দিনাজপুরের হিলিতে সেদ্ধ ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শ্রমিকসহ মিল-মালিকেরা। টানা কয়েকদিন ধরে রোদ না ওঠায় সেদ্ধ ধান চাতালেই পড়ে আছে। রোদের আশায় প্রহর গুনছেন তারা।
চাতাল শ্রমিকেরা বলছেন, তারা ধান সেদ্ধ, শুকনো থেকে শুরু করে চাল ছাঁটাই পর্যন্ত প্রতিবস্তায় ৬০ টাকা করে মজুনি পাই। কিন্তু প্রায় ১ সপ্তাহ ধরে রোদ না ওঠায় সেদ্ধ ধান চাতালেই পড়ে আছে। আর মিল মালিকেরা বলছেন, সেদ্ধ ধান নিয়ে বিপদে আছেন তারা। ধান না শুকানোয় চাল ছাঁটাই করতে পারছেন না। তাই টাকা আটকে আছে।
চাতাল শ্রমিক মো. আজিবর রহমান বলেন, ‘বছরের এই সময়টা আমরা কয়েকজন দল বেঁধে মিলে ধান সেদ্ধ, শুকানোসহ চাল ছাঁটাইয়ের কাজ করি। ধান সেদ্ধ থেকে চাল ছাঁটাই করা পর্যন্ত প্রতিবস্তায় (৪০) কেজিতে ৬০ টাকা মজুরি পাই। তাতেই আমাদের সংসার চলে। কিন্তু টানা ১ সপ্তাহ ধরে রোদ না ওঠায় ধান সেদ্ধ করে চাতালে ফেললেও শুকানো যাচ্ছে না। তাই মজুরিও পাচ্ছি না। পরিবার পরিজন নিয়ে ধারদেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে।’
আরেক শ্রমিক মো. হাসমত আলী বলেন, ‘ধান সেদ্ধ, শুকানোসহ চাল ছাঁটাই করাই আমার পেশা। ইরি-বোরো মৌসুমেও আমি ধান সেদ্ধ, শুকনোসহ চাল ছাঁটাইয়ের কাজ করি। এভাবে প্রায় ২০ বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। এই বয়সে আর অন্য কোনেো কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব না।’
হাসমত আলী আরও বলেন, ‘ভালোই চলছিল। কিন্তু কয়েকদিন থেকে রোদ না ওঠায় চাতালে ধান শুকাতে পারছি না। তাই চাল ছাঁটাইও বন্ধ আছে। আর চাল ছাটাই শেষ না করলে তো মালিক বিল দেবেন না। তাই মালিকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সংসার খরচ চালাতে হচ্ছে। পরে বিল থেকে কেটে নেবেন। আমি পুরনো শ্রমিক তো। তাই মালিক আমাকে চাইলে অগ্রিম দেন।’
মিল মালিক মো. ইউসুফ আলী ঢাকা বিজনেসকে বলেন, ‘গুদামে আরও ধান আছে। কিন্তু রোদের কারণে চাতালের সেদ্ধ ধানগুলোয় কয়েকদিন ধরে পড়ে আছে। তাই আর নতুন করে ধান সেদ্ধ করছি না। ধান না শুকানোয় চাল ছাঁটাই করা যাচ্ছে না। বাজারে চালও সরবরাহ করতে পারছি না।’
ইউসুফ আলী আরও বলেন, ‘কৃষকদের কাছ থেকে বাকিতে ধান কিনেছি। কৃষকরাও টাকার জন্য ধর্ণা দিচ্ছেন। তাই খুব বিপাকে আছি।’
ঢাকা বিজনেস/ বুলু/এনই