০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে স্বামী গৌছ আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক মো. জাকির হোসেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত গৌছ আলী জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার দিনাইরটুক গ্রামের আব্দুস ছত্তারের ছেলে। এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নান্টু রায়।
দীর্ঘদিন মামলাটি চলার পর বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে গৌছ আলীর উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন বিচারক মো. জাকির হোসেন। মামলার অপর এক আসামি আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার হাছন ফাতেমাপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার বাড়িতে দোয়ারাবাজার উপজেলার দিনাইরটুক গ্রামের আব্দুস ছত্তারের ছেলে গৌছ আলী লজিং থাকতেন। এর সুবাধে মোস্তফা মিয়ার ছেলে-মেয়েদেরকে পড়াতেন তিনি। একপর্যায়ে গৌছ আলী মোস্তফা মিয়ার মেয়ে কলি বেগমকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হন। মেয়েকে গৌছ আলীর সঙ্গে বিয়ে দেন মোস্তফা। বিয়ের পর গৌছ আলী তার বাড়িতে কলি বেগমকে নিয়ে যান। কিছুদিন সংসার করার পর কলি বেগমের কাছে যৌতুক দাবি করতে শুরু করেন গৌছ আলী। বাবার বাড়ি থেকে টাকা না আনায় নির্যাতন শুরু করেন। পরে কলি বেগম তার বাবা মোস্তফা মিয়ার কাছে বিষয়টি জানান এবং তার বাবা বিভিন্ন সময়ে গৌছ আলীকে প্রায় ৫ লাখ টাকা দেন। কিন্তু এরপরেও চাহিদা না মেটায় গৌছ আলী তার স্ত্রী কলি বেগমকে আবারও নির্যাতন শুরু করেন।
আদালত সূত্র আরও জানায়, ২০০৫ সালের ৫ জুন কলি বেগমকে যৌতুক আনার জন্য আবারও বাবার বাড়ি যেতে বলেন গৌছ আলী। কলি বেগম বাবার বাড়ি না গিয়ে বাড়িতেই বসে থাকেন। তখন কলি বেগমকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাজারে চলে যান গৌছ আলী। বাজারে যাওয়ার সময় বলে যান বাড়িতে ফিরে যদি দেখেন টাকা আনতে যাননি কলি, তাহলে হত্যা করে ফেলবেন। ওইদিনই দুপুরে গৌছ আলী বাড়িতে এসে কলি বেগমকে আবারও মারধর করেন। এসময় ঘটনাস্থলেই কলি বেগমের মৃত্যু হয়। প্রথমে গৌছ আলী বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরের দিন খবর পেয়ে গৌছ আলীর বাড়িতে এসে মেয়ের লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখেন বাবা মোস্তফা। পরে পুলিশকে খবর দেন। মোস্তফা মিয়া বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
জাহাঙ্গীর/এইচ
