২৬ জুন ২০২৪, বুধবার



‘বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে আছি’

আনোয়ার হোসেন বুলু, হিলি (দিনাজপুর) || ২৩ জানুয়ারী, ২০২৩, ০৬:৩১ এএম
‘বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে আছি’


‘আগের মতো আর কাজকাম নাই। লোহা, কয়লার দাম বেশি। তাই আমাদের দিনকাল  ভালো যাচ্ছে না। তারপরও বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে আছি। বর্তমান যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনো মতে সংসার চলে। সঞ্চয় করার মতো অবস্থা নেই।’ ঢাকা বিজনেসের সঙ্গে আলাপকালে এভাবে নিজেদের পেশা টিকিয়ে রাখা নিয়ে বলছিলেন দিনাজপুরের হিলি বাজারের খাদ্যগুদাম মোড়ের কামার কিষাণ কুমার।’

এই কামার বলেন, ‘আমার বাবাও কামারের কাজ করে জীবিকা চালাতেন। বাবার হাত ধরেই এই পেশায় জড়িয়ে পড়ি। আগে আয় রোজগার বেশ ভালোই হতো। এখন তেমন হয় না। আগে ১০০০ টাকার ওপরে আয় হতো। এখন ৫০০ টাকাও হয় না।’

হিলি বড় মসজিদ রোডে কামারের কাজ করা নারায়ন চন্দ্র বলেন, ‘আমি প্রতিহাট বারে (রোববার ও বৃহস্পতিবার) এখানে বসে কাজ করি। পুরনো দা-বটি-চাকু শান দেই। এছাড়া প্রতিদিন আশেপাশের হাটগুলোতে যাই। কিন্তু আগের মতো মানুষ আর দা-বটি-চাকু ধার করাতে আসে না।’ 

নারায়ণ চন্দ্র বলেন, ‘এখন অনেকে নতুন দা, বটি, চাকু কেনেন। তাই আমাদের কাজ কাম কমে গেছে। এখনো অনেকে লোহা নিয়ে আসেন নতুন দা-বটি-চাকু-তৈরি করতে। আসি সনাতন পদ্ধতিতে লোহাকে আগুনে পুড়িয়ে, পিটিয়ে ক্রেতাদের চাহিদা মতো জিনিসপত্র তৈরি করে দেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে কয়লা-লোহার দাম বেশি হওয়ায় এই পেশায় টিকে থাকায় দুস্কর হয়ে পড়েছে। সরকার যদি আমাদের স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে এই পেশাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো।’

হাকিমপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. মইনুল হক ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘এই পেশার সঙ্গে জড়িত কাউকে একক ভাবে ঋন দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে তারা যদি সমিতি গঠন করে আমাদের কাছে সঞ্চয় জমা রাখে, সেক্ষেত্রে তাদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’ 

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন