আর থিবস নগরের সেই দ্বাররক্ষী স্ফিংক্স খেয়ে ফেলেছে নিজেকে। হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে সমস্ত জটিল ধাঁধার গোলক। ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে সব। তুমি কি এমন ধাঁধা, সমাধান জানি না। শুধু ভ্রম প্রিয় সেই খরগোশ ছানার মতো আলোর বল দেখলে ছুটে যাই। ঘাস, লতা-পাতা আহার করি। প্রার্থনা করি, বাঁচিয়ে রাখুন, অজগরের চেরা জিহ্বা থেকে।
মূলত তা হলো মৃত্যুগুঞ্জন। মহাপ্লাবনের দিন শেষে, শরীর থেকে খসে পড়বে মাংস। পোকামাকড় স্পর্শ করবে না। আমি তোমার ভয়ে একটা ত্রিভূজাকৃতির পাথরের ভেতর লুকিয়ে পড়বো। আমাকে হত্যা করো না। জেনো, আমার ঈশ্বর তোমাকে ক্ষমা করবেন না।
তারপর স্বপ্নের ভেতরে কফিনের ছুতোরের উদ্দেশে, অপেক্ষা করো বন্ধু। পৃথিবীর শেষ কর্ম দিবসে দেখা হয়ে যাবে। আঁকো কাঠের শরীরে জলপাই ফুলের নকশা। সাপেদের মল্লযুদ্ধ সবুজ ঘাসের ভূমিতে। জানো তো, গাছেরা প্রাণহীন নয়। অনাদিকাল জেগে থাকে। যদিও এই মগ্নতার পাঠশালায় শিস দেয়, হাওয়ার শিষ্য দোয়েল। এসো, নৃত্য করি। শরীরে পাতার পোশাক, ঝনঝন বাজে। আগুনে পোড়ে হরিণের কঙ্কাল।
আমার এমন রাত্রিতে, আদি পিতা আদম এবং মাতা ঈভের কথা স্মরণে আসে। কেনো তারা ভক্ষণ করলেন সেই নিষিদ্ধ ফল। কেমন মধুময় ছিলো স্বর্গে তাহাদের দিন! জানি, তুমিও প্রলুব্ধ করবে আমাকে মৃত্যুর নিকটে যেতে। অথচ আমি দিক-চিহ্ন ভুল করে কেবল তোমার কাছে যাবো। আমার ধারালো ছুরি আমাকে তুলে নাও তোমার বুকে।
এখন আমি ভয়শূন্য দানব, অশরীরী আত্মার প্রতীক। নিজেকে ঘৃত-চন্দনের মতো করে আহুতি দেবো বলে, দাউ দাউ আগুনের ভেতর নেমে পড়েছি আর মস্তিষ্কের ভেতরে সেই ষজ্ঞের ঘোড়া পেরিয়ে যাচ্ছে ধূলা ও ধূসর প্রান্তর। তার পিপাসা রেখা জুড়ে কেবল মৃত্যু। তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সৈন্যদল। তুমি উপভোগ করো, রূপকথায় মতো যা শোনাচ্ছে, তা তোমার চেহারার মতো আলৌকিক।
জেনো, আমি সুতীব্র অন্ধকার। তোমাকে বরণ করে নেবো বলে প্রস্তুত করেছি দৈববলে বৃহৎ অট্টলিকা। আমি ইরস, আমাকে দেখতে চেয়ে, হাত থেকে ফেলে দিও না, ছুরি ও মোম। অভিশপ্ত হবে। তখন আমাকে পাবে না, আমার বিরহ গ্রাস করে নেবে তোমার চর্তুদিক।