১৯ মে ২০২৪, রবিবার



সালমান শাহকে হারানোর ২৭ বছর

বিনোদন ডেস্ক || ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১০:০৯ এএম
সালমান শাহকে হারানোর ২৭ বছর


জনপ্রিয় চলচ্চিত্রশিল্পী সালমান শাহের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে তিনি পাড়ি জমান অনন্তলোকে। সালমান শাহ বিদায় নিয়েছেন ২৭ বছর হলো। তার প্রসঙ্গ এলে এখনো বলা হয়, ‘বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সালমান শাহের শূন্যস্থানটি আজও কেউ পূরণ করতে পারেনি।’ আজও বর্তমান হয়ে আছেন অগণিত ভক্তের হৃদয়ে। এ জনপ্রিয়তা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে।

তার মূল নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। চলচ্চিত্রে এসে নাম নেন সালমান শাহ। ১৯৭০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। তিনি পরিবারের বড় ছেলে।

সালমান শাহ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট বিয়ে করেন। তার স্ত্রীর নাম সামিরা। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন। কিন্তু সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ে তিনি এখনও এভারগ্রিন ওয়ান্ডারবয় সালমান শাহ।

তার মৃত্যুতে সমগ্র চলচ্চিত্রশিল্পে শোক নেমে আসে। শোক সইতে না পেরে অনেক ভক্ত আত্মাহুতির পথও বেছে নিয়েছিলেন। অনেক উত্থানপতনের মধ্য দিয়ে গেছে বাংলা চলচ্চিত্রশিল্প। এর সঙ্গে অনেকে সালমানের মৃত্যুকে মিলিয়ে দেখেন। তাই আজও নতুন কোনো শিল্পীর কথা উঠলে স্বাভাবিকভাবেই উদাহরণ হিসেবে চলে আসে সালমান শাহের নাম। তার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ছবি করা নায়িকা শাবনূর আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘সালমান বেঁচে থাকলে আমরা দুজনে উত্তম-সুচিত্রার মতো হতে পারতাম।’

আজও নতুন কোনো পরিচালক সালমান শাহ অভিনীত ছবির রিমেক করার উদ্যোগ নিলে প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে, অভিনয় করবেন কে? উত্তর পাওয়ার পরের প্রশ্ন, তিনি কি পারবেন সালমানের মতো করতে?

মাত্র ৪ বছরের চলচ্চিত্রজীবনে সালমান শাহ খুব বেশি ছবিতে অভিনয় না করলেও যতটা করেছেন, মন দিয়ে করেছেন। দর্শকের জন্য করেছেন। তাই তো দর্শক আজও তাকে ভুলতে পারেননি। আজও সালমান যেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত সেখানে তার ভক্তরা নীরবে চোখের জল ফেলেন। আজও টেলিভিশনের পর্দায় তার অভিনীত ছবি প্রদর্শন হলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন দর্শক। আজও নতুন ছেলেরা সিনেমায় আসার স্বপ্ন দেখে সালমানের জন্য। এখানেই সালমান অনন্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বী ও চিরস্মরণীয়।

১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার চলচ্চিত্রে আগমন। প্রথম ছবিতেই সারা দেশের মানুষের মন জয় করে নিলেন অভিনয়, ব্যক্তিত্ব আর সুদর্শন চেহারা দিয়ে।

স্বল্পসময়ের ক্যারিয়ারে সালমান শাহ ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেন। প্রায় প্রতিটি সিনেমা ব্যবসাসফল ছিল। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে কেয়ামত থেকে কেয়ামত, তুমি আমার, অন্তরে অন্তরে, সুজন সখী, বিক্ষোভ, স্নেহ, প্রেমযুদ্ধ, কন্যাদান, দেনমোহর, স্বপ্নের ঠিকানা, আঞ্জুমান, মহামিলন, আশা ভালোবাসা, বিচার হবে, এইঘর এই সংসার, প্রিয়জন, তোমাকে চাই, স্বপ্নের পৃথিবী, সত্যের মৃত্যু নেই, জীবন সংসার, মায়ের অধিকার, চাওয়া থেকে পাওয়া, প্রেম পিয়াসী, স্বপ্নের নায়ক, শুধু তুমি, আনন্দ অশ্রু উল্লেখযোগ্য।

এসব সিনেমায় তার নায়িকা ছিলেন মৌসুমী, শাবনুর, লিমা, শাবনাজ, বৃষ্টি, শাহনাজ, শ্যামা প্রমুখ। কেয়ামত থেকে কেয়ামত সিনেমায় সালমানের সঙ্গে মৌসুমীর অভিনয় দর্শকের মনে আজও দাগ কাটে। এ জুটি পরে অন্তরে অন্তরে, স্নেহ, দেনমোহর ছবিতে কাজ করেছেন। তবে সালমান শাহ অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন শাবনূরের সঙ্গে। শাবনূরের সঙ্গে তার জুটিবদ্ধ সিনেমার সংখ্যাও বেশি। বলা হয়, সালমান-শাবনূরের জুটির মতো জনপ্রিয়তা পায়নি আর কোনো জুটি। আজও এ জুটির গান, বিভিন্ন দৃশ্য ও সংলাপ আবেদন ছড়ায় দর্শকের মনে।

এছাড়া টিভিনাটকেও বেশ পরিচিত মুখ ছিলেন সালমান শাহ। অভিনয় করেছেন কিছু নাটক ও টেলিফিল্মে। সেগুলো হলো আকাশ ছোঁয়া, দেয়াল, সব পাখি ঘরে ফেরে, সৈকতে সারস, পাথর সময়, ইতিকথা, নয়ন, স্বপ্নের পৃথিবী (টেলিফিল্ম)।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি স্মরণ করবে তাকে। শিল্পী সমিতির আয়োজন ছাড়াও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও নানা অনুষ্ঠান প্রচার করবে সালমান শাহের মৃত্যু দিবসে।

ঢাকা বিজনেস/এন



আরো পড়ুন