দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী লাকী আখন্দ। ‘যেখানে সীমান্ত তোমার/সেখানে বসন্ত আমার’, ‘এই নীল মনিহার’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা শুধু দুজনের’ কিংবা ‘আমায় ডেকো না ফেরানো যাবে না’ এমন অসংখ্য কালজয়ী গানের সুরস্রষ্টা তিনি। আজ এই সংগীতশিল্পীর ৬৭তম জন্মদিন।
১৯৫৬ সালের ৭ জুন ঢাকার পাতলা খান লেনে জন্মগ্রহণ করেন লাকী। মাত্র ৫ বছর বয়সেই সংগীতে হাতেখড়ি বাবার কাছে। ১৯৬৩-৬৭ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন ও রেডিওতে শিশুশিল্পী হিসেবে সংগীত বিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন অসংখ্যবার। এছাড়া মাত্র ১৪ বছর বয়সেই এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার ও ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করেন লাকী আখন্দ।
১৯৭৫ সালে লাকী আখন্দ তার ছোট ভাই হ্যাপী আখন্দের একটি অ্যালবামের সংগীতায়োজন করেন। অ্যালবামটিতে ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ ও ‘কে বাঁশি বাজায়রে’ গান দুটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।
১৯৮৪ সালে লাকী আখন্দ তার নিজ নামেই প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন। এর ‘আগে যদি জানতাম’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘মামুনিয়া’ ও ‘এই নীল মনিহার’ গানগুলো শ্রোতাপ্রিয় হয়। এখনো সমানভাবে জনপ্রিয় তার এই গানগুলো।
এছাড়া কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে ‘যেখানেই সীমান্ত তোমার’, সামিনা চৌধুরীর কণ্ঠে ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে’ ও জেমসের কণ্ঠে ‘লিখতে পারি না কোনো গান আর তুমি ছাড়া’ কালজয়ী গানগুলোর সুরও করেছেন লাকী আখন্দ।
তার সময়ে তিনি ছিলেন অন্যদের চেয়ে আলাদা। আত্মপ্রচারে কখনো শ্রোতে গা ভাসাননি। গেয়েছেন আপনমনে। গান করেছেন, সুর করেছেন, গানের সঙ্গে বেঁধেছেন প্রাণ। আর সেই বন্ধনের জোরেই কয়েক প্রজন্মের কাছে সংগীতাঙ্গনের প্রিয় মানুষে পরিণত হয়েছেন লাকী আখন্দ।
লাকী আখন্দ দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ক্যান্সারে ভুগেছিলেন। ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল নিজের আরমানিটোলার বাসায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেঁচে থাকলে আজ ৬৭তম জন্মদিন পালন করতেন গুণী এই শিল্পী। তার গিটারে হয়তো বেজে উঠত আবার এলো যে সন্ধ্যার মতো কালজয়ী নতুন কোনো গানের সুর।
ঢাকা বিজনেস/এন/