০৫ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার



যে কারণে বিশ্ববাজারে কমতে পারে জ্বালানি তেলের দাম

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ২৮ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:১০ পিএম
যে কারণে বিশ্ববাজারে কমতে পারে জ্বালানি তেলের দাম


গত শনিবার ইরানের সামরিক ও অন্যান্য অবকাঠামোর ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলা সত্ত্বেও জ্বালানি পণ্যটির সরবরাহ ব্যাহত হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষকরা বলছেন, আজ বেচাকেনা শুরু হলে জ্বালানি তেলের দাম কমে যেতে পারে। সূত্র: রয়টার্স

ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য মার্কিন নির্বাচনকে সামনে রেখে গত সপ্তাহে জ্বালানি তেলের বাজারে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছিল। 

এর প্রভাবে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মার্কিন বাজার আদর্শ ব্রেন্ট ও ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৪ শতাংশ বেড়ে যায়।

শনিবার ভোরে বেশকিছু ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান তেহরান এবং পশ্চিম ইরানের মিসাইল কারখানা ও অন্যান্য স্থাপনার ওপর হামলা চালায়। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর মধ্যে সংঘাত নতুন করে বেড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ডিজিটাল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অনিক্সের গবেষণা প্রধান হ্যারি টচিলিনগুরিয়ান বলেন, ‘ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েল কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে তা এখন পরিষ্কার হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা এখন স্বস্তির বড় নিশ্বাস ফেলতে পারেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেন মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রস্থানের পরই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি। একে সামনে রেখে ইরানে হামলার ঘটনার চেয়ে ভালো কিছু মার্কিন প্রশাসন আশা করতে পারত না।’

এদিকে ইসরায়েলি আক্রমণ প্রতিহত করার দাবি করে ইরান বলেছে, হামলায় তাদের খুব সীমিত ক্ষতি হয়েছে। 

আইজির বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, ‘ইসরায়েল জ্বালানি তেলের অবকাঠামোয় আক্রমণ করছে না। ফলে ইরানও যে এসব আক্রমণের বিরুদ্ধে তেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে না, সে সম্পর্কে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ফিউচার মার্কেটে আজ লেনদেন শুরু হলে আমরা খুব সম্ভবত “‍গুজব কিনুন, সত্য বিক্রি করুন” ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখতে পাব।’ 

অর্থাৎ কোন আশঙ্কা সত্যি হওয়ার পূর্বেই বাজারে এর প্রতিফলন পড়বে। ডব্লিউটিআইয়ের দাম আবার ব্যারেল প্রতি ৭০ ডলারে ফিরে আসতে পারে।

টচিলিনগুরিয়ানের পূর্বাভাস, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকির কারণে জ্বালানি তেলের দামে যে বাড়তি অংশ যুক্ত হয়েছিল, তা দ্রুত কমে যাবে। এতে ব্রেন্ট প্রতি ব্যারেলে ৭৪-৭৫ ডলারের দিকে ফিরে আসতে পারে।

ইউবিএসের পণ্য বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলছেন, ইসরায়েল ইরানের সাম্প্রতিক আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় সংযত ভূমিকা নিয়েছে। এতে জ্বালানি তেলের দাম সোমবার কমে যেতে পারে, কারণ এর ফলে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা কমেছে। 

তবে তিনি এও মনে করেন, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কমার কারণে দাম সামান্য কমলেও এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কারণ বর্তমান বাজারে সংঘাতের ভিত্তিতে বেশি ঝুঁকি মূল্য যুক্ত হয়নি।

এদিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের অন্যতম শীর্ষ ভোক্তা ভারতে পণ্যটির চাহিদা বছরের শেষ প্রান্তিকে প্রায় ৪ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সময়ে দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের উৎসব আয়োজন এবং বর্ষা মৌসুমের পরে কৃষিকাজ বাড়ায় চাহিদা বাড়তে পারে।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, নভেম্বর ও ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে দৈনিক ৫০-৫৫ হাজার ব্যারেল গ্যাসোলিন ও ডিজেলের চাহিদা বাড়তে পারে। অর্থাৎ এ সময়ে জ্বালানির চাহিদায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ করা যাবে। 

ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্ষার সময় পরিবহন ও নির্মাণকাজ স্থবির হওয়ার কারণে জ্বালানির ব্যবহার কম ছিল। বর্ষার পরে ভারতীয় বাজারের জ্বালানি চাহিদা আবার বাড়ছে।  



আরো পড়ুন