২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার



লাইফ স্টাইল
প্রিন্ট

বিষণ্ণতা থেকে মুক্তির প্রথম পদক্ষেপ

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ০১ জুন, ২০২৪, ১০:০৬ এএম
বিষণ্ণতা থেকে মুক্তির প্রথম পদক্ষেপ


দৈনন্দিন জীবনে ভালো-মন্দ চড়াই উতরাই সব মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। তবে অনেক সময় স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় দীর্ঘদিন বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন। দেখা যায়, এতে করে মনোযোগ দিয়ে কাজ করা বেশ কঠিন হয়ে যায়, আর এ থেকেই সমস্যার শুরু।

অনেকেই বুঝতে পারেন না তারা বিষণ্ণতায় ভুগছেন নাকি কোনো বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্নতা থেকে এমন হচ্ছে। সঠিক সময়ে বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে। বিষণ্ণতা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং লাইফস্প্রিং এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. সাঈদুল আশরাফ কুশল।

বিষণ্ণতা নিয়ে বলতে গিয়ে ডা. সাঈদুল আশরাফ কুশল বলেন, অনেকেই আছেন যারা বিষণ্ণতা কিংবা ডিপ্রেশনে ভুগলেও সেটা বুঝতে পারেন না। আবার অনেকেই আছেন যারা মন খারাপ করাকেও দুশ্চিন্তা বলে ভুল করেন। তাই প্রথমে জেনে নিতে হবে বিষণ্ণতা আসলে কী। বিষণ্ণতা মানুষের মনের একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। একজন মানুষ বিভিন্ন কারণেই বিষণ্ণ হতে পারেন। এটি বিভিন্ন মাত্রায় হতে পারে। একটানা ১৪ দিন মন খারাপ লাগলে সেটাকে বিষণ্ণতার লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

যে লক্ষণগুলো বিষণ্ণতা চিহ্ন: কুশল বলেন, বিষণ্ণতার প্রধান তিনটি লক্ষণ উল্লেখ আছে। এগুলো কোনো ব্যক্তির মধ্যে টানা দুই সপ্তাহ বা তারচেয়ে বেশি সময় দেখা গেলে সেটি বিষণ্ণতা হতে পারে। আর এই লক্ষণগুলো মোটেই হালকাভাবে নেয়ার বিষয় নয়।

সব সময় নিজেকে অসহায় ভাবা : বিভিন্ন কারণেই একজন মানুষের অসহায় মনে হতে পারে, আর এটা খুব স্বাভাবিক। তবে দুই সপ্তাহের বেশি এই অনুভূতি দেখা দিলে অবহেলা করা যাবে না। দীর্ঘ দিন বা মাস নিজেকে হেল্পলেস বা অসহায় মনে হওয়া বিষণ্ণতার একটি লক্ষণ। নিজের পরিবারের কেউ যদি এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যায় তাহলে তার সঙ্গে কথা বলুন। আপনি নিজে যদি এমন অনুভব করেন তবে সেদিকে নজর দিতে হবে।

হতাশা : জীবনে চলার পথে হতাশা খুব স্বাভাবিক বিষয়। তবে যখন হতাশার মাত্রা বাড়তেই থাকবে এবং সেটা যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তখন বিষণ্ণতার লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা।

মনোযোগের অভাব : আমাদের মনোযোগ সবসময় একরকম থাকে না। তবে আপনি যদি কোনো কাজে মনোযোগ দিতে না পারেন অথবা ঠিকভাবে কিছু করতে না পারেন তাহলে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয়া জরুরি। ১৪ দিনের বেশি একটানা কাজের প্রতি অনীহা বা অমনোযোগ বিষণ্ণতার অন্যতম লক্ষণ। বিষণ্ণতার লক্ষণগুলো দেখা দিলে একটু ভাবতে হবে। তবে এতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই, তবে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব না দিলে পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।

লক্ষণগুলোর উপস্থিতি দেখা দিলে কী করতে হবে জানতে চাইলে ডা. সাঈদুল আশরাফ কুশল বলেন, নিজে যখন বুঝতে পারবেন আপনার মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বসা দরকার, তখন সময় নষ্ট না করাই ভালো। বিষণ্ণতার কারণে নাজেহাল হয়ে গেলেও অনেকেই চেকআপ করাতে লজ্জা পান। এখানে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। চেকআপ করার পর অনেক সময় ডিপ্রেশনের বদলে বাইপোলার ধরা পরে, ওসিডি ধরা পড়ে আবার অনেক সময় কিছুই পাওয়া না। কিন্তু সমস্যা নিজে বসে থাকলেই বিপদ।

অনেকেই গুগলে সার্চ দিয়ে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা যাচাই করেন। আবার কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ করেন, আসলে এসব করে আপনার মনের সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে না।  একেক জন ব্যক্তি একেক রকম। তাই লক্ষণ দেখেই আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা কী সেটা জানা যাবে না। ডিপ্রেশনে ভুগছেন কিনা আর ভুগলেও সেটার মাত্রা কী এই বিষয়ে একজন দক্ষ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।



আরো পড়ুন