জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা। চাকরি স্থায়ী করার লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দুপুর ২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করছেন।
কর্মচারীরা জানান, চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনবার প্রশাসনকে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন এবং একই দাবিতে মানববন্ধন করেন। সেসময় তাদের চাকরি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার।
সর্বশেষ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন তারা। তখন প্রশাসন ৬ মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসে নিয়োগের মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে অনশন স্থগিত করেন তারা। তবে আশ্বাসের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও অবস্থান ধর্মঘটে বসেছেন কর্মচারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪২ জন অস্থায়ী কর্মচারী আছেন। যাদের দৈনিক ৪০০ টাকা হারে মজুরি দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হলের পিয়ন নাসরিন আক্তার বলেন, ‘আমরা চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছি। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও ইউজিসি'র দোহাই দিয়ে আমাদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি। এখন আমাদের পক্ষে আর ধৈর্য ধরা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে অবস্থান ধর্মঘটে বসেছি।’
বেগম সুফিয়া কামাল হলের অস্থায়ী কর্মচারী নিরাপত্তা প্রহরী শামসুল আলম বলেন, ‘চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য প্রশাসন বার বার আশ্বাস দিয়েছে, তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। কয়েকমাস আগে আমরা অনশনে বসলে প্রশাসন নিয়োগের মৌখিক আশ্বাস দেয়। তখন আমরা কর্মসূচি স্থগিত করেছি। তবে মৌখিক আশ্বাসের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও আমাদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি।’
শেখ হাসিনা হলের মালি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেবা দিয়ে যে বেতন পাই, তা দিয়ে সংসার চলে না। সন্তানদের লেখাপড়া করাতে হিমশিম খাচ্ছি। প্রতিমাসে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা ঋণ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। ফলে প্রশাসনের কাছে আসি, তারা আমাদের তাড়িয়ে দেয়। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, যার কারণে আবারও অবস্থান ধর্মঘটে বসেছি।’
উজ্জল/এইচ