১৮ মে ২০২৪, শনিবার



ভরা মৌসুমে পর্যটকশূন্য সুন্দরবন, কিন্তু কেন

জামাল হোসেন বাপ্পা, বাগেরহাট || ২৫ নভেম্বর, ২০২৩, ১২:১১ পিএম
ভরা মৌসুমে পর্যটকশূন্য সুন্দরবন, কিন্তু কেন


ভরা মৌসুমেও সুন্দরবনে কোনো পর্যটকবাহী লঞ্চ  যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, পর্যটক না আসায়  আগে থেকে বুকিং করা ট্রিপও বাতিল করছে ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেও আর্থিক লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবায়ীদের। তারা আরও বলছেন, সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

ট্যুর অপারেটররা জানান, সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি বরাবরই আকর্ষণ থাকে পর্যটকদের। বিশেষ করে প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসকে ধরা হয় পর্যটন মৌসুম। এ সময়ে সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হয়। পদ্ সেতু চালু হওয়ার পর সুন্দরবনে পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

তারা আরও জানান, তবে চলতি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতে। টানা হরতাল-অবরোধের কারণে সুন্দরবন ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। 

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘অন্যান্য বছর এ সময় সুন্দরবনের করমজলসহ সব স্পটে পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতি থাকতো। তবে ওই চিত্র বর্তমানে একেভারে ভিন্ন।’ তিনি বলেন, ‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে পর্যটকরা ঝুঁকি নিতে চান না। তাই সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলোয় এখন অনেকটা সুনসান নীরবতা।’ 

ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান  সুন্দরবন লাইভ ট্যুর-এর মালিক গোলাম রহমান ভিটু বলেন, ‘খুলনা ও মোংলা মিলে ৭০টিরও বেশি সুন্দরবনগামী বিলাসবহুল লঞ্চ আছে। এগুলোর পেছনে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। চলমান পরিস্থিতির কারণে সব ট্যুর একে একে বাতিল হচ্ছে। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। এই সময়ে আমরা ট্যুরের জন্য অতিরিক্ত লোকও নিয়োগ করে রেখেছি। তাদের বেতন দিতে হচ্ছে। অথচ বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত পাচ্ছি না।’

সুন্দরবন বন বিভাগ খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘পদ্মাসেতু চালুর পর সুন্দরবনে পর্যটক সংখ্যা বাড়ছিল। একইসঙ্গে বাড়ছিল আমাদের রাজস্ব আদায়ও। এখন পর্যটক না এলে আমাদের কিছুই করার নেই। আশা করি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও পর্যটক সংখ্যা বাড়বে।’

উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সুন্দরবন ভ্রমণ করেছিলেন ২ লাখ ১৬ হাজার পর্যটক। যা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।  এর আগে, ২০২১-২২ অর্থবছরে সুন্দরবনে ৭৫ হাজার ৫৬০ জন দেশি এবং ৮৬৪ জন বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। ওই অর্থ বছর সুন্দরবন বিভাগ পর্যটকদের কাছ থেকে ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার ৭০ টাকা রাজস্ব আয় করে।

ঢাকা বিজনেস/এনই 



আরো পড়ুন