোনো সংকট নেই। হাওরের যে দিকেই চোখ পড়বে সে দিকেই এখন ধান কাটা মাড়াই নিয়ে কৃষকদের ব্যস্থতার চিত্র দেখা যায়। আশা করছি এবার কৃষকদের কোনো ক্ষতি হবে না।’

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন