জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে শান্তি পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শান্তি প্রতিষ্ঠায় কয়েকটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য দেশীয় বা আন্তজার্তিক পর্যায়ের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক’। প্রতি দুই বছর পরপর এই পদক দেওয়া হবে। প্রতিবার প্রধানত একজনকে তা দেওয়া হবে। সোমবার (২০ মে) ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শান্তি পদক নীতিমালা-২০২৪’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
নীতিমালা অনুযায়ী এই পদকের অর্থ মূল্য হবে ১ লাখ মার্কিন ডলার। এর সঙ্গে থাকবে ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক ও একটি সনদ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, এ বছরই এই পদক দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে। আগামী বছর থেকে তা দেওয়া শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পরপর ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে এই পদকের জন্য মনোনীত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করা হবে। তারপর ২৩ মে বা কাছাকাছি সময়ে সেই পুরস্কার প্রদান করা হবে। ২৩ মে দেওয়ার কারণ হলো ওই তারিখে বঙ্গবন্ধু জুলিও কুরি পদক পেয়েছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখন নীতিমালা দিয়ে এই কাজটি শুরু করা হবে। তবে মন্ত্রিসভা পরামর্শ দিয়েছে এ বিষয়ে যেন আইন করা হয়। আইনের মধ্যে একটি তহবিল করতে বলা হয়েছে। যে তহবিলে সরকার বা বাইরের যে কেউ অনুদান দিতে পারবেন। পরবর্তীতে সেই অনুদানের টাকা থেকেই পদকের ব্যয়ভার বহন করা হবে। তবে সেটি না হওয়া পর্যন্ত সরকার এর ব্যয়ভার বহন করবে।
কারা এই পদকের জন্য প্রস্তাব করতে পারবেন, জুরিবোর্ড কিভাবে হবে সেসব বিষয়ে নীতিমালায় ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো ব্যক্তি তার নিজের নাম প্রস্তাব করতে পারবেন না।
মাহবুব হোসেন বলেন, বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২৪’র খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের বেতন কত হবে তা নির্ধারণ করে আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, সিইসি’র বেতন হবে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। আর অন্যান্য কমিশনারদের বেতন হবে ৯৫ হাজার টাকা। এই বেতনের পাশাপাশি ৫০ শতাংশ বিশেষ ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাও পাবেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ বিষয়ে বর্তমানে যে আইনটি আছে সেটি ১৯৮৩ সালের। কিন্তু সামরিক শাসনামলের আইনগুলো পরিবর্তনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। তারই আলোকে এটি (প্রস্তাবিত আইন) করা হয়েছে। এতে মূলত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের সুযোগ-সুবিধা ও বেতনভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। মূলত আগের আইনকেই অনুসরণ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সিইসি আপিল বিভাগের বিচারপতির সমান বেতন-ভাতাদি পাবেন। আর নির্বাচন কমিশনারেরা হাইকোর্টের বিচারপতিদের সমান বেতন-ভাতাদি পাবেন। প্রস্তাবিত আইনে সেটি না লিখে করা হয়েছে সিইসি প্রতি মাসে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা বেতন পাবেন। আর নির্বাচন কমিশনার পাবেন ৯৫ টাকা। আর তারা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ বিশেষ ভাতা পাবেন। এ ছাড়াও উৎসব ভাতা, বাংলা নববর্ষের ভাতা, আবাসন, যানবাহন সুবিধাসহ আরও কিছু সুবিধা পাবেন। মূলত আইনের ভাষাটি পরিবর্তন করা হয়েছে।