১১ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার



ঘরে-বাইরে নিশ্চিত হোক নারীর নিরাপত্তা

আফরিদা ইফরাত || ০৮ মার্চ, ২০২৫, ০১:০৩ পিএম
ঘরে-বাইরে নিশ্চিত হোক নারীর নিরাপত্তা


১৯৭০ সালে ভারতের হিমালয়ের পাদদেশে ছোট একটি গ্রামে শুরু হয় চিপকো আন্দোলন। মূলত একটি পাওয়ার প্লান্ট প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে নারীরা অভুতপূর্ব এ আন্দোলন করেন। এ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রকৃতিকে রক্ষা। গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রকৃতির ওপর নারীর নির্ভরশীলতার ব্যাপক উপাদান রয়েছে। এমন ধারণা থেকেই মূলত ইকো-ফেমিনিজমের জন্ম। পাওয়ার প্লান্ট প্রতিষ্ঠার জন্য হিমালয়ের পাদদেশের গ্রামটিতে যখন বুলডোজার যায় গাছ কাটতে, গ্রামের নারীরা গাছ জড়িয়ে ধরে। অর্থাৎ গাছ কাটতে হলে তাদের ডিঙিয়ে যেতে হবে। পৃথিবীর ইতিহাসে আন্দোলন যে অনাগ্রাসী হতে পারে আবার তার তীব্রতাও যে অনেক সুদূরপ্রসারী হতে পারে, তা নারীরা নানাভাবেই দেখিয়েছে। কিন্তু গ্রামীণ প্রকৃতির ছায়া সুনিবিড়ের বাইরে যখন নাগরিক জীবনে নারী লম্বা রেসে দৌঁড়ায়, তখন তার অধিকার ও নিরাপত্তার মাঠ সমতল থাকে না। শহরে সবকিছুই কেমন অপরিচিত, অচেনা এমনকি অনেকাংশে একই রকম। কিন্তু এই একঘেয়েমির মধ্যেই পুরুষতান্ত্রিকতা এমনভাবে জেঁকে বসে আছে যা অকল্পনীয়। আর এই পুরুষতান্ত্রিকতার একটা বড় অংশ ধর্মের দোহাইয়ে, ধর্মকে ব্যবহারের মাধ্যমে। যেহেতু ধর্ম প্রসঙ্গটি চলে আসে তাই সংগতই বিষয়টি স্পর্শকাতর হয়ে দাঁড়ায়। তখন আলোচনা জটিল-কঠিন এবং ক্ষেত্রবিশেষে অসম্ভব বলে মনে হয়।

আলোচনার শুরুতেই চিপকো আন্দোলন নিয়ে কথা বলার উদ্দেশ্যটি হলো, নারীর সঙ্গে তার পারিপার্শ্বিকতার সম্পর্ককে চিহ্নিত করা। মূলত প্রকৃতি ও নারীর উপমাকে কাছে টেনে নারীর সংগ্রামকে নিরস্ত্রীকরণ অবস্থা বোঝাতেই উদাহরণ টেনে আনা। কিন্তু নিরস্ত্র আন্দোলন, প্রতিবাদও নারীর ওপর খড়গহস্ত হয়ে উঠতে পারে। যেমনটি সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সহকারী বুকবাইন্ডার প্রতিষ্ঠানটির নারী শিক্ষার্থীর পোশাক সামলানো বিষয়ক মন্তব্য করেন। ওই নারী আইনের আশ্রয় নেয় এবং হেনস্তার অভিযোগ তোলেন। স্বাধীন একটি রাষ্ট্রে আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই কাজটি তিনি করেছেন। এখানে অন্তত বিতর্ক নেই। বিতর্কের শুরু তার পোস্ট নিয়েই। আবার শুরু পোশাক নিয়ে আলোচনা। কদিন আগে সংসদ ভবনের সামনে মূল সড়কে নারীদের প্রতিবাদকে সামাজিক পরিসরে যথেষ্ট উগ্রভাবে বিবেচনা করে সমালোচনা করা হয়। তাই সামাজিকভাবে ওই ঘটনার মানসিক রেশ এখানেও ছিল। অভিযুক্তকে থানায় আটক করা হলে তৌহিদি জনতা থানা ঘেরাও করে। তারা দাবি করে, তাদের সহযোদ্ধাকে মুক্তি দিতে হবে। তাদের মতে, তারা মব তৈরি করেনি। বরং ন্যায়বিচারের জন্য একত্রিত হয়েছে। সংগত কারণেই ন্যায়বিচার প্রসঙ্গটি বিতর্কিত হয়ে পড়ে। ন্যায়বিচার আসলে কোনটি? থানা যেখানে আইন প্রয়োগ করে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন বিচারের প্রক্রিয়া চলমান করে, সেটিকে ঘেরাও করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয় কীভাবে? আর ঘেরাও করলে তা কীভাবে মব তৈরি না হয়?

সম্প্রতি দেশে আইন প্রয়োগের বিষয়টি বিতর্কিত অবস্থায় রয়েছে। অবশ্য আইন প্রয়োগ এক বিষয়। আইন মেনে চলার প্রবণতা মূলত সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা এবং নাগরিক অভ্যাসের মিশেলটুকু বোঝা জরুরি। উন্নত বিশ্বে সড়কে গাড়ি চালানোর সময়েও অনেকে সতর্ক থাকেন। তারা যথাসম্ভব আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থেকে দূরে থাকার প্রচেষ্টা রাখেন। কিন্তু আমাদের দেশে মানুষই আইন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাকে বেকায়দায় ফেলে। এটি শুধু নারীদের ক্ষেত্রে নয়। বিগত ১৫ বছরে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে পুলিশকে ভিন্নমাত্রা দেওয়া হয়েছে। তাই বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতা এবং ঘুষ লেনদেনের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা কমেছে, শংকা বেড়েছে। পটপরিবর্তনের পর পুলিশে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার আসেনি। সমাজে জননিরাপত্তা শংকা বেড়েছে। এমন সময়ে মব জাস্টিস বেড়েছে। সামাজিকভাবে ও রাজনৈতিকভাবে আমরা ভয়াবহ অস্থিতিশীলতার মধ্যে রয়েছি। এই অস্থিতিশীলতা ক্রমেই বাড়ছে। তার প্রমাণ একের পর এক বিতর্ক।

২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসেই মোট ৮৫ জন কন্যাশিশু ও ১২০ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ তথ্য মহিলা পরিষদের নারী ও কন্যা নির্যাতনবিষয়ক মাসিক প্রতিবেদন (জানুয়ারি) অনুযায়ী। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৬৭ জন। তার মধ্যে ১৪ জন কন্যাসহ ২০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ১ জন কন্যাসহ ২ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ২ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে এই নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে বহুগুণে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সারা দেশে ১৮৯টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে; যার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ৪৮টি। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১ জন। বিভিন্ন কারণে ১০ জন কন্যাসহ ৪৬ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। ১৫টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া এই প্রতিবেদনগুলোর চেয়ে প্রকৃত সংখ্যা যে আরও বেশি হবে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। অর্থাৎ নারীর ওপর দমন-পীড়ন বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজ পরিবারে কন্যাশিশুও নিরাপদ নয়। বিষয়টি দুঃখজনক। সম্প্রতি মাগুরায় তৃতীয় শ্রেণীর এক কন্যা শিশু বোনের স্বামীর বাড়ি বেড়াতে যায়। সেখানে সে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরও অচেতন রয়েছে মেয়েটি—অর্থাৎ এখনও আশংকামুক্ত নয় সে। এমন একটি ঘটনার পর থেকে সংগতই চিন্তা বাড়ে। ভাবতে বাধ্য হই, আমাদের সমাজ কোনদিকে যাচ্ছে। নারীর ওপর আক্রমণ নিপীড়ন নয়। এটি এখন মব ভায়োলেন্স, সামাজিক অবক্ষয়ের প্রমাণ এমনকি মানসিকভাবে যৌন বিকৃত বা নারীর প্রতি কুরুচিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন সংস্কৃতির প্রসারের ফল। এ ধরনের ঘটনাগুলো তো এরই সাক্ষ্যবহ। এর বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ বা আন্দোলন ফলপ্রসূ না হওয়ার কারণ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সমস্যাটি ব্যাপক আকার ধারণ করে রয়েছে। আর এ পরিস্থিতি দেখে কোনো কিছু বলা বা লেখাও অনর্থক মনে হচ্ছে।

