১৭ জুন ২০২৪, সোমবার



পরিত্যক্ত ৭ বিমানবন্দর ‘পুনঃচালু হচ্ছে না’, তবে...

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান || ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ১১:৩২ পিএম
পরিত্যক্ত ৭ বিমানবন্দর ‘পুনঃচালু হচ্ছে না’,  তবে...


দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিত্যক্ত, অব্যবহৃত ও দখলে থাকা বিমানবন্দরগুলো দখল মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘৭ বিমানবন্দর নতুন করে চালু হওয়ার’ যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাকে ভিত্তিহীন বলছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ(বেবিচক)।  

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, দেশের পরিত্যক্ত, দখলে থাকা বিমানবন্দরগুলো উদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে এসব বিমানবন্দরের কোনোটিতেই বিমান উড্ডয়ন-অবতরণ করছে না। কয়েকটি বিমানবন্দর রয়েছে বিভিন্ন সংস্থার দখলে। কিছু কিছু বিমানবন্দরের রানওয়েতে গরু-ছাগল অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনো কোনো বিমানবন্দরে বাউন্ডারি দেয়াল কিংবা কোনো নিরাপত্তা চৌকি নেই।

বেবিচক কর্মকর্তারা বলছেন, রানওয়েতে ক্রিকেট খেলেন স্থানীয়রা। আবার কোনো কোনো রানওয়েতে ঘাস বড় গেছে। ফলে সেসব রানওয়ে দেখা যায় না। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত-পরিত্যক্ত থাকায় রানওয়ের শক্তি পেভমেন্ট ক্ল্যাসিফিকেশন নম্বর (পিসিএন ) নষ্ট হয়ে গেছে। আর সংস্কার না করায় সেখানে প্রচুর পানি জমে থাকে। তাই কোথাও কোথাও রানওয়ের পিস ঢালাই ও ব্লক ভেঙে গেছে। রানওয়েগুলো বর্তমানে যাত্রীবাহী বিমান পরিচালনায় অনুপযুক্ত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কক্সবাজার, রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশালের বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাণিজ্যিকভাবে চালু রয়েছে। বেসরকারি বিমান সংস্থা-নভোএয়ার, ইউএস বাংলা, এয়ার অ্যাস্ট্রা, ভিস্তেরা ও জাতীয় পতাকাবাহী বাংলাদেশ বিমান ঢাকা থেকে এসব গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে।

পরিত্যক্ত-দখলে থাকা ৭ বিমানবন্দর নতুন করে চালুর বিষয়ে ‘ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স’র জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) কামরুল ইসলাম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আমাদের এয়ার কানেক্টিভিটি যত বাড়বে, যাত্রীরা তত বেশি বেনিফিশিয়ারি হবে। একটি এয়ারপোর্টকে কেন্দ্র করে বিজনেস হাব তৈরি হওয়ার সুযোগ থাকে। একটি শহর তৈরি হওয়ার সুযোগ থাকে। আমাদের দেশে যেসব এয়ারপোর্ট বন্ধ রয়েছে সেগুলো চালু হলে, সেসব এলাকার মানুষ অনেক বেশি উপকৃত হবে। পাশাপাশি সারাদেশের এয়ার কানেক্টিভিটি স্মুথ হবে। এসব বিমানবন্দরগুলোতে পর্যাপ্ত রানওয়ের ব্যবস্থা করতে হবে, যেন সেফটি সিকিউরিটির জায়গা থেকে এয়ারপোর্টগুলো অপারেট করতে পারে। নতুন এয়ারপোর্টগুলো চালু হলে আমাদের মতো এয়ারলাইন্সগুলো বেনিফিটেড হবে। পাশাপাশি যাত্রী ও বিমানবন্দর অথরিটি উপকৃত হবে। দেশের অর্থনীতিতে এর পজিটিভ প্রভাব পড়বে।’

নভোএয়ার’র হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস্ মেস-বাহ উল ইসলাম ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে এসব কোনো এয়ারপোর্ট চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আর যখন চালু হবে, তখন নভো এয়ার ওখানকার অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিমান অপারেট করার সিদ্ধান্ত নেবে।’

‘পরিত্যক্ত ও দখলে থাকা ৭ বিমানবন্দর নতুন করে চালু করা’র উদ্যোগের কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান। তিনি ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে, যেসব বিমানবন্দর চালু রয়েছে, সেগুলোর মান উন্নয়ন করা।’

বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠান বিমানবন্দরগুলো দখল করে রেখেছে। আমাদের প্রথম উদ্যোগ হবে, পরিত্যক্ত ও বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের দখলে থাকা বিমানবন্দরগুলোকে দখলমুক্ত করা। এরপর এয়ারলাইন্সগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বিমানবন্দরগুলো চালু করা। দখলমুক্ত করার পর কোন বিমানবন্দরগুলোর পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে, তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।’

এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, ‘‘দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতে সব কাজ একসঙ্গে করা কঠিন। আমরা বাগেরহাট বিমানবন্দরের কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু কাজটি সম্পূর্ণ করতে পারিনি।  ‘পরিত্যক্ত ও দখলে থাকা ৭টি বিমানবন্দর নতুন করে চালু করবে বেবিচক’, যারা এই ধরনের খবর প্রকাশ করেছেন, তারা কোথায় পেলেন এই তথ্য খবর; আমার জানা নেই। শুধু অনুমানের ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের খবর প্রকাশ করা ঠিক নয়। বর্তমান সরকার দেশের রাস্তাঘাটের অনেক উন্নয়ন করেছে। এখন যেসব বিমানবন্দর চালুর চাহিদা বেশি, সেগুলোর ব্যাপারে পরে চিন্তাভাবনা করবো।’’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন