১৮ মে ২০২৪, শনিবার



জাদুকাটার ‘জাদুতেই’ থমকে গেছে যে সেতুর কাজ

তানভীর আহমেদ, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) || ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৮:৪২ পিএম
জাদুকাটার ‘জাদুতেই’ থমকে গেছে যে সেতুর কাজ


সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ চলছে ডিমেতালে। ৩ বছরের মধ্যে এই সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু ওই বর্ধিত সময়ও শেষ হয়ে গেলো চলতি বছরের (২০২২) জুন মাসে। এপরও কাজ বাকি। স্থানীয়দের অভিযোগ,  ‘জাদুকাটার জাদুতেই’ থমকে গেছে এই সেতুর কাজ। তাদের আশঙ্কা, আগামী তিন বছরেও এই সেতুর কাজ শেষ হবে না।

তাহিরপুর সীমান্তের টাঙ্গুয়ার হাওর, শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রী লেক), শিমুল বাগানসহ পর্যটন স্পটগুলোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিতের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ৭৫০ মিটার দীর্ঘ জাদুকাটা সেতুর কাজ শুরু করেছিল।  সেতুটি তৈরি হচ্ছে তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়নে। একপাড়ে ইউনিয়নের গড়কাটি (উত্তর মাথা) ও আরেকপাড়ে বিন্নাকুলি গ্রামের উত্তর মাথার অংশ। শুরুর দিকে এর নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

সেতুর কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের ডিসেম্বর। এরপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘তমা কন্সট্রাকসন’ আরও ছয় মাস মেয়াদ বাড়ায়। ওই সময়কালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জুনের বন্যার পর কর্ম এলাকায় ঠিকাদারের দেখভালকারী দু-চার জন শ্রমিক ছাড়া কেউ-ই নেই। তারা কেবল পাহারা দেন।

তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সেতুর পাশের গ্রাম ঘাগটিয়ার বাসিন্দা মোশারফ মিয়া বললেন, ‘শুরু থেকে সেতুর কাজে ধীর গতি আছে। গেলো বন্যার পর আর কাজই হচ্ছে না। তাহিরপুরের বাদাঘাটসহ সীমান্ত এলাকার মানুষের স্বপ্নের সেতু এটি। এই সেতু চালু হলে সুনামগঞ্জের অর্থনীতির চিত্র পাল্টে দেবে।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বললেন, ‘কাজ ধীরগতিতে চলছে। প্রাকৃতিক কারণেও কিছুটা পিছিয়েছে। এলাকার মানুষের দাবি, দ্রুত সেতুর কাজ শেষ হোক।’

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বললেন, ‘সেতুর নির্মাণ কাজ শেষে বিশ্বম্ভরপুরের কারেন্টের বাজার থেকে জাদুকাটা সেতু পর্যন্ত সড়ক, ওপারে সুন্দর পাহাড়ি হয়ে সীমান্ত সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়ক এবং সেতুর অ্যাপ্রোচ থেকে বাদাঘাট পর্যন্ত সড়কের কাজ হলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক জোন হবে বাদাঘাটসহ সীমান্ত অঞ্চল।’

তমা কন্সট্রাকসনের পক্ষে জাদুকাটা সেতুর কাজ দেখভালকারী প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন বললেন, ‘বন্যার কারণে কিছু সমস্যা হয়েছিল। কিছু প্রয়োজনীয় উপকরণ নষ্ট হয়েছে। এই কারণে গত কয়েক মাস কাজ কম হচ্ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু হবে।’

সুনামগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বললেন, ‘দ্রুত কাজ আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে। বন্যায়  স্ট্রেজিং ওয়াস আউট হওয়ায় সময় নষ্ট হয়েছে। এখন নদীতে পানি বেশি আছে। এ কারণে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। আশ করছি, আগামী মাসের প্রথম দিকেই সেতুর কাজ শুরু হবে।’

ঢাকা বিজনেস/এনই/



আরো পড়ুন