১৮ মে ২০২৪, শনিবার



বিশেষ প্রতিবেদন
প্রিন্ট

ভারত থেকে চাল-পেঁয়াজসহ ৬ পণ্যের কোটা সুবিধা মিলবে কবে

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ২৩ মার্চ, ২০২৩, ০৩:০৩ পিএম
ভারত থেকে চাল-পেঁয়াজসহ ৬ পণ্যের কোটা সুবিধা মিলবে কবে


চাল, গম, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও চিনি আমদানিতে ভারতের কাছে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কোটা সুবিধা চায় বাংলাদেশ। এরপর কেটে গেছে আড়াই মাস।  এতদিন পরও কোটা সুবিধার ব্যাপারে ভারত থেকে আশানুরূপ কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বছরে ৬ পণ্যে মোট ৫২ লাখ ৫০ হাজার টন পণ্য আমদানি কোটা চাওয়া হয়েছে ভারতের কাছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ পণ্য আমদানিতে কোটা সুবিধা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। এর মধ্যে চাল ১৫ লাখ টন, গম ২০ লাখ টন, চিনি ১০ লাখ টন, পেঁয়াজ ৬ লাখ টন, আদা ১ লাখ টন ও রসুন ৫০ হাজার টন। চিঠিতে বলা হয়েছে, চালের কোটায় ৮ থেকে ১০ লাখ টন আমদানি করা হবে সরকারিভাবে। বাকিটা আনবে বেসরকারি খাত। আর গমের কোটায় সরকার ৫ থেকে ৭ লাখ টন আনবে। বাকিটা আসবে বেসরকারিভাবে। বাকি  ৪ পণ্যের ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কে কী পরিমাণ আমদানি করবে, তা উল্লেখ করা হয়নি।

ভারত থেকে নিত্যপণ্য আমদানিতে কোটার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ অবশ্য আরও আড়াই মাস আগে আলোচনা করেছে। গত বছরের ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ওই ছয় নিত্যপণ্য ছাড়াও ডাল আমদানিতে কোটা চেয়েছে বাংলাদেশ। তখন চালে ২০ লাখ টন, গমে ৪৫ লাখ টন, পেঁয়াজে ৭ লাখ টন, চিনিতে ১৫ লাখ টন, আদায় দেড় লাখ টন, ডালে ৩০ হাজার টন ও রসুনে ১০ হাজার টনের কোটা চাওয়া হয়েছে। 

ভারত ওই বৈঠকেই জানায়, পণ্য তারা বিক্রি করবে, কোটাও রাখতে রাজি। তবে পরিমাণটা গুরুত্বপূর্ণ। সে অনুযায়ী তারা কোন পণ্যের জন্য কী পরিমাণ কোটা লাগবে, তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে বলেছে বাংলাদেশকে। এরপরই পণ্যের চাহিদা নির্ণয় করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়।  ওই কমিটি ভারত থেকে গত ১০ বছরে পণ্য আমদানির চিত্র বিশ্লেষণ শেষে ৬ পণ্যের মোট পরিমাণ ও পণ্যওয়ারি পরিমাণ নির্ধারণ করে। আর ডাল ভারত রপ্তানি করতে পারবে না বলে ওই বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে চিঠিতে ডালের বিষয়টি পরে উল্লেখ করেনি বাংলাদেশ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রেজাউল করিম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আমদানিতে কোটা সুবিধা চাওয়া পণ্যগুলোর মধ্যে কয়েকটি পণ্যের ঘাটতি নেই। বরং যতটুকু চাহিদা থাকে, তারচেয়ে বেশি  উৎপাদন করি আমরা। যেমন চাল, চিনি, পেঁয়াজ। ভারতের কাছ থেকে আমদানিতে কোটা সুবিধা চাওয়া ছয়টি পণ্যের মধ্যে এই তিনটি পণ্য আমাদের চাহিদার তুলনায় উদ্বৃত্ত থাকে। তারপরও সরকার এসব পণ্যে কোটা সুবিধা সুবিধা চেয়েছে।’

রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘ এর মূল কারণ সরকার সবসময় প্রস্তুত থাকে, যেকোনো সংকটে যেন এসব পণ্যের ঘাটতি না হয়। সরকার যেন তাৎক্ষণিক সংকটের মোকাবিলা করতে পারে। দেশে যেন অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়। এটা নেগেটিভলি দেখার কিছু নেই। যখন অফসিজন থাকে, তখন যেন এসব পণ্যের সংকট দেখা দিতে পারে। এসব কারণে মূলত এই ৬ পণ্যের কোটা সুবিধা চেয়েছে বাংলাদেশ।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ অনুবিভাগ) নূর মো. মাহবুবুল হক ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আমরা এই ৬ পণ্যে কোটা সুবিধা চেয়েছিলাম ভারতের কাছ থেকে। ভারত আমাদের এখনো সে ব্যাপারে কোনো কিছু জানায়নি। আর কবে নাগাদ তারা এ ব্যাপারে জানাবে, তাও জানি না।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন