১৮ মে ২০২৪, শনিবার



পছন্দের পোশাকের খোঁজে ছুটছেন ক্রেতারা

জামাল হোসেন বাপ্পা, বাগেরহাট || ২১ এপ্রিল, ২০২৩, ০৯:০৪ এএম
পছন্দের পোশাকের খোঁজে ছুটছেন ক্রেতারা


পছন্দের পোশাকের খোঁজে ক্রেতারা ছুটছেন এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে। তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিক্রেতারাও দোকানে নানা রঙের পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন। রমজানের শেষ দিকে এসে বাগেরহাটে ঈদের কেনাকাটা বেশ জমে উঠেছে। আর বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতা উপস্থিতি এবং বিক্রি বাড়ায় সন্তোষ প্রকাশ করছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের এমন ভিড় চাঁদরাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন তারা।

এদিকে ঈদের কেনাকাটার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন বাগেরহাট জেলা সদরসহ ৯ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও বিপুলসংখ্যক ক্রেতা ভিড় জমাচ্ছেন বিপণিবিতানগুলোতে। ফলে সকাল থেকেই ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ৯ উপজেলার কাপুড়িয়া পট্টি ও গার্মেন্টস পট্টি। শুধু বিপণিবিতানই নয়, ভিড় থাকে ভ্রাম্যমাণ মার্কেট, ফুটপাত এবং হকার্স মার্কেটেও। পিছিয়ে নেই জুতা ও কসমেটিকস দোকানও। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ক্রেতারা তাদের সাধ্য অনুযায়ী পছন্দসই পোশাক কিনতে ব্যস্ত থাকেন। ফলে দিনভর বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

এদিকে বিপণিবিতান ও শপিং মলগুলোতে ক্রেতাদের সমাগম বাড়ায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন বিক্রেতারা। এ ব্যাপারে শহিদুল ইসলাম নামের ফকিরহাট উপজেলার এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বলেন, রোজার প্রথম ১০ দিন বিক্রি ছিল না বললেই চলে। তবে রোজার মাঝামাঝি ক্রেতা খরা ঘুচেছে মার্কেটে। মানুষ শুধু দেখতে আসছে না। পছন্দ ও দামে মিললে পণ্য কিনে নিচ্ছে। আজ আরও বিক্রি বাড়বে। 

এ অবস্থায় এত দিন অনেকটা অলস সময় কাটালেও বর্তমানে কথা বলারও সময় নেই বিক্রেতাদের। মাসুম হাওলাদার নামের কচুয়া উপজেলার এক কসমেটিকস ব্যবসায়ী জানান, এবার ঈদে একটু দেরিতেই বেচাকেনা শুরু হয়েছে। দুই দিন আগেও তেমন কাস্টমার ছিল না। তবে ২০ রোজার পরই ক্রেতা বেড়েছে, আজ আরও বাড়বে। 

এদিকে পাখি, কিরণমালা, বাজিরাও মাস্তানির পর এবারের ঈদে তরুণীদের পোশাকের বাজার মাতাচ্ছে সারারা, নায়রা ও গারার। জনপ্রিয় মেগা সিরিয়াল বলিউডি সিনেমার নায়িকার পোশাক অনুসারেই এসব নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদের পোশাকের তালিকায় রয়েছে সরকার থ্রিসহ আরও সব বাহারি নাম। তবে ক্রেতারা বলছেন, এসব নাম শুধুই ক্রেতা আকৃষ্ট করার জন্য। বিশেষ কোনো ডিজাইন অনুসারে এ নামকরণ করা হয়নি। আর বিক্রেতারা বলছেন, সিনেমা, সিরিয়াল দেখে ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের পোশাকের প্রতি মানুষের দুর্বলতা তৈরি হয়। সেই প্রবণতা থেকেই পোশাক তৈরি ও বিক্রির ক্ষেত্রে নামকরণের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়। 

বিক্রেতারা আরও বলেন, এবার ঈদ ফ্যাশন হিসেবে গাউন ধরনের পোশাক মেয়েরা বেশি পছন্দ করছেন। বাজারে এ ধরনের পোশাক, গাউনের পাশাপাশি লেহেঙ্গা ধরনের পোশাকেও নজর দিচ্ছেন মেয়েরা। এগুলোকে সারারা বলা হচ্ছে। তবে লাছা নামের আরেক ধরনের পোশাকও বেশ বিক্রি হচ্ছে। বাচ্চাদের পোশাকের ক্ষেত্রে এ নামগুলো বেশি ব্যবহার হচ্ছে। ১৫০০ টাকা থেকে শুরু করে এসব গাউনের দাম উঠেছে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। নাম যা-ই হোক, এবার ঈদে লেহেঙ্গা, গাউন আর ফ্লোর টাচের চাহিদা বেশি। 

এসব পোশাকের ডিজাইন একটু এদিক-ওদিক করে ভিন্ন ভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে। এদিকে ছোটদের পোশাকের দামও বেশ চড়া বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। নাসিমা বেগম নামের এক ক্রেতা বলেন, দোকানে গিয়ে পোশাকের নাম শুনেই মাথা ঘুরে যায়। একই পোশাকের নাম একেক দোকানে একেক রকম। ছোটদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারা এসব নামের আশ্রয় নেয়। কিন্তু এতে ক্ষতি আমাদেরই হয়। আর এ বছর জামার দাম অনেক বেশি। তাই পছন্দসই পোশাক কিনতে অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিক্রেতারা বলছেন, অনেক সময় বড়দের তুলনায় ছোটদের কাপড় তৈরিতে বেশি কষ্ট হয়। তাদের পোশাকে কারুকাজ বেশি থাকে। এসব কারণে শিশুদের পোশাকের দাম বেড়ে যায়। তবে ডিজাইন ও মানভেদে দামের পার্থক্যও রয়েছে। 

ঈদে পোশাকের পাশাপাশি কসমেটিকস, জুতাসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর দোকানেও ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। এ ছাড়া ছেলেদের পোশাকের দোকানগুলোতেও বেশ ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে ভিড় করছেন তরুণরা। এ ছাড়া এ বছর ইজি, রঙ, ম্যানস ওয়ার্ল্ড, আড়ং, ইনফিনিটিসহ বেশ কিছু ব্র্যান্ডের নতুন শোরুমে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।

 বাপ্পা/এইচ



আরো পড়ুন