বাংলাদেশ ক্রিকেট দল হাঁটছে উল্টো পথে। সবাই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের বিশ্বকাপে সুযোগ দেয়। আর বাংলাদেশ অনভিজ্ঞদের এখানে সুযোগ দেয় অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য। অভিজ্ঞদের দল থেকে বাদ দেয়া হয়, নইলে বসিয়ে রাখা হয় সাইড বেঞ্চে।
এর ফল যা হবার তাই হচ্ছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দল এবং ব্যাটিং এর দিকে তাকালেই বিষয়টি স্পষ্ট। শান্ত। ৮.৩ ওভারে ৪৯ রান তুলতেই নেই চার উইকেট!
প্রথম ওভারে ৩ বাউন্ডারিতে ১২ রান তুলেছিল সাকিবরা। দ্বিতীয় ওভারে রিকি টপলের তিন বলে দুই রান নিয়েছিল ব্যাটসম্যান তানজিদ এবং লিটন। কিন্তু চতুর্থ এবং পঞ্চম বলে পড়ে দুই উইকেট। ২ বল খেলে ১ রান নিয়ে তিনি আউট। এ নিয়ে জাতীয় দলের হয়ে টানা ৫ ম্যাচে ব্যর্থ এই তরুণ ওপেনার। তানজিদের মতো একজন ওপেনারকে এভাবে বাঘের মুখে ঠেলে দেয়া মানে তার ক্যারিয়ার নষ্ট করা।
ইতিপূর্বে দেখা গেছে, এভাবে অনেক তরুণকে অপরিপক্ক অবস্থায় জাতীয় দলে এনে ব্যর্থ দেখিয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে। ঠিক সেরকমটাই হতে যাচ্ছে তানজিদের বেলায়। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে অভিজ্ঞ তামিমকে বাদ দিয়ে তানজিদ তামিমকে দলে নেয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। এবার সেই সমালোচনাকে সত্যে পরিণত করলেন তানজিদ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপে তার ডেব্যু হয়। তখন দেখা গেছে ব্যাট যাচ্ছে একদিকে, বল যাচ্ছে আরেক দিকে। তার ব্যাট চালনা দেখে মনেই হয় না বিশ্বকাপের মতো কঠিন পরীক্ষায় অবর্তীর্ন হওয়ার মতো যোগ্যতা তার আছে।
সমস্যা হলো বাংলাদেশ বিশ্বকাপে খেলতে গেছে কোনো ব্যাক আপ ওপেনার না নিয়েই। বলা চলে একজন মাত্র স্বীকৃত ওপেনার নিয়ে গেছে তারা। সেটি সম্ভবত আর কোনো দলই করেনি। বিশ্বকাপকে তারা বানিয়ে ফেলছে প্র্যাকটিস টুর্নামেন্ট! খেলো বিষয়!
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে খেলেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। উইনিং কম্বিনেশন ভেঙ্গে মেহেদিকে নামানো হলো। অথচ বোলিং এ তেমন কিছুই করতে পারেন নি। তার ব্যাটিং ক্ষমতাও খুব একটা নেই। উচিত ছিল উইনং কম্বিনেশন না ভাঙ্গা। ভাঙ্গতে চাইলে দরকার ছিল তানজিদকে বিশ্রাম দিয়ে একজন ভালো ব্যাটার বা অল রাউন্ডার নেওয়া। ভুল একটা হয়েছে তারও আগে। উচিত ছিল সৈকত বা আফিফকে দলে রাখা। সৈকত ব্যাটিং এ দুর্দান্ত, বোলিং ও ভালো। আরেকজন স্বীকৃত ওপেনার না নেয়াটা ছিল বিশাল বোকামি।
এদিকে বোলিং এ বাংলাদেশের পেসাররা শর্ট বল নির্ভর। বোলিং ভ্যারিয়েশন নেই। মোস্তাফিজ, তাসকিন, শরিফুল এরা ইয়র্কার দিতে পারেন না কেউই। অথচ ফাস্ট বোলারদের মূল অস্ত্র ইয়র্কার।
অন্য দলগুলো কোনো প্লেয়ার খারাপ করলে তাকে দল থেকে বাদ দেয়। ঘরোয়া বা অন্যান্য টুর্নামেন্টে ভালো করে তারপর জাতীয় দলে ফিরে। ইংল্যান্ডের ডেভিড মালানও সেভাবেই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। টাইগার ক্রিকেটে এর উল্টো ধারা। কেউ ধারাবাহিকভাবে খারাপ করার পরও তাদের জাতীয় দলে পোষে রাখা হয়। যখন অভিজ্ঞ হয়ে যায় তখন তাকে দল থেকে একেবারে ছেঁটে ফেলা হয়।
এটা একটা আত্মঘাতিমূলক অনুশীলন। পারফর্ম করে দলে ঢোকার সুযোগ করে দিতে হবে। অভিজ্ঞদের মূল্যায়ন করতে হবে। ব্যাটিং গভীরতা বাড়াতে হবে। একাদশ গঠণের ক্ষেত্রে ব্যাটিং সক্ষমতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
ঢাকা বিজনেস/ইউ/এন