আমরা দেখেছি, অভিযুক্ত ব্যক্তি মুক্তি পাওয়ার পর তাকে এমনভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয় যা লজ্জাকর। বিষয়টি ধর্মকেও নানাভাবে বিতর্কিত করে। কারণ প্রথমত, এখানে অপরাধটি মব দ্বারা সংঘটিত হয়নি। একজন নারী হেনস্তার শিকার হয়ে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টির নিরাপত্তা এ সময়ে চেয়েছেন। রাজধানী বা শহরে নারীর চলাফেরার সময় নিজের নিরাপত্তার দিকে নজর দেবে নাকি পোশাকে? রাস্তায় বাড়ছে ছিনতাই। গণপরিবহনে নারীর ওপর যৌন নিপীড়ন বাড়ছে। ধর্ষণও বেড়েছে। তাছাড়া যাপিত জীবনের ব্যস্ততায় নারী নানাভাবেই ছোটাছুটির মধ্যে থাকে। তাই তার নিজের দিকে খেয়াল রাখা কঠিন হয়ে ওঠে। এমন সময়ে তার পোশাককে ইঙ্গিত করে বা রুঢ়ভাবে কিছু বললে নারী হেনস্তাবোধ করবেই। হেনস্তা আর নারীকে সম্মানের ফারাক বোঝানো জরুরি। অনেক সময় রিক্সায় বসে থাকা নারীদের উদ্দেশে অনেকে বলেন, আপনার ওড়না চাকায় প্যাঁচিয়ে যেতে পারে। আবার অনেকে ভদ্রভাবে জানান, আপনার ওড়না বা আঁচলটি বেসামাল। বলার ভঙ্গিমায় শালীনতা থাকা জরুরি। এ চর্চা আমাদের সমাজে আছে। আবার আমাদের সমাজেরই একটি অংশ অত্যন্ত গোঁড়া চর্চায় থাকে। তারা ধর্মীয় আবরণকে বা ব্যাখ্যাকে ব্যবহার করে বরাবরই নারীর চলন ও পোশাকে ইঙ্গিত করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধিকাংশ সময় নারীকে পতিতা, নরকের কীটসহ নানা অশালীন মন্তব্য করা হয়। এগুলো নির্দিষ্টভাবে হয়তো ওই নারীর মনে প্রভাব ফেলে না। কিন্তু সামগ্রিকভাবে সমাজের নারীরা এমন মন্তব্যে ভীত হয়।

ধর্ম নারীকে যথাযথ সম্মান দিতে বলেছে। সমাজে অরাজকতা ও অশালীনতার জন্য নারী-পুরুষ উভয়ের বিচারের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা মবের মাধ্যমে নয়। বরং এসব সম্পন্ন করতে হয় সংশ্লিষ্ট আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে। কিন্তু সম্প্রতি মব জাস্টিসের হার বাড়ছে। একজন নারী আইনি প্রতিষ্ঠানের কাছে যাওয়ার আগ্রহও হারিয়ে ফেলছে। এমনটি আমাদের সংস্কৃতির অবদমনের ইংগিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টিকে উপস্থাপন করা হয়েছে, ‘মূল ঘটনা এই ছবিটা একটি অনুপ্রেরণামূলক ছবি। আজকে এক নারীকে শালীন পোশাক পরতে বলার কারণে যে ভাইকে শাহবাগ থানায় গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছে।’ প্রশ্ন হচ্ছে, শালীন পোশাক বা পোশাক নিয়ে মন্তব্য তো প্রায়শই হয়। কিন্তু কোনো নারী কখন হেনস্তাবোধ করেন? বিশেষত নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী যথেষ্ট নিরাপদ বোধ করেন। আমাদের দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী পর্যাপ্ত নিরাপদ বোধ করেন। সেখানেই যখন কেউ এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন তখন তা অবশ্যই রুঢ়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা পোস্ট করছেন, তাদের সবাই মূল ঘটনার সময় কি উপস্থিত ছিলেন?

