০৫ নভেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার



নলকূপে বেড়া দিয়ে সেচ বন্ধ, বিপাকে শতাধিক কৃষক

তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধা || ২১ জানুয়ারী, ২০২৩, ১২:০১ পিএম
নলকূপে বেড়া দিয়ে সেচ বন্ধ, বিপাকে শতাধিক কৃষক


গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে একটি গভীর নলকূপের চারদিকে বেড়া দিয়ে সেচ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নলকূপটির অপারেটর আব্দুল সালাম আকন্দের সঙ্গে শত্রুতার জেরে বন্ধ করা হয়েছে বলে শহিদুল ইসলাম ডন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ফলে চলতি মৌসুমে এই নলকূপের আওতায় প্রায় ১৩০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। অভিযুক্ত বলছেন, ‘আমার জায়গায় আমি বেড়া দিয়েছি। সেচ চলবে কিনা সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।’  

সরেজমিনে গিয়ে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর এলাকায় দেখা যায়, গভীর নলকূপটির চারদিকে টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করার চিত্র। এ সময় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। 

জানা যায়, কৃষকদের আত্ননির্ভশীল করার লক্ষ্যে সাদুল্লাপুর উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গোপালপুর মৌজাস্থ সরকারি সম্পত্তিতে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। এতে অপারেটর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন গোপালপুর গ্রামের মৃত তছির উদ্দিন আকন্দের ছেলে আব্দুল সালাম আকন্দ। এরপর কৃষকদের ধান আবাদে কয়েক বছর ধরে সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। এই নলকূপের সেচ নিয়ে শতাধিক কৃষক অধিক ধান ঘরে তুলে লাভবান হচ্ছেন। 

কৃষকরা জানান, নলকূপটি ঘেঁষে একই গ্রামের মৃত খেতাব উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম ডনের জমি রয়েছে। এরই মধ্যে সালাম আকন্দের সঙ্গে শত্রুতার জেরে গভীর নলকূপটির চারদিকে টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেন শহিদুল। এ কারণে আটকে গেছে সেচ কার্যক্রম। ফলে বিপাকে পড়েছেন অপারেটর সালামসহ শতাধিক কৃষক। ইতোমধ্যে বোরো আবাদের জন্য কৃষকরা প্রায় ১৩০ বিঘা জমি প্রস্তুত করলেও হঠাৎ সেচ কার্যক্রম বন্ধ হওয়া থমকে গেছে চারা রোপণের কাজ। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তারা। 

স্থানীয় কৃষক মোজাহার মিয়া, আবুল হোসেন ও আশরাফ আলী বলেন, ‘ওই নলকূপটি স্থাপনের পর থেকে এখানকার শত শত কৃষক তাদের বোরো জমিতে সেচ দিয়ে অধিক ফলন ঘরে তুলতে পেরেছেন। এতে করে অনেকটাই লাভবান হচ্ছেন। এ বছরেও বোরো আবাদের জন্য জমি প্রস্তুতসহ চারা উৎপাদন করা হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে শহিদুল ইসলাম ডন নলকূপের চারপাশে বেড়া দিয়ে সেচ কার্যক্রম জোরপূর্বক বন্ধ করে দিয়েছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বোরো আবাদ করতে না পারায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে।’

  এ বিষয়ে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম ডন বলেন, ‘স্থাপিত ওই গভীর নলকূপের জায়গাসহ পাশের জমি আমার। তাই আমার জায়গায় আমি ঘিরা (বেড়া) দিয়েছি। এতে করে সেচ কার্যক্রম চলবে কিনা সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।’ 

গভীর নলকূপটির অপারেটর আব্দুল সালাম আকন্দ বলেন, ‘নলকূপের ২ শতক জায়গা সরকারের। কৃষকদের স্বার্থে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সেখানে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। আর বেশ কিছুদিন ধরে শহিদুল ইসলাম ডনের সঙ্গে আমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এরই জেরে নলকূপটির চারপাশে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে কৃষকের জমিতে সেচ দিতে পারছি না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন কৃষকরা।’ 

এ ব্যাপারে সাদুল্লাপুর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, ‘নলকূপটি বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’      

ঢাকা বিজনেস/এইচ



আরো পড়ুন