মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরানো খুব স্বাভাবিক বিষয়। অল্পসংখ্যক মানুষ মাথা ঘোরানোর সমস্যা অনুভব। করেন। মাথা ঘোরা বা ভার্টিগো একটি পরিচিত সমস্যা। স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের নিউরোমেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. হিমেল বিশ্বাস এ বিষয়ে সম্প্রতি দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানান, মাথা ঘোরানো মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে, ট্রু ভার্টিগো এবং সিউডো বা ফলস ভার্টিগো।
ট্রু ভার্টিগো: চারদিকে সবকিছু ঘুরছে, এমনটা মনে হলে, ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেলে বা পড়ার ভাব হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে ট্রু ভার্টিগো বলে।
যেসব কারণে ট্রু ভার্টিগো হয়
১. মস্তিষ্কের রোগ যেমন স্ট্রোক, ব্রেন টিউমার, মস্তিষ্কে সংক্রমণ হলে।
২. শরীরে প্রয়োজনীয় কোনো লবণের পরিমাণ কমে যাওয়া বা কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও হতে পারে।
৩. কানের রোগ যেমন কানে কম শোনা, কানে পুঁজ বা পানি যাওয়া, অন্তঃকর্ণ বা মধ্যকর্ণের প্রদাহ।
সিউডো বা ফলস ভার্টিগো: রোগী মনে করেন মাথার ভেতর ঘুরছে। মনে হচ্ছে পড়ে যাবেন, ভারসাম্যহীন হয়ে যাবেন। কিন্তু আসলে মাথা ঘোরে না। সিউডো ভার্টিগো বেশি দেখা যায় নারীদের মধ্যে।
সিউডো ভার্টিগোর কারণ
১. হতাশা।
২. দুশ্চিন্তা।
৩. অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অস্থিরতা।
৪. অতিরিক্ত কাজের চাপ।
অনেক সময় বসা থেকে দাঁড়াতে গেলেও মাথা ঘোরায়, আবার অনেক সময় বসা থেকে শোয়া, শোয়া থেকে বসা, এপাশ-ওপাশ করতে গেলে অথবা বসা থেকে দাঁড়াতে গেলেও মাথা ঘোরায়। একে বলে বিনাইন প্যারোক্সিসমাল পজিশনাল ভার্টিগো। আকস্মিক মাথা ঘোরা স্ট্রোকের একটি লক্ষণ হতে পারে। তবে এর সঙ্গে অন্যান্য লক্ষণ আছে কি না, তা খেয়াল করতে হবে।
স্ট্রোকের লক্ষণ
১. মুখ একদিকে বেঁকে যাওয়া।
২. প্রচণ্ড মাথাব্যথা
৩. মাথা ঘোরানোর সঙ্গে বমি।
৪. ভারসাম্য না রাখতে পারা বা পড়ে যাওয়া।
৫. শরীরের যেকোনো এক পাশ দুর্বল হয়ে যাওয়া বা শক্তি হারানো।
৭. খাবার গিলতে না পারা বা গিলতে গেলে শ্বাসকষ্ট বা কাশি শুরু হওয়া।
ডা. হিমেল বিশ্বাস বলেন, শুধু মাথা ঘোরা মানেই যে স্ট্রোক এমনটা নয়। তবে এটি স্ট্রোকের একটা উপসর্গ হতে পারে। তাই মাথা ঘোরানোর কারণ যেটাই হোক, ওপরের লক্ষণগুলো থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।