সংকট বাড়ছে। বাড়তেই থাকবে।  আসলে নারীর ক্ষমতায়নে কতটুকু কর্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে আনার এ ধরনের প্রচেষ্টা অনেকটা ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার শামিল। আমরা একটু খেয়াল করলে দেখতে পাব এর সফল সত্যিকার অর্থে যাদের পাওয়ার কথা তারা না পেয়ে আমাদের দুর্বৃত্তায়িত ব্যবস্থার খপ্পরে পড়ে গিয়ে সমস্ত বিষয়টি ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। বস্তুতপক্ষে ক্ষমতায়িত করার আগে তাদের সে ক্ষমতা গ্রহণ করার মতো মানসিক যোগ্যতা এবং দক্ষতা অর্জন বেশি জরুরি, যা অর্জিত হতে পারে একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। সে প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া কোনো নির্দিষ্ট দায়িত্ব অর্পণ করা হলে ক্ষমতায়নের মূল তাৎপর্যই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। সেজন্য প্রথমত. সঠিক শিক্ষা, বিশেষত নারীর সুশিক্ষার পথে যে অন্তরায়সমূহ রয়েছে তা দূর করতে হবে সবার আগে, যা মূলত সরকারের দায়িত্ব। দ্বিতিয়ত. পারিবারিক পর্যায়ে কেবল ছেলে আর মেয়েÑ এ সংকীর্ণ চিন্তাধারা অতিক্রম করে সন্তানদের প্রতি পিতা-মাতার সমান দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন বেশি জরুরি। এখানে শিক্ষার সুযোগ থেকে শুরু করে সম্পত্তির অধিকার পর্যন্ত নারী-পুরুষের মধ্যকার বিভেদ দূরকল্পে পারিবারিক মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। আর এ পরিবর্তন যতক্ষণ না করা যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত সার্বিক অবস্থারও উন্নয়ন করা যাবে না। বিচ্ছিন্নভাবে উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, আমাদের সমাজে এখনও প্রাথমিকভাবে নারীরাই আক্রমণের প্রধান শিকার, সেটা কর্মস্থলেই হোক আর পথে ঘাটেই হোক এবং তারা আমাদেরই কারও না কারও পরিবারের সদস্য। এটি কি আমাদের সমাজে নীরবে চলতে থাকা এক ধরনের বৈষম্যের নামান্তর নয়, যে বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে প্রকারান্তরে আমাদের সবাইকে? নারীর প্রতি বৈষম্যহীন এবং সমান আচরণ করা নারীদের প্রতি সম্মান দেখানো এটি যেমন সত্যি, তার চেয়ে কি বড় নয় যে এর মধ্য দিয়ে আমরা আমাদেরই আরও সুরক্ষিত করছি? এটি বোধোদয়ের জন্য সম্ভবত আমরা অনেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত নই, কারণ সমাজ এবং রাষ্ট্র আমাদের এমন এক খাঁচায় পুরে রেখেছে সে খাঁচা ভাঙতে হবে। আমরা সম্ভবত শৃঙ্খলিত জীবনই অধিক পছন্দ করি।

তবু তারা নানাভাবে বিষয়টিকে ধর্মের দিকে টেনে এক ধরণের ঘৃণা জাগাচ্ছেন। এ সংস্কৃতি শুধু নারীই নয়, সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে করা হয়। করা যায় না রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে। যখনই বলা হয় তৌহিদি জনতা, সংগত কারণেই প্রমাণিত হয়, বিষয়টি একটি মব। মব যখন ঘটনার নিয়ন্ত্রণে তখন নারীর প্রতিষ্ঠানকে আকড়ে ধরার সম্বল কোথায়? প্রকৃতিতে গাছের সঙ্গে নারী চিপকে থাকতে পারে। কিন্তু শহরে আইনশৃঙ্খলা বাস্তবায়ন করে এমন সংস্থাকে আকড়ে ধরার সুযোগ আছে? এ প্রশ্নটি সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক? এর উত্তর পাওয়া জরুরি। কারণ এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে নারী কী আকড়ে ধরবে? কী আকড়ে ধরলে নারী রেহাই পাবে সব ধরণের যন্ত্রণা থেকে। কারণ আমাদের সমাজে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এখন মবকেই তুলে আনছে। এ মব কী? বাজারের সিন্ডিকেট কী? তা চিহ্নিত করার কেউ নেই। এর বিপক্ষে শক্ত হাতে শাসনভার ধরারও কিছু নেই। নারী ঘর-বাইরে কোথাও নিরাপদ নয় আবার আত্নসম্মান রক্ষা করে চলার মতো অবস্থাতেও নেই। তাহলে নারীর অবস্থান কোথায়?



আরো পড়ুন