কাঠবাদাম নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। পুষ্টিগুণে ভরপুর এ বাদাম নিয়মিত খেলে শরীরে নানা পরিবর্তন আসে। তবে অপকারের চেয়ে উপকারী গুণই বেশি লক্ষ করা যায় এ বাদামের ক্ষেত্রে।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, কাঠবাদামের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, কার্বোহাইড্রেট, খনিজ উপাদান ইত্যাদি।
এসবের পুষ্টিগুণ শরীরে নানা উপকার করে। যেমন-
১. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি:
কাঠবাদামে থাকে মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি পুষ্টিগুণ রিবোফ্লেভিন ও এল ক্যারনিটিন। উপাদান দুটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মনে রাখার ক্ষমতা হারানো কিংবা মস্তিষ্কের রোগ আলঝেইমার হওয়ার শঙ্কাও দূর করে কাঠ বাদাম।
২. হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:
কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপকারী উপাদান থাকে, যা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন-ই হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং ম্যাগনেসিয়াম হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৩. ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
কাঠবাদাম ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের পর কাঠবাদাম খাওয়া ইনসুলিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
৪. কোলোন ক্যান্সার প্রতিরোধ:
কাঠবাদাম কোলোন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি কোলনকে ভালো রাখতেও কাজ করে।
৫. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:
কাঠবাদামে থাকা ফসফরাস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা সোডিয়াম রক্তচাপের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করে।
৬. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
ওজন নিয়ন্ত্রণেও দারুণ কাজ করে কাঠবাদাম। কারণ এটি খাওয়ার পর ক্ষুধা কমে যায়। ফলে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়।
৭. খারাপ কোলেস্টেরল কমায়:
শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এটি। পাশাপাশি বাদামে থাকা কার্যকরী উপাদান শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে শুরু করে।
৮. হাড় ও দাঁতকে সুরক্ষা দেয়:
কাঠবাদামে থাকা ফসফরাস, মিনারেল ও ভিটামিন হাড় ও দাঁতকে সুরক্ষা দেয়। ফসফরাস কেবল হাড় ও দাঁতকে মজবুত করে না বরং এটি অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় রোগ প্রতিরোধও সাহায্য করে।
৯. কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমায়:
কাঠবাদামে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে কার্যকরী। আর্জিনিন এবং হেলদি ফ্যাটের সঙ্গে এই ফাইবারের উপস্থিতি কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ রোগীদের জন্যও উপকারী।
১০. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
সর্বোপরি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে কাঠবাদাম। এতে থাকা ভিটামিন-ই ও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়।
কাঠবাদামের এসব উপকারিতা পেতে নিয়মিত ৩টির বেশি কাঠ বাদাম খাবেন না। সহজে হজমের জন্য কাঠ বাদাম পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস্ট্রিক ও অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে কাঠ বাদাম খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।