রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রত্যেকটি দিন শেষে সমান সমীকরণে গিয়ে দাঁড়িয়েছে দুই দলের পারফরমেন্স। তৃতীয় দিন শেষেও ক্রিকেট বোদ্ধারা একই কথা বলবেন। তবে টাইগার ভক্তদের জন্য আশার কথা হলো এখনো সমান তালে লড়ছে বাংলাদেশ। ওদিকে স্বাগতিক পাকিস্তানের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। তাদের ধারণা ছিল ৪৪৮ রানে ইনিংসে ঘোষণা করে অল্প রানেই আটকে ফেলা যাবে সফরকারীদের। কিন্তু না, সমান তালে বুক চিতিয়ে লড়ছে শান্ত বাহিনী, তারা পেয়ে যেতে পারেন লিডও।
বুধবার প্রথম দিনে ১৬ রানেই তিন উইকেট নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল সফরকারী বাংলাদেশ। কিন্তু দিন শেষে পাকিস্তান ৪ উইকেটে ১৫৮ রান তুলে বড় কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিল। দ্বিতীয় দিনে দুই সেঞ্চুরিতে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন তারা। তবে দিন শেষে বাংলাদেশের জন্য এটাই স্বস্তি যে, কোনো উইকেট না হারিয়েই তারা তুলেছিল ২৭ রান। আর তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩১৬। এখনো তারা পিছিয়ে ১৩২ রানে। তবে হাতে আছে েএখনো ৫ উইকেট। ৯২ ওভারে ওই রান করেছে সফরকারীরা।
অনেকেরই আশঙ্কা ছিল, ফলো অনে পড়তে পারে বাংলাদেশ। ৫ উইকেট হাতে; ১৩২ রানে পিছিয়ে। এটাকে অবশ্যই মন্দ বলার সুযোগ নেই। তবে মন্দ কেবল সাদমান অনিকের ভাগ্য। দারুণ ছন্দে থাকা বেচারা সাদমান ৯৩ রানে বোল্ড হয়ে যান। মোহাম্মদ আলীর বলটি কিছুটা ইন সুইং করে ব্যাট আর প্যাডের মাঝখান দিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। ওই ভুলটি ছাড়া ভালোই খেলছিলেন তিনি। এর আগে একবার আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেচেঁছিলেন।
রিভিউ নিয়ে অবশ্য একটা সুখবর দেওয়া যায় টাইগার ভক্তদের। টেস্টের প্রতি ইনিংসে তিনটি করে রিভিউ পায় প্রতিটি দল। পাকিস্তান ৯২ ওভারের মধ্যে তাদের সবকটি রিভিউ হারিয়ে ফেলেছে। যার শেষটি ছিল দিনের শেষ বলে, মুশফিকের বিপক্ষে। তাতে দেখা যায় বল আগে ব্যাটে লেগেছিল। ফলে এলবিডব্লিউ আবেদন করে রিভিউ লস হয়। ওদিকে বাংলাদেশের সবকটি রিভিউ এখনো অবশিষ্ট রয়ে গেছে।
একটা আশার কথা না বললেই নয়। অতীতে দেখা গেছে হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়েছে ব্যাটিং অর্ডার। কিন্তু শুক্রবারে তেমন কিছু হয়নি। ৫ উইকেট গেলেও কমবেশি রান পেয়েছে সবাই। ৩১ রানে পড়েছে প্রথম ইউকেট। জাকির হাসান করতে পেরেছিলেন ১২ রান। ৫৩ রানে আউট হন শান্ত, তিনি করতে পারেন ১৬ রান। ব্যক্তিগত অর্ধশত পূর্ন করেই আউট মমিনুল, দলের রান তখন ১৪৭। সাদমান এবং মুশফিকের জুটি ছিল দারুণ ছন্দময়। রানও এসেছে, আবার তারা খেলছিলেন দারুণ। ১৯৯ রানে সাদমান চলে যান ৯৩ রান করে। ভক্তরা অপেক্ষায় ছিলেন তার সেঞ্চুরি দেখার।
দলীয় ২১৮ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সাকিব আল হাসান, করতে পেরেছেন ১৫ রান। দিন শেষে মুশফিক ৫৫ আর লিটন ৫২ রানে অপরাজিত। হাতে ৫ উইকেট নিয়ে চতুর্থ দিন ব্যাট করতে নামবে বাংলাদেশ। যদিও এখন ড্রেসিং রুমে থাকাদের মধ্যে ব্যাটসম্যান ধরা যায় কেবল মিরাজকে।
পাকিস্তানীদের দুই সেঞ্চুরির জবাবে বাংলাদেশের অন্তত একটা সেঞ্চুরি প্রয়োজন ছিল। তবে এখন যে সমীকরণে আছে তাতে একটি, দুটি সেঞ্চুরি পেয়েও যেতে পারেন টাইগার ব্যাটাররা। তবে না পেলেও সমস্যা নেই। বাকি ব্যাটসম্যানেরা সবাই রান পেলে লিড নেয়া সম্ভব। তাহলে জয় না পেলেও অন্তত ড্রয়ের আশা থাকবে।