২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, সোমবার



লাইফ স্টাইল
প্রিন্ট

শীতে সানস্ক্রিনের ব্যবহার নিয়ে যা জানালেন চিকিৎসক

ঢাকা বিজনেস ডেস্ক || ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৫:৪২ এএম
শীতে সানস্ক্রিনের ব্যবহার নিয়ে যা জানালেন চিকিৎসক


শীত পড়েছে। শীতের সময় ঠান্ডা আবহাওয়া ত্বক শুষ্ক করে দেয়। এ কারণে শীতে ত্বকের যত্ন কিছুটা বেশিই নেয়া হয়। ত্বক ভালো রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের লোশন, গ্লিসারিন, আবার কেউ কেউ তেল মালিশ করেন। মূল উদ্দেশ্য একটাই, ত্বকের যত্ন নেয়া।

এদিকে গরমের সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করা হয় ত্বকের জন্য। ফলে শীতে সানস্ক্রিন খুব একটা ব্যবহার করতে দেখা যায় না। কেউ কেউ দ্বিধায় থাকেন যে, শীতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবে কিনা। সম্প্রতি এ বিষয়ে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ও মার্কস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. কাজী ইমরান হাসান। এ ব্যাপারে তাহলে জেনে নেয়া যাক।

সানস্ক্রিন কী শীতেও ব্যবহার করা যাবে: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ওজোন স্তর ভেদ করে আমাদের এই পৃথিবীতে আসে। এই রশ্মি শুধু গরমের সময় নয়, শীতেও আসে। যা কিনা আমাদের ত্বকের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। শীতে রোদের তীব্রতা না থাকলেও অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের ওপর পড়ায় ত্বকের সুরক্ষার প্রয়োজন হয়। এ জন্য শীতেও ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

ত্বকে ক্যানসারের ঝুঁকি, মেছতা, ত্বকের বিভিন্ন রোহ এবং রোদে পোড়া থেকে ত্বককে রক্ষা, ত্বক কুঁচকে যাওয়া, ত্বকে ভাঁজ পরা, এজিং, প্রিম্যাচিয়ুর এজিং থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয় সানস্ক্রিন। আর এটি শুধু ছেলে বা মেয়ে নয়, সবার ত্বকের জন্যই সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

কখন ব্যবহার করতে হয়: ফর্সা ত্বকে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি একটু বেশিই প্রভাব ফেলে। অনেকের ত্বকে নানা ধরনের পিগমেন্টারি ডিজঅর্ডার, মেছতা নামক রোগ থাকে। এ ক্ষেত্রে গরমের সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেও শীতে যারা করেন না, তাদের সমস্যা দূর না হয়ে বরং আরও খারাপ হয়।

দীর্ঘসময় রোদে কাজ করা, খেলোয়াড় এবং যারা সূর্যের সরাসরি সংস্পর্শে থাকেন, তাদের শীতের সময়ও বাইরে বের হওয়ার ২০-৩০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। বাসায় বা অফিসে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটারে যারা কাজ করেন, ডিসপ্লে থেকে আসা লাইট তাদের ত্বকের ক্ষতি করে। ইউভি গাড়ির কাঁচ, বাড়ির জানালা ভেদ করেও ত্বকে প্রবেশ করে। এসব থেকে মুক্তি পেতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন।

কীভাবে বাছাই করবেন সানস্ক্রিন: সাধারণত সানস্ক্রিন দুই ধরনের হয়ে থাকে, রাসায়নিক ও খনিজ। রাসায়নিক সানইস্ক্রনগুলোয় অ্যাভোবেনজন, অক্টিসালেট, অক্টোক্রাইলিন জাতীয় উপাদান থাকে। আর খনিজ জাতীয় সানস্ক্রিনগুলোয় জিঙ্ক অক্সাইড বা টাইটানিয়াম ডাই অক্সাইড নামক দুটি পদার্থ থাকে। রাসায়নিক এবং খনিজ সানস্ক্রিন একইভাবে কাজ করে ত্বকে।

আপনার ত্বক যদি সংবেদনশীল হয়ে থাকে তাহলে খনিজ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবে। এতে অ্যালার্জি বা জ্বালাপোড়া হবে না। যা বাড়ির ছোট থেকে বয়স্কসহ সবাই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে ত্বকের ধরন বুঝে সানস্ক্রিন নির্ধারণ করতে হবে। একেক জনের ত্বক একেক ধরনের হয়ে থাকে। সাধারণত ত্বক চার ধরনের। যেমন- স্বাভাবিক, শুষ্ক, তৈলাক্ত ও সংবেদনশীল।

আপনি যদি মনে করেন আপনার ঘাম বেশি হয় ও ত্বক তৈলাক্ত। তাহলে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করে ম্যাটিফাইং সানস্ক্রিন, স্প্রে সানস্ক্রিন বা জেল সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ত্বক সহনশীল থাকবে। পাশাপাশি ঘামও কম হবে। আবার অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকলে ওয়াটারপ্রুফ সানস্ক্রিন নিতে পারেন। সমুদ্র, সুইমিংপুল বা পুকুরে গোসলের সময় ওয়াটারপ্রুফ সানস্ক্রিন নেয়া ভালো। তা না হলে ঘাম ও পানিতে মিশে সানস্ক্রিন উঠে যাবে। আবার আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত ধরনের হয় তাহলে জেল বেসড বা ক্রিম জাতীয় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। আর শুষ্ক ত্বকের জন্য অয়েল বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উপকারী।

সতর্কতা: সানস্ক্রিন ব্যবহারের আগে অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে যে, আপনার কোনো ধরনের অ্যালার্জি রয়েছে কিনা। ত্বকে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা যাতে না হয় এজন্য আগে সামান্য একটু ব্যবহার করে দেখুন। অনেক সময় দেখা যায়, অতিরিক্ত ঘামের জন্য কারও কারও সানস্ক্রিন উঠে যায়। তাদের বিকল্প সানস্ক্রিন দেখতে হবে। আবার সানস্ক্রিনে বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে কিনা, অ্যালার্জি মুক্ত কিনা, ব্রড স্পেকট্রাম ও ডার্মাটোলজিস্ট এপ্রোভড কিনা এসব দেখে নিতে পারেন।

সানস্ক্রিনের কার্যকারিতা বুঝতে চোখের নিচে ও আশপাশে হালকা করে সানস্ক্রিন নিন। যাতে ভেতরে না যায় সেই দিকটা সতর্কতার সঙ্গে খেয়াল করুন। লাগানোর পর মুখে ক্রিম, পাউডার বা এ জাতীয় কিছু লাগাবেন না। সানস্ক্রিন ব্যবহারের ৩-৪ ঘণ্টা পর কার্যকারিতা শেষ হয়। এ জন্য ক্লিনজিং করে পরে আবার সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হয়। তবে কারও যদি কোনো সানস্ক্রিনে সমস্যা দেখা দেয় বা সমস্যা স্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হতে হবে।

ঢাকা বিজনেস/এমএ/



আরো পড়ুন