ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) নির্বাচনে ভোটাররা ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এফবিসিসিআই নির্বাচনে গত দুই টার্ম ধরে সিলেকশন পদ্ধতি হচ্ছিল। এবারও তাই হওয়ার ঘোষণা ছিল। কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করে ভোটের অধিকার ছিনিয়ে এনেছি।’ সোমবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর একটি অভিজাত কনভেনশন সেন্টারে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের ভোটার-প্রার্থী মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মীর নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ আপনাদের কাছে ৩টি প্রতিশ্রুতি দিতে চাই। আমাদের এই প্যানেল যদি জয়ী হয়, তাহলে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করবো। প্রথমত আমরা জয়ী হলে ‘অনস্টপ সেল’ গঠন করবো। এখানে আপনারা যেকোনো অভিযোগ বা পরামর্শ দেবেন, আমরা তা বাস্তয়ন করবো। দ্বিতীয়ত, ভোটারদের জন্য লাউঞ্জ তৈরি করবো। তৃতীয়ত, অতিরিক্ত ভ্যাট, ট্যাক্স ও ব্যবসায়ীদের ব্যবসার পথে বোঝা হয় এমন সমস্যা সমাধান করবো।’
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) ২০২৩-২৫ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন আগামী ৩১ জুলাই। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে জমে উঠেছে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্যানেলের নির্বাচনি প্রচারণা। ভোটারদের দোরগোড়ায় যাচ্ছেন পরিচালক পদপ্রার্থীরা। সঙ্গে শহরের বিভিন্ন হোটেল ও কনভেনশন হলেও চলছে ভোটার-প্রার্থী মতবিনিময় সভা।
সম্প্রতি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেস্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) নির্বাচন নিয়ে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের উদ্যোগে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা লেডিস ক্লাবে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। এছাড়া এই পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত হোটেল ও রেস্তোরাঁয় নির্বাচনি ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে।
এদিকে, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ, যার প্রধান নেতৃত্বে রয়েছেন মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ (আহ্বায়ক), মুনতাকিম আশরাফ (যুগ্ম আহ্বায়ক) ও নিজাম উদ্দিন রাজেশ (যুগ্ম আহ্বায়ক)।
এছাড়া, এই পরিষদ থেকে পরিচালক পদে নির্বাচন করছেন ভিসতা ইলেক্ট্রনিক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অটোমোবাইল শিল্পের অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন আকাশ। তিনি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেকে প্রস্তুত এবং দেশের শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে বদ্ধপরিকর। অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে তার ভোটার নম্বর ১৮৩০।
এই পরিষদের অন্য প্রার্থীরা হচ্ছেন- মো. জহুরুল ইসলাম, শেখ আহমেদ উল্লাহ, জাকির হোসেন রনি, মো. রবিউল হক বাদশা, মো. মারুফ আহমেদ, বিএম শোয়েব, তপন কুমার মজুমদার, মো. ইকবাল মাহমুদ, সৈয়দ মো. বখতিয়ার, হাফিজ হাজী মোহাম্মদ এনায়েতউল্লাহ, মো. আফতাব জাভেদ, মোস্তফা আল মাহমুদ, ড. মোহাম্মদ মাহবুব হাফিজ, মো. আমির হোসেন নুরানী, মো. ইশাকুল হোসেন সুইট, ইঞ্জিনিয়ার মো. ইসমাইল করিম চৌধুরী, সাইফুর রহমান মো. সাহিদুল হক মোল্যা ও সালাম হোসেন আস।
ভোট প্রশ্নে সাধারণ সদস্যদের ইচ্ছাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেও সাধারণ ব্যবসায়ীদের পাশে থেকে তাদের চলমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। এই পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের ব্যাপারে সাধারণ ভোটারদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।
আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ভোটারদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি, এবার আমাদের নির্বাচিত করে সেবা করার সুযোগ দিন।’
নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘গত দুই টার্মে সিলেকশন হওয়াতে ভোটাররা ‘এফবিসিসিআই’-এর পরিচালনা পর্ষদকে এখন চেনেন না। এবার যদি আপনারা সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের পুরো প্যানেলসহ নির্বাচিত না করেন, তাহলে চিরতরে ভোট এফবিসিসিআই থেকে হারিয়ে যাবে।’ এ সময় তিনি ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন।
এফবিসিসিআই ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ চলবে। এরপর নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে এফবিসিসিআই সভাপতি, সিনিয়রসহ-সভাপতি ও ৬ জন সহ-সভাপতি পদে নির্বাচন হবে ২ আগস্ট।
ওই দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোট গ্রহণ চলবে। তারপর ২ আগস্ট সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এবং ছয় সহসভাপতি পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা বিজনেস/এইচ