২৯ জুন ২০২৪, শনিবার



লাইফ স্টাইল
প্রিন্ট

সপ্তাহে ৩ দিন ছুটিতে উৎপাদন বাড়ে

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৪:৩১ পিএম
সপ্তাহে ৩ দিন ছুটিতে উৎপাদন বাড়ে


বাংলাদেশে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার অফিস বলতে সপ্তাহের ৬ দিন কাজ, ১দিন ছুটি। আর সরকারি কার্যালয়সহ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ চলে সপ্তাহে ৫ দিন। অর্থাৎ, সপ্তাহে ছুটি ২ দিন। বেসরকারি খাতের কর্মীদের কাছে সপ্তাহে ২ দিন ছুটি স্বপ্নের মতো।

এই যখন বাস্তবতা, তখন বিশ্বের অনেক প্রযুক্তি সংস্থায় কর্মীদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে সপ্তাহে ৩ দিন। এই হিসেবে কাজ হচ্ছে সপ্তাহে ৪ দিন। কর্মীদের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা বাড়াতে বিশ্বের অনেক স্থানেই এমন নিয়ম চালু হয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের অনেক দেশেই কর্মীদের কাজের সময় সপ্তাহে ৪ দিন। দেখা গেছে, ইউরোপের যেসব দেশে কাজের সময় সবচেয়ে কম, সেখানেই কর্মীদের উৎপাদনশীলতা সবচেয়ে বেশি। জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে কাজের সময় সবচেয়ে কম। তাই এই দুটি দেশেই কর্মীদের উৎপাদনশীলতা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া, মাইক্রোসফটের জাপান কার্যালয় যখন সপ্তাহে ৪ দিন কাজ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালু করলো, তখন উৎপাদনশীলতা বেড়ে গেলো ৪০ শতাংশ।

ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালে কর্মঘণ্টার এই সংস্কৃতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। মহামারির পর অনেকেই এখন পূর্ণকালীন কাজ করতে চান না। পাইকারি হারে চাকরি ছাড়ছেন অনেকে। এই পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি চার দিনের কর্মসপ্তাহ নিয়ে পাইলট প্রকল্প করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ৭০টি কোম্পানি তাদের সাড়ে ৩ হাজার কর্মীর সাপ্তাহিক কাজের সময় ২০ শতাংশ কমিয়েছে, প্রায় ১০০ ভাগ ক্ষেত্রে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বেড়েছে। ৮৮ শতাংশ কোম্পানি ইতোমধ্যে বলেছে, তারা পাইলট প্রকল্পের পরও এই ধারা বজায় রাখবে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও কিছু প্রযুক্তি কোম্পানিতে চার দিনের কাজের রীতি চালু হয়েছে। বৈশ্বিক সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা টিএসি সিকিউরিটির কর্মীরা প্রতি সপ্তাহে সোম থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাজ করেন। আর শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত টানা ছুটি কাটান। কয়েক বছর ধরে এ নিয়মেই চলছে অফিস।

কবি বলেছেন, ‘বিশ্রাম কাজের অঙ্গ একসঙ্গে গাঁথা/নয়নের অংশ যেমন নয়নের পাতা।’ কাজের ফাঁকে বিশ্রাম মানুষের মস্তিষ্ক সচল রাখে। আর কর্মঘণ্টা কম হলে কর্মীদের কাজের আগ্রহ বাড়ে, সঙ্গে উৎপাদনশীলতা। মানুষ এখন পরিবারকে প্রাধান্য দিতে চায় বেশি। রাখতে চায় কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য। আগের মতো ব্যক্তিগত জীবন বিসর্জন দিয়ে কর্মজীবনকে প্রাধান্য দিতে চায় না। আর মানুষ এখন সন্তান লালন-পালনের বিষয়ে অনেক সচেতন। কোভিড মহামারির পর পরিবর্তন এসেছে সবার জীবনে। মহামারির বদৌলতে পরিবারকে সময় দেওয়ার গুরুত্ব বুঝেছে সবাই।  

ব্যক্তিগত জীবনে মানুষ অসুখী হলে  কাজে উৎপাদনশীল হয় না। আর তাই মানুষের প্রয়োজন একটু স্বস্তি। এক্ষেত্রে, সপ্তাহে ৪ দিন কাজের রীতি ফলপ্রসূ হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়াতে খুব শিগগিরই আমাদের দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে ৪দিন কাজের রীতি গড়ে উঠুক,এই প্রত্যাশা।

ঢাকা বিজনেস/এন/



আরো পড়ুন