এক. জনৈক পাঠিকার প্রতি
আলোর আধিপত্য বিস্তারে চাঁদের আঁধার প্রিয়
হীরের যেমন আধার আয়োজন—
যুবতীর অনামিকা, জঙ্ঘা বা উন্মু্খ গ্রীবায়।
ঈশ্বরই যদি মুখাপেক্ষী—
নারী-পুরুষ, বৃহন্নলার অর্চনা-স্তুতির;
কবি সে কি অনন্বয়ী ?
দুই. সম্ভাষণ
গুড মর্নিংয়ের রেওয়াজ দিয়ে
রোজ সকালটা শুরু।
হাই, হ্যালো, বাই—কাইফা হালুকা—বলেই
কাটে দিনটা পুরো।
অথচ তার বদলে আমাদের দিনের শুরুটা
হতে পারতো—সুপ্রভাত!
এই শোন, কেমন আছিস?
যাই রে...
মিষ্টি সম্ভাষণে বাড়ানো সে হাত।
দুই. পরকীয়া
জলে আকাশের যে ছায়া পড়ে, সে তার অবয়ব।
উঁচু কোন মাটিকেই বলা যায় না জমি—
সেটা পর্বত, টিলা বা ঢিবি;
নারীবক্ষ মাংস নয় যেমন।
জলে বৃষ্টির হানা— প্রপাত; নাকি জল-সঙ্গম?
রোদের সংস্রবে পোড়ে যদি নদীর পলি—
সেও নয় পরকীয়া।
তিন. প্রাগৈতিহাসিক
গুহানিবাসী নিভাষী মানুষের
একমাত্র পরিচয়—মানবতা
একমাত্র পরিধেয়—নগ্নতা
একমাত্র ধর্ম ছিল—যৌনতা।
চার. অরণ্যের আড়তে বিশুদ্ধ ফর্মালিন
অরণ্যের আড়তে এখন ফর্মালিন মজুদ
পতঙ্গভুক পাখিরা তাই ভীষণ অনাবাসিক।
বৃষ্টির প্রতি ফোঁটা জল খরার দখলে
মেঘপ্রিয় চাতকেরা ব্যস্ত আকাশের সীমানা নির্ধারণে
প্রতি টন জোছনা কী দামে নিলাম নেবে, বণিক?
পাঁচ. ফটোসেশন
গনগনে সূর্যের সতেজ ঘ্রাণ ফিকে হলে
বিবর্ণ দেয়ালের পলেস্তরায় হাঁটু মুড়ে বসে
প্রলম্বিত ছায়ারা।
গোধূলির বুকখোলা ফ্রকে রাত নামে
দুঃসাহসিক বন্যতায়
ততোধিক ব্যস্ত কামার্ত গোলাপের মনোরঞ্জনার্থে
উদ্ভট কস্টিউমে রাতনিবাসী উদ্দাম যুবতীরা।
ভোরের প্রতীক্ষায় থেকে থেকে ক্লান্ত
প্রসাধনপ্রিয় পঙ্গপাল।
বর্ষণান্ত নির্জন সড়কের জেব্রা-ক্রসিংয়ে—
জেব্রা নয়; পার হয় মানুষেরাই।