২২ ডিসেম্বর ২০২৪, রবিবার



সোনালি ধানে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

এইচ মাহমুদ, নরসিংদী || ০১ মে, ২০২৩, ০৭:৩৫ এএম
সোনালি ধানে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন


নরসিংদীর মাঠজুড়ে এখন সোনালি ধান। যতদূর চোখ যায় সবুজে আর সোনা রঙে ঢাকা। এমন দৃশ্য দেখে রঙিন হয়ে উঠেছে প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। প্রতিদিনই পাল্টে যাচ্ছে মাঠে থাকা ধানের চেহারা। নতুন ধানের আগমনী বার্তা যেন কৃষকের পরিবারে আনন্দের ঢেউ এনে দিয়েছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন জেলার হাজারো কৃষক। ইতোমধ্যে সোনালি এই ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন তারা। এখন প্রায় জমিতে ধানের গাছগুলো সবুজের আভা কেটে হলুদ বরণ ধারণ করেছে।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমি। আর সব জমিতে উৎপাদনের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৪৯ মেট্রিক টন। চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে নরসিংদীর সদর উপজেলায় ৮ হাজার ৫২০ হেক্টর, পলাশ উপজেলায় ৪ হাজার ২৮১ হেক্টর, শিবপুর উপজেলায় ১০ হাজার ১৬৭ হেক্টর, মনোরদী উপজেলায় ১১ হাজার ১৪৯ হেক্টর, বেলাব উপজেলায় ৫ হাজার ৮৪১ হেক্টর ও রায়পুরা ১৬ হাজার ৮৮২ হেক্টর জমি।  

সরেজমিনে জেলার চরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে  সোনালি ধান হিমেল হওয়ায় দোল খাচ্ছে। 

কৃষকরা জানান, কয়েকদিনের মধ্যেই বোরো ধান পুরোধমে কাটা ও মাড়াই শুরু হবে। অনেক জায়গায় ইতোমধ্যে কৃষিযন্ত্র ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে কিছু পাকা ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কাজ। 

দড়িগাঁও এলাকার বোরো চাষি আশাব উদ্দিন বলেন, গত বছর বোরো চাষ করে দাম ভালো পেয়েছিলাম। এবারও সেই আশায় সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছি। ইতোমধ‍্যে ধানে পাক ধরেছে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ধান কাটা শুরু করতে হবে।

একই এলাকার বোরো চাষি জয়নাল বলেন, গত মৌসুমে উফসী ও হাইব্রিড জাতের বোরো রোপণ করে ধানের ভালো ফলন পেয়েছিলাম। সেইসঙ্গে বাজার দর ভালো থাকায় মোটামুটি লাভের মুখ দেখেছিলাম। 

শুকুর আলী নামে এক বর্গা চাষি বলেন, গত বছর ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করে বেশ লাভবান হয়েছিলাম। জমি চাষাবাদ খরচ ও সারের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় এ বছর মাত্র ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি।

সোহরাব হোসেন নামে এক চাষি বলেন, এ বছর ধান কাটার লোক পাচ্ছি না। তবে যাদের পাচ্ছি তাও একবেলা জন প্রতি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা দিতে হচ্ছে। তাই আমি নিজে নিজের ধান কাটতে এসেছি।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ‌‘ধানের ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। তা-ছাড়া এ বছর কৃষকরা হাইব্রিড ও স্থানীয় প্রজাতির বোরো ধান আবাদ করেছেন। এতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনসহ বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন