সুনামগঞ্জের বাজার গুলোতে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। শীতকালীন নতুন সবজিকে ঘিরে বাড়তি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়েছে ক্রেতাদের। বাজারে শিম, ফুলকপি, পাতাকপি, মূলা, ঢেঁড়সসহ প্রায় সব ধরনের শীতের সবজির দেখা মিলছে। রয়েছে বেগুন, পটল, ঝিঙা, করলা, টমেটো, শসা, গাজরসহ অন্যান্য সবজিও। সব সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমেনি। ফলে সবজির বাজারে এসে স্বস্তি মিলছে না ক্রেতাদের।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে বর্তমান চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম। এ কারণে সবজির দাম কমছে না। তাঁরা জানান আগামী ১-২ সপ্তাহের মধ্যে সকল ধরনের সবজির দাম কমতে পারে। তবে তাদের দাবি স্থানীয় সবজির বেশিরভাগ বাহিরে পাচার হওয়ার কারণে বাজারে সবজির দাম কমে না।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বাজার গুলোতে সবজি সরবরাহ না করে সবজি বাহিরে পাচার করেন, আর এ কারণেই সবজির দাম কমছে না। বাজার গুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি সরবরাহের দাবি ক্রেতাদের।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আধুনিক পৌর কিচেন মার্কেট, পুরাতন জেল রোড ও ওয়েজখালি বাজার ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ সবজির দাম শুরু হচ্ছে ৬০, ৭০, ৮০ ও ৯০ টাকায়। নতুন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১২০-১৪০ টাকা করে। গেল মাসে কাঁচামরিচের দাম নাগালের বাইরে থাকলে এখন দাম স্বাভাবিক হয়েছে। খুচরা পর্যায়ে কেজি প্রতি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। পাশাপাশি বাজারে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজ কেজি প্রতি ১১২ থেকে ১১৫ টাকা, রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৩৫-২৪০ টাকায়।
বিক্রেতাদের তথ্য মতে, বাজারে ফুলকপি (বড় সাইজের) প্রতি কেজি ১৪০ টাকা ও বাঁধাকপি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঢেঁড়স প্রতি কেজি- ৭০, বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, পেঁপে ৫০, টমেটো ১৫০ থেকে ১৬০, মুলা ৪০, চিচিঙ্গা ৬০ টাকায়, ঝিঙ্গে ৭০, করলা ৭০, বরবটি- ৮০, কচুর মুখি ৮০, শিম ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আলু (নতুন) ১২০ টাকা, গাজর ১৮০, শসা ৫০ টাকায়, লাউ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কলমিশাক, লালশাক, ডাঁটাশাক, পুঁইসহ বিভিন্ন শাকের দাম (মুঠি) কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে।
সাইফুল ইসলাম নামক এক ক্রেতা বলেন, বাজারে প্রায় সব সবজির দাম ৬০-৮০ টাকার ওপরে। সবজির এত দাম হলে স্বস্তি মেলে কী করে? সবজিতে বাজার ভরপুর। অথচ দামের বেলায় দাম বেশি। দাম না কমার কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন বাজার সিন্ডিকেটের দখলে রয়েছে।
সবজি কিনতে আসা আরিফ বলেন, বাজারে শীতকালীন সবজি আসলেও দাম কমেনি। ৭০-৮০ টাকা ছাড়া নতুন সবজি ক্রয় করা যাচ্ছে না।
সবজির খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতা সোহাগ বলেন, সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ সবজি বাহিরে পাচার হইযায়, যার কারণে আমাদের এখানে দাম কমে না। তবে গতকালের চেয়ে আজকে কিছুটা কমেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীর।
খুচরা বিক্রেতা আলী হোসেন জানান, পাইকারি বাজারে দাম না কমায় খুচরা বাজারে সবজির দাম কমে নি। কিনার (ক্রয় করার) সময় যদি কম দামে না কিনা যায় তাহলে বিক্রি করার সময় কিভাবে কম দামে বিক্রি করবো।
ব্যবসায়ী পিযুষ বলেন, সবজির আমদানি বাজারে কম, বেশিরভাগ স্থানীয় সবজি বাহিরে চলে যায়৷ আশাকরি ১-২ সপ্তাহের মধ্যে সবগুলো সবজির দাম কমবে।
খুচরা বিক্রেতা দিদার বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য না আসায় দাম কমে না। তবে কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন বলেন, আমদানি বন্ধ থাকায় পিঁয়াজ, রসুন ও আলুর দাম একটু বেশি। তবে ব্যবসায়ীরা যদি সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়ায় এমন অভিযোগের প